রবার্ট ইগার : (দা ওয়াল্ট ডিজনী কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসাবে রবার্ট ইগারের পনের বছরে অর্জিত শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা। ২০০৫ সালে রবার্ট ইগার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন যখন কোম্পানি এ যাবত কালে সর্বাধিক সঙ্কটময় পরিস্থিতি অতিবাহিত করছে। তিনটি মূলনীতির উপর ভর করে তিনি এগুলেন এক. গুণগত মানের শ্রেষ্ঠতা বজায় রাখা, দুই. নিত্য নতুন প্রযুক্তির সাথে প্রতিযোগিতা না করে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং তিন. গন্ডির বাইরে বিশ্বব্যাপী নিজেদের চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটানো। চৌদ্দ বছরে তিনি ডিজনিকে পৃথিবীর সর্ববৃহত মর্যাদাসম্পন্ন মিডিয়া কোম্পানিতে রূপান্তর করলেন। এখন পিক্সার, মার্ভেল, লুকাসফিল্ম, টুয়েন্টি ওয়ান সেঞ্চুরি ফক্স প্রভৃতি স্বনামধন্য কোম্পানির মালিক দা ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি। রবার্ট ইগারের লেখা “দা রাইড অফ এ লাইফ টাইম” সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’এ ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করছেন উন্নয়ন সংগঠক ও অনুবাদক কোরবান আলী)

চল্লিশ.
দশম অধ্যায়
মার্ভেল এবং মার্ভেল সংশ্লিষ্ট বিশাল ঝুঁকি
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) পিক্সার অধিগ্রহণের পর থেকে যখনই আমি বড় কিছু করতে চাইতাম তখন স্টিভের সাথে আগে কথা বলে নিতাম। কারণ স্টিভ একজন বোর্ড সদস্য এবং আমাদের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার। বোর্ডে বড় কোন প্রস্তাব উপস্থাপনের আগে তার পরামর্শ এবং সমর্থন খুবই জরুরী একটা বিষয়। আমাদের মিটিংরুমে স্টিভের কণ্ঠস্বর গুরুত্বপূর্ণ। বোর্ডের সদস্যরা তাকে অসম্ভব সম্মান করতেন। মার্ভেল অধিগ্রহণের আলোচনায় আরও এগিয়ে যাওয়ার আগে আমি কুপারটিনোতে যেয়ে স্টিভের সাথে মধ্যাহ্নভোজ সারলাম। তাকে মার্ভেলের ব্যবসা সম্পর্কে বিষদ ধারণা দিলাম। তিনি দাবি করলেন তিনি তার জীবনে কোন কমিক বই পড়েননি। (তিনি বললেন, ‘আমি ভিডিওগেমকে ঘৃণা করি, কিন্তু এর চেয়ে বেশি অপছন্দ করি হাস্যরসাত্মক বই’)। মহাবিশ্বে কমিকের চাহিদা ব্যাখ্যা করার জন্য আমি সাথে করে এনেছিলাম মার্ভেল চরিত্রের বিশ্বকোষ। এটা দেখলে তার বুঝতে সহজ হবে আমরা কী কিনতে যাচ্ছি। তিনি এটির দিকে তাকিয়ে প্রায় দশ সেকেন্ড কাটালেন, তারপর এটিকে একপাশে ঠেলে দিয়ে বললেন, ‘মার্ভেল কি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ? আপনি কি সত্যিই এটি কিনতে চান? এটা কি আর একটা পিক্সার?’

পিক্সার অধিগ্রহণ চুক্তি সম্পন্ন হবার পর স্টিভ এবং আমি দুজন দুজনার ভালো বন্ধু হয়ে গেছি। আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একসাথে মিলিত হয়েছি এবং সপ্তাহে বেশ কয়েক বার আমরা কথা বলি। আমরা পাশের হাওয়াইয়ান হোটেলে বেশ কয়েকবার ছুটি কাটিয়েছি, কোন করণ ছাড়াই দেখা করেছি এবং সমুদ্র সৈকতে দীর্ঘ সময় দুজনে হেঁটেছি, আমাদের স্ত্রী এবং বাচ্চাদের সম্পর্কে কথা বলেছি। সঙ্গীত, অ্যাপল এবং ডিজনি সম্পর্কে দীর্ঘ আলাপ হয়েছে এবং আমরা এখনও যৌথভাবে যা কিছু করতে পারি সে সম্পর্কে আলাপ হয়েছে।

আমাদের ব্যবসায়িক সম্পর্কের চেয়ে ব্যক্তিগত সম্পর্ক অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল। আমরা একে অপরের সঙ্গ গভীরভাবে উপভোগ করেছি। আমরা অনুভব করেছি যে আমরা একে অপরকে যে কোন কিছু বলতে পারি। আমাদের বন্ধুত্ব যথেষ্ট শক্তিশালী এবং নিজেদের অভিব্যক্তি সহজসরল ভাবে প্রকাশ করার জন্য কখনই আমাদের দুজনের সম্পর্ক হুমকির সম্মুখীন হয়নি। জীবনের পড়ন্ত বিকেলে এত ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব আশা করা যায় না। আমার সিইও থাকাকালীন সময়ে যে সকল ধটনা চিন্তা করে আমি অভিভূত হয়ে যায় বা যে সকল ঘটনা আমি এখনও কৃতজ্ঞ চিত্তে স্বরণ করি – এগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে স্টিভের সাথে আমার সম্পর্ক ।

