রবার্ট ইগার : (দা ওয়াল্ট ডিজনী কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসাবে রবার্ট ইগারের পনের বছরে অর্জিত শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা। ২০০৫ সালে রবার্ট ইগার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন যখন কোম্পানি এ যাবৎ কালে সর্বাধিক সঙ্কটময় পরিস্থিতি অতিবাহিত করছে। তিনটি মূলনীতির উপর ভর করে তিনি এগুলেন এক. গুণগত মানের শ্রেষ্ঠতা বজায় রাখা, দুই. নিত্য নতুন প্রযুক্তির সাথে প্রতিযোগিতা না করে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিৎ করা এবং তিন. গন্ডির বাইরে বিশ্বব্যাপী নিজেদের চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটানো। চৌদ্দ বছরে তিনি ডিজনিকে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মর্যাদাসম্পন্ন মিডিয়া কোম্পানিতে রূপান্তর করলেন। এখন পিক্সার, মার্ভেল, লুকাসফিল্ম, টুয়েন্টি ওয়ান সেঞ্চুরি ফক্স প্রভৃতি স্বনামধন্য কোম্পানির মালিক দা ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি। রবার্ট ইগারের লেখা “দা রাইড অফ এ লাইফ টাইম” সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’এ ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করছেন উন্নয়ন সংগঠক ও অনুবাদক কোরবান আলী)
একচল্লিশ.
দশম অধ্যায়
মার্ভেল এবং মার্ভেল সংশ্লিষ্ট বিশাল ঝুঁকি
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) আমার সাথে আইকের প্রথম সাক্ষাতের কয়েক মাস পর ৩১ আগস্ট ২০০৯ তারিখে আমরা ৪ বিলিয়ন ডলারে মার্ভেল ক্রয়ের ঘোষণা করলাম। এবার আগাম কোন তথ্য ফাঁস হয়নি। সম্ভাব্য অধিগ্রহণ সম্পর্কে খবরের কাগজে কোন জল্পনা-কল্পনা বা গুঞ্জন রটনা হয়নি। ঘোষণার পর আমরা প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত। প্রতিক্রিয়াগুলে ছিলঃ মার্ভেল তার তীক্ষ্ণ ধারাল বৈশিষ্ট হারাতে যাচ্ছে! ডিজেনি তার পবিত্রতা হারাতে যাচ্ছে! ডিজনি ৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে মার্ভেল অধিগ্রহণ করল কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণে স্পাইডার-ম্যান থাকল না! যে দিন আমরা সম্ভাব্য অধিগ্রহণের ঘোষণা করলাম ঠিক সেদিনই আমাদের স্টকের মূল্য শতকরা ৩ ভাগ কমে গেল ।
এই অধিগ্রহণ ঘোষণার অল্প কিছুদিন পরেই ওবামা ব্যাবসায়িক নেতাদের নিয়ে রোজগার্ডেনে একটা ছোট্ট মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন। কমকাস্টের ব্রায়ান রবার্টস, ফোর্ডের অ্যালান মুলালি এবং আরও মুষ্টিমেয় কয়েক জন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমরা আমাদের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে আলাপ-আলোচনা করলাম, একসাথে খেলাম এবং ণ্রেসিডেন্ট ওবামা বললেন তিনি মার্ভেলের একজন বড় ভক্ত। পরে ব্রায়ান আর আমি হোয়াইট হাউস থেকে একটা গাড়ি শেয়ার করলাম। ব্রায়ান জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কিভাবে মার্ভেলের মূল্য নির্ধারণ করলেন?’ আমি বললাম মার্ভেলে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অবিরাম প্রবাহ বিদ্যমান। তিনি আবার আমাকে প্রশ্ন করলেন, ’আপনি কি সকলের সাথে কথা বলেছেন?’ আমি বললাম অল্প কয়েকজনের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু তারা সংখ্যায় অনেক। ব্রায়ান তখন আমাকে বললেন তিনি জেনারেল ইলেকট্রিকের প্রধান নির্বাহী জেফ ইমেল্টের সাথে এ বিষয়ে কথা বলছেন। জেফ তখন এনবিসি উনিভার্সালের মালিক। (অল্প কয়েক দিন পর কমকাস্ট এনবিসি অধিগ্রহণ করে।) ব্রায়ানকে জেফ বলেছেন, ‘ডিজনির মার্ভেল অধিগ্রহণ আমাকে বিভ্রান্ত করেছে। কেন কাউকে ৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে কমিক চরিত্রের একটা লাইব্রেরী কিনতে হবে? আমার আর ব্যবসায় থাকা উচিৎ না।’
আমি মুচকি হেসে ঘার নারিয়ে নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করলাম। আমি বললাম ‘আমার ধারনা আমরা অচিরেই ফলাফল দেখতে পাব।’অন্য সিইওরা কী বলবেন তা নিয়ে আমি মোটেই চিন্তিত ছিলাম না। আমরা আমাদের হোমওয়ার্ক করেছি। আমরা জানতাম কিছুদিনের মধ্যে প্রমাণ হবে ব্র্যান্ডগুলি সহজেই সহাবস্থান করতে পারে। মার্ভেলের গভীরতা সম্পর্কে আমাদের বিষদ ধারণা ছিল, যা বেশিরভাগ মানুষ জানতেন না। আমাদের গবেষণার সময় আমরা মার্ভেল তথ্যপঞ্জি সাথে রাখতাম এতে প্রায় সাত হাজার মার্ভেল চরিত্রের তালিকা সন্নিবেশিত ছিল। এমনকি যদি আমরা স্পাইডার-ম্যান নাও পায় যা অন্যান্য স্টুডিওগুলির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তাতেও আমাদের কোন সমস্যা হবে না। তারপরও আমাদের কাছে মার্ভেলের প্রাচুর্যপূর্ণ ভাণ্ডার পুরোটাই থেকে যাবে। মার্ভেল বিষয়বস্তু আর প্রতিভা সমৃদ্ধ লোকবলে পরিপূর্ণ ছিল। (কেভিন ফিজের নেতৃত্বে মার্ভেল স্টুডিওর প্রতিভাগুলো পরিচালিত। তিনি মার্ভেলের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বর্ণনা করতে যেয়ে মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স বা এমসিইউর রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন। সেখানে তাদের হাতে অনেকগুলো কাজ ছিল। কেভিনের পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে একটা আমার কাছে বেশ উজ্জ্বল মনে হয়েছে সেটা হচ্ছে পরের দশক জুড়ে তিনি কতকগুলো চরিত্রকে একত্রিত করে বেশ কিছু চলচ্চিত্রে একসাথে সমাবেশ ঘটাবেন।)
আমরা দ্রুত এবং সহজেই মার্ভেলকে আত্তীকরণ করতে পেরেছি। আইককে মার্ভেল পরিচালনার জন্য নিউইয়র্কে তার পদে বহাল রাখা হয়েছে (মর্ভেলে অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রকাশনা, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র এবং আরও অন্যান্য ব্যাবসা)। কেভিন ফেইজ ম্যানহাটন বিচের অফিস থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন এবং আগের মতো আইকের কাছে দ্বায়বদ্ধ। প্রথম দিকে মনে হয়েছিল এই কাঠামোটা বেশ ভালোভাবেই কাজ করবে। সিনেমাগুলো সফলতা পাচ্ছিল। কিন্তু আমাদের স্বভাবগত কিছু বিরক্তিকর ত্রুটি ছিল। এছাড়াও বাইরের কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত ছিলাম না। তাছাড়া আমরা যে মূল্যে মার্ভেল অধিগ্রহণ করেছি বা আমাদের যা প্রত্যাশা ছিল তার চেয়ে মার্ভেল অধিক মূল্যবান হয়ে উঠছিল।
আমরা যত ঘনিষ্ঠভাবে মার্ভেলের কর্মকান্ড বুঝার চেষ্টা করলাম আমাদের কাছে ততোই একটা ব্যাবস্থাপনাগত জ্বটিলতা স্পষ্ট হয়ে উঠল। সেটা হচ্ছে মার্ভেলের প্রধান কার্যালয় নিউ ইয়োর্কের সাথে ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত কেভিনের নেতৃত্বে চলমান চলচ্চিত্র নির্মাণ বিভাগের সাথে একটা সমস্যাযুক্ত গতিশীল সম্পর্ক বিদ্যমান। সিনেমা ব্যবসা একদিকে যেমন রোমাঞ্চকর তেমন উন্মাদনায় পরিপূর্ণ। সিনেমা ব্যবসা অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী ব্যবসার মতো কাজ করে না। এ ব্যাবসায় শুধুমাত্র কর্মীদের সতেজ রাখা বা উদ্বুদ্ধ করার জন্য কোন ভিত্তি ছাড়াই বাজির পর বাজি ধরতে হয়। এখানে সবকিছুই ঝুঁকিপূর্ণ। আপনি চিন্তা করে দুর্দান্ত একটা ধারণা সৃষ্টি করতে পারেন এবং সঠিক দলও নির্বচন করা সম্ভব। তা সত্বেও বিভিন্ন কারণে আপনার প্রচেষ্টার ফল লাইনচ্যুত হতে পারে, যা প্রায়শই আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। পরিপূর্ণ স্ক্রিপ্ট আপনি একসঙ্গে হাতে পাবেন না এটায় স্বাভাবিক। পরিচালকের সাথে তার দলের খারাপ রসায়ন থাকতে পারে বা তার মাথায় ভিন্ন একটা চলচ্চিত্রের পোকা ঘুরপাক করছে, যা আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। একটা প্রতিযোগিতামূলক চলচ্চিত্র ঠিকই নির্মাণ হল কিন্তু দেখা যাবে আপনার প্রত্যাশার ঠিক উল্টটা হয়েছে। হলিউডের চাকচিক্য আর যাদুতে সহজেই সবকিছু ভেসে যেতে পারে এবং আপনি সর্বশান্ত হয়ে যেতে পারেন; আবার নির্মিত চলচিত্রের জন্য আপনার মনে নিজের প্রতি অবজ্ঞা আর অনুসোচনার জন্ম হতে পারে এবং আপনি সর্বশান্ত হয়ে যেতে পারেন । দুটোই অনেকবার ঘটতে দেখেছি।
ঘটনা যাই হোক না কেন নিউইয়র্কের মার্ভেল দল এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে কেভিনের দলের মধ্যে আমি একটা ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা আঁচ করছিলাম। নিউ ইয়র্ক অফিস ফিল্ম স্টুডিওর বাজেট তত্বাবধান করে আসছিল এবং অতিমাত্রায় খরচ এবং ঝুঁকি নিয়ে একটা উত্তেজনা কাজ করছিল। তারা হলিউড সংস্কৃতির বাইরে অবস্থান করছিলেন এবং সম্ভবত সৃজনশীল প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জের প্রতি কম সংবেদনশীল ছিলেন। কম খরচে ভালো চলচিত্র নির্মাণের জন্য চলচ্চিত্র পরিচালকদের উপর চাপ সৃষ্টি করা বিশেষ করে সৃজনশীল প্রযোজকদের উপর চাপ সৃষ্টি করা নিঃসন্দেহে ভয়ানক পদ্ধতি নয়। তবে যে কোনো স্টুডিও ব্যবসার অর্থনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরী। উৎপাদন খরচ কখনও কখনও হাতের বাইরে চলে যায়। কখনও কখনও চুক্তি সম্পাদন করার সময়ই বাজেটের শক্ত সীমারেখা এঁকে দিতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই খরচ লাগামহীন হয়ে থাকে। খরচ পাহারা দেবার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে যাতে করে চলচ্চিত্রে অর্থ হারানোর সম্ভাবনা না থাকে। যদিও চলচিত্র নির্মাণের খরচ রেখাটি অত্যন্ত সূ² তথাপি আমি প্রায়ই লক্ষ্য করেছি যে মালিক পক্ষ কখনও কখনও সৃজনশীল প্রক্রিয়ার উপর অনেক কিছু আশা করেন আর চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অনেক বেশি চাপের মুখোমুখী হতে হয়। নির্মাতারা যে চাপের মুখে আছে সে বিষয়ে মালিক পক্ষ বেশ উদাসীন থাকেন। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়।
সবচেয়ে প্রতিভাবান ফিল্ম এক্সিকিউটিভদের মধ্যে কেভিন একজন। কিন্তু আমি জানেছিলাম নিউ ইয়র্কের সাথে বিব্রতকর সম্পর্কের কারণে তার অব্যাহত সাফল্য হুমকির সম্মুখীন। আমার হস্তক্ষেপ জরুরী হয়ে পড়েছিল। ২০১৫ সালের মে মাসে মার্ভেলের মুভি মেকিং ইউনিটকে মার্ভেল থেকে বিচ্ছিন্ন করে অ্যালান হর্ন এবং ওয়াল্ট ডিজনি স্টুডিওর অধীনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম। কেভিন এখন সরাসরি অ্যালানের কাছে রিপোর্ট করবে এবং তার অভিজ্ঞতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করবে। কেভিনের সাথে নিউ ইয়র্ক অফিসের যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল তা উপশম হল। এ ধরনের রূপান্তর খুব সহজ ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরকটি নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছি যা একটা অস্থিতিশীল অচল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারতো।
আমাকে অল্প কয়েকবার দক্ষ কর্মীদের খারাপ সংবাদ দিতে হয়েছে? যাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার বন্ধুর কাতারে পড়ে আবার কেউ কেউ স্বপদে উন্নতি করতে পারেননি, আমিই তাদের নিয়োগ দিয়েছিলাম? কীভাবে কর্মী ছাটাই করতে হয় তার কোনও গৎবাধা ভাল নির্দেশনা নেই? তবে কাউকে বরখাস্ত করার জন্য আমি নিজস্ব রীতি অনুসরণ করি। ফোনে বা ইমেল বা চিঠির মাধ্যমে নয়, আপনাকে এটি ব্যক্তিগতভাবে করতে হবে। আপনাকে মানুষটির চোখে সরাসরি তাকাতে হবে অন্য কাউকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করা ঠিক হবে না। আপনি তাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন – ব্যক্তি হিসাবে নয় বরং যেভাবে তারা তাদের কাজে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন সেই হিসাবে তাদের চাকুরিচ্যুত করতে হবে – এবং পদচ্যুতির সিদ্ধন্ত আপনি নিয়েছেন সেটি তাদের জানা প্রয়োজন এবং এক অর্থে তাদের জানার অধিকারও রয়েছে। চাকুরীচ্যুতির জন্য কাউকে ডাকলে তাকে কটু কথা বলা যাবে না। আমি সাধারণত তাদের সাথে একই বাক্য দিয়ে আলোচনা শুরু করি, সেটা হচ্ছে : ‘আমি আপনাকে একটা জটিল বিষয়ে কথা বলার জন্য এখানে আসতে বলেছি।’ তারপর আমি যতটা সম্ভব সরাসরি সমস্যাটা বলার চেষ্টা কর। কী কাজ করছে না তা স্পষ্টভাবে এবং সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা করি এবং কেন আমি ভেবেছি এটা পরিবর্তন সম্ভব না। আমি জোর দিয়ে বলার চেষ্টা করি সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করা আমার জন্য একটা কঠিন কাজ ছিল এবং আমি এও জানি এটা তাদের জন্য আরও অনেক কঠিন বিষয়। এই পরিস্থিতিতে প্রায়ই তাদের সাথে শ্রæতিকটু কর্পোরেট ভাষায় কথা বলতে দেখি যেটা সবসময় আমার কাছে আক্রমণাত্মক বলে মনে হয়েছে। কথোপকথন বেদনাদায়ক না হওয়ার কোন উপায় নেই, কিন্তু অন্তত সৎ কথোপকথন তো হতেই পারে, এবং সৎ হওয়ার মধ্যে অন্তত একটা প্রাপ্তি আছে। সেটা হচ্ছে অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিটির পক্ষে বোঝার সুযোগ থাকবে কেন এমনটি ঘটল এবং অবশেষে এমনকি যদি তারা রাগ করে রুম থেকে বেড়িয়ে যায় তবুও সমস্যা নেই। (চলবে)
কোরবান আলী: অন্বুাদক, টরন্টো, কানাডা