অনলাইন ডেস্ক : আজকাল প্রতিভা অন্বেষণ বা সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা নিয়ে নানা ধরনের কথা ওঠে। সমালোচনা হয়। বিচারকদের স্বাধীনতা থাকে না। শনিবার দুপুরে এফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোরে এক সংবাদ সম্মেলনে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের বিচারক হিসেবে কথা বলতে এসে ‘বিচারকের স্বাধীনতা’র কথাটি মনে করিয়ে দিলেন জনপ্রিয় নায়িকা মৌসুমী। তাঁর ভাষায়, রিয়েলিটি শোগুলোতে দেখা যায়, কিছুদূর যাওয়ার পর বিচারকদের আর স্বাধীনতা থাকে না। বিচারকদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়। আমি চাই, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা যেন দেওয়া হয়।
‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’-এর এবারের আয়োজনে মূল বিচারকের আসনে দেখা যাবে চলচ্চিত্রের ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপরিচিত নায়িকা মৌসুমী ও নায়ক ফেরদৌসকে। অতিথি বিচারক হিসেবে ২০১৭ সালের ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ বিজয়ী মানুষি ছিল্লারেরও আসার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল বিচারক হিসেবে ফেরদৌস–মৌসুমীর সঙ্গে আরও বিচারক থাকছেন ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের প্রধান নির্বাহী রূপসজ্জাবিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম। দুপুর ১২টায় এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিচারকদের নাম ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন এটিএন বাংলার চেয়্যারম্যান মাহফুজুর রহমান, মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের আয়োজক অমিকন এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান, এক্সপার্ট প্রোভাইডারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অপু খন্দকার, এক্সপোজারের প্রধান নির্বাহী সজীব রশীদসহ আরও অনেকে। এবারের আয়োজক প্রতিষ্ঠান অমিকন এন্টারটেইনমেন্ট। পাশাপাশি সহযোগী হিসেবে থাকছে এক্সপার্ট ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট।
বিএফডিসির ৮ নম্বর ফ্লোরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিচারকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে নায়ক ফেরদৌস জানান, অনেক চলচ্চিত্রে অনেকবার পর্দা ভাগাভাগি করলেও এবারই প্রথম কোনো প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের বিচারক হয়েছেন তিনি ও মৌসুমী। তিনি এ ধরনের আয়োজনকে বেশ ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন। ফেরদৌস বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে একটা মেয়ে গিয়ে যদি মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব নিয়ে আসতে পারে, তা আমাদের দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। ক্রিকেট যেভাবে আমাদের দেশকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছে, এই খেতাবও আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন হবে।’ তিনি আশা করেন, এবার একজন যোগ্য প্রতিযোগী নির্বাচন করবেন তাঁরা। যে সারা বিশ্বে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে।
মৌসুমী বলেন, ‘মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতা মানে শুধু সৌন্দর্যের বিচার নয়, তার সঙ্গে বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্বেরও বিচার করা হয়। নারীকে শুধু সৌন্দর্য দিয়ে বিচার করতে হবে, এমনটি কিন্তু নয়, নারীরা তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সমাজে অবদান রাখছে, এ বিষয়ও মাথায় রাখতে হবে। এ ছাড়া আমাদের সংস্কৃতির বাইরে কিছু করা উচিত না। অবশ্যই আমাদের মেয়েরা তাদের সৌন্দর্য, দক্ষতা দিয়ে আমাদের দেশকেই প্রতিনিধিত্ব করতে যাবে। আমরা বাঙালি, সেই সংস্কৃতিকেই তারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরবে।’
দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হয়েছে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা। ৮ সেপ্টেম্বর নিবন্ধনপ্রক্রিয়া শেষে শুরু হয়েছে অডিশন। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এবার ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৯’ শুধু বিউটি কনটেস্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এই প্ল্যাটফর্মটি সামাজিক সচেতনতামূলক উন্নয়নকাজেও অংশীদার হচ্ছে। আয়োজকেরা আরও জানান, ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৯’ বিজয়ী আগামী ৪ অক্টোবর গালা ইভেন্টের মাধ্যমে সরাসরি লন্ডনে অনুষ্ঠেয় ‘মিস ওয়ার্ল্ড’–এর মূল মঞ্চে অংশগ্রহণ করবেন। অবিবাহিত ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী বাংলাদেশি প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছেন।
মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৯–এর আয়োজনে বেশ কিছু চমক থাকছে বলে দাবি করেছে আয়োজকেরা। এবার এই প্রতিযোগিতার অতিথি বিচারকের দায়িত্ব পালন করতে ঢাকায় আসছেন ২০১৭ সালের ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ বিজয়ী মানুষি ছিল্লার। দীর্ঘ ১৭ বছর পর, মানুষি ‘মিস ওয়ার্ল্ড’র মুকুট ভারতে ফিরিয়ে এনেছিলেন। এবারের ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৯–এর আয়োজক অমিকন এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা এবারের আয়োজনের গালা ইভেন্টের জন্য মানুষি ছিল্লারের সঙ্গে কথা বলেছি। সব ঠিক থাকলে কাল (রোববার) এ ব্যাপারে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করব বিষয়টি।’
১৯৯৪ সালে প্রথম মিস বাংলাদেশ আনিকা তাহের অংশ নেন বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায়। এরপর বিভিন্ন সময়ে ইয়াসমিন বিলকিস সাথী, রেহনুমা দিলরুবা, শায়লা সিমি, তানিয়া রহমান, সোনিয়া গাজী, তাবাসসুম ফেরদৌস মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
দেড় যুগ পর ২০১৭ সালে অন্তর শোবিজ আবারও মিস ওয়ার্ল্ডে প্রতিনিধি পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। সেবার নির্বাচিত হন জেসিয়া ইসলাম। গত বছর জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী দেশসেরা হয়ে মিস ওয়ার্ল্ডের মঞ্চ ঘুরে এসেছেন। তবে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক এই আসরে বাংলাদেশের কোনো প্রতিযোগী শীর্ষ দশে যেতে পারেননি।