আমার সমালোচনা করার জন্য স্টিভের কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না। আমিও তার সাথে অবাধে দ্বিমত প্রকাশ করতে পারতাম। আমরা কেউই তা খুব ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করিনি। অনেকে আমাকে সতর্ক করেছিলেন যে স্টিভকে কোম্পানিতে ঢুকতে দেওয়া কোম্পানিতে আমার সবচেয়ে খারাপ কাজগুলোর মধ্যে একটা চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তাদের ধারণা তিনি আমাকে এবং অন্য সকলকে উত্যক্ত করবেন। আমি তাদেরকে সবসময় একই কথা বলতাম: ‘স্টিভ জবস আমাদের কোম্পানিতে আসলে কেন কোম্পানির জন্য মঙ্গোলজনক হবে না? আমি যদি নিজ খরচে তাকে কোম্পানিতে আনি, তবুও ক্ষতিকর হবে? কে চাই না কোম্পানি পরিচালনায় স্টিভ জবসের প্রভাব পড়ুক?’ কোম্পানিতে তার ভূমিক কী হবে সে বিষয়ে আমি মোটেই চিন্তিত না এবং আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, তিনি যদি সীমা অতিক্রম করেন, আমি তাকে বলবো তিনি এটি করতে পারেন না। তিনি দ্রুত মানুষকে বিচার বিশ্লেষণ করে ফেলতেন এবং কারও সমালোচনা করলে, নির্মমভাবে তাকে আঘাত করতেন। এখন তিনি সমস্ত বোর্ড মিটিংয়ে আসেন এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। আপনি যে ধরনের উদ্দেশ্যমূলক সমালোচনা যে কোন বোর্ড মেম্বারের কাছে আশা করেন তিনি ঠিক তেমনটিই করেন। তিনি আমার জন্য খুব কমই ঝামেলা সৃষ্টি করেছেন। কখনই কোন অশান্তির কারণ হননি এমন নই, কালেভদ্রে দুএকটা সমস্যা তো হতোই।

আমি একবার তাকে অরল্যান্ডোর একটা হোটেলে দাওয়ত করলাম। “আর্ট অ্যানিমেশন” নামক একটা তিন হাজার রুম বিশিষ্ট বিশাল হোটেল পরিদর্শণের সুযোগ। আমাদের অন্যান্য হোটেলের চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে এখানে থাকার ব্যাবস্থা রয়েছে। আমি এটির সাশ্রয়ী ভাড়া আর গুণগতমান নিয়ে গর্ব করি।

এটি খোলার পরপরই একটি বোর্ড রিট্রিটে স্টিভকে এখানে এনেছিলাম। আমি তাকে নিয়ে সারা হোটেল ঘুরে বেড়ালাম। স্টিভ চারপাশ দখে ঘোষণা করলেন ‘এটা অত্যন্ত নি¤œ মানের হোটেল। আপনি তো নিজেকে নকল করছেন।’

আমি বললাম, ‘স্টিভ, এটি এমন লোকদের জন্য যারা ডিজনি ওয়ার্ল্ডে তাদের বাচ্চাদের সাথে আসতে চান কিন্তু এক রাতের জন্য শত শত ডলার খরচ করার সামর্থ্য নেই। এখানে এক রাতের ভাড়া মাত্র নব্বই টাকা এবং এটি একটা শালীন, সুন্দর, পরিষ্কার, মনোরম জায়গা।’
তিনি ঘেউ ঘেউ করে বললেন, ‘এটা আমার মাথায় ঢুঁকছে না’। অধিকাংশ মানুষ আমাদের হোটেলের নক্সা, স্থপত্য শৈলী আর গুণগতমানের প্রসংশা করেছেন। কিন্তু স্টিভ অধিকাংশ মানুষের মধ্যে পড়েন না, তিনি তার নিজের থাকার কথা ভেবে কথাগুলো বলেছিলেন।

আমি বললাম, ‘এটি আপনার জন্য নয়। আপনাকে এটি দেখানোর জন্য দুঃখিত।’ আমি তার উন্নাসিকতায় একটু ক্ষিপ্ত হয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কে আমি এটাও ভালোভাবে জানতাম। তিনি সারা জীবন সর্বোচ্চ মানের জিনিস তৈরি করেছেন। অবশ্যই সেগুলো সকলের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল না। কিন্তু তিনি কখনই পণ্যের গুণগতমানের উপরে ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতাকে গুরুত্ব দেননি। এরকম কিছু আমি তাকে আর কখনো দেখাইনি। ‘আয়রন ম্যান ২’ মুক্তি পাবার পর, স্টিভ তার ছেলেকে এটি দেখতে নিয়ে যান এবং পরের দিন আমাকে ফোন করে বললেন, ‘গত রাতে আমি ‘আয়রন ম্যান ২’ দেখাতে রিডকে নিয়ে গেছিলাম। এটা একটা সম্পূর্ণ অর্থহীন ছবি।’

‘ভালো, ধন্যবাদ। এটি প্রায় ৭৫ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে। সপ্তাহান্তে এটি আর একটা বিশাল অংক যোগ করতে যাচ্ছে। স্টিভ, আপনার সমালোচনা আমি হালকাভাবে নিই না, তবে ‘আয়রন ম্যান ২’ একটা বিশাল সাফল্যের নাম এবং আপনি এটির কাঙ্খিত দর্শক নন।’ (‘আয়রন ম্যান ২’ অস্কার বিজয় কারবে তা কারও ধারণা ছিল না। স্টিভ সকল সময় সকল ক্ষেত্রে সঠিক আমি তাকে এটি অনুভব করতে বাধা দিয়েছি) ।

অল্প কিছুদিন পরে ২০১০ সালের ডিজনি শেয়ারহোল্ডারদের মিটিং, আমাদের সাধারণ পরামর্শক অ্যালান ব্রেভারম্যান আমাকে বললেন, ‘আমাদের চার জন বোর্ড মেম্বারের বিরুদ্ধে বিশাল ভোট পড়েছে।’
‘কত বিশাল?’
তিনি বললেন. ‘একশ মিলিয়ন শেয়ার’।

আমি বিস্মিত হলাম। সাধারণত ২ থেকে ৪ শতাংশ সর্বোচ্চ ‘না’ ভোট পড়তে পারে। একশ মিলিয়ন শেয়ারের ‘না’ ভোট ছিল কল্পনাতীত বিষয়। আমাদের কোথাও কোন ভুল হচ্ছে নাতো। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘একশ মিলিয়ন শেয়ার?’ সে সময় কোম্পানী বেশ ভাল করছিল। এছাড়া আমাদের বোর্ড সদস্যরা অনেক সম্মানিত ব্যাক্তি ছিলেন। আমি যতদূর জানি তখন কোন পাবলিক সমালোচনা ছিল না। কোন সতর্ক বার্তাও পায়নি। কোন কিছু মাথায় আসছে না।

এক মিনিট পর অ্যালান বললেন, ‘আমার মনে হয় এটা স্টিভ হতে পারেন।’ তার কাছে সমপরিমান শেয়ার ছিল এবং তিনি তার চারজন সহকর্মী বোর্ড সদস্যর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন । ভোট প্রকাশ করার জন্য আমাদের হাতে মাত্র একদিন ছিল। ঘোষণা করা মাত্র জানা যাবে চারজন বোর্ড সদস্য সমর্থন হারিয়েছেন, এটি জনসংযোগের ক্ষেত্রে দুঃস্বপ্নের মত শোনাবে।

আমি স্টিভকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি কি চারজন বোর্ড সদস্যের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন?’
তিনি বললেন, ‘হ্যা, আমি অনাস্থা ভোট দিয়েছি।’

আমি বললাম, ‘প্রথমত আপনি আমার সাথে কথা না বলে কি করে তা করতে পারেন? এটি একটা গাঢ় কালো দাগ আজীবন আমাদের কলঙ্কিত করবে। আমি জানি না কিভাবে আমি এই ফলাফল প্রকাশ্যে ঘোষণা করব। আর আমি তাদের চার জনকেই বা কি বলবো তাও আমার অজানা। এটা শেষ পর্যন্ত প্রকাশ্যে বেড়িয়ে আসবে যে এটি আপনি ছাড়া কেউ নন। এছাড়াও তারা চার জন ভাল বোর্ড সদস্য, আপনি কেন তাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন?’

তিনি বললেন ‘আমি মনে করি তারা স্থানের অপচয় করছেন। আমি তাদের পছন্দ করি না।’ আমি ওদের পক্ষে কথা বলতে শুরু করলাম। আর ততোক্ষণেই বুঝতে পারলাম এটি স্টিভকে প্ররোচিত করার উপায় না। আমি তাকে বোঝাতে চাচ্ছিলাম না যে সে ভুল করেছে। অবশেষে তিনি বললেন, ‘আপনি আমার দ্বারা কি করাতে চান?’
‘আমি চাই আপনি আপনার ভোটগুলো পরিবর্তন করুন।’
‘আমি কি আমার ভোট পরিবর্তন করতে পারি?’
‘হ্যাঁ’।

‘ঠিক আছে, আমি আমার অনাস্থা ভোট প্রত্যাহার করে নেবো কারণ বিষয়টি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি আপনাকে বলে রাখছি, আমি আগামী বছর আবার তাদের বিরুদ্ধে ভোট দেব।’

আমি জানি তিনি যা বলেন সেটাতে অবিচল থাকেন। যখন পরবর্তী শেয়ারহোল্ডারদের সভা কাছাকাছি আসল, তিনি তখন ভয়ানক অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করলেন। এই কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া, স্টিভ ছিলেন একজন চমত্কার, উদার ব্যবসায?িক অংশীদার এবং বিজ্ঞ পরামর্শদাতা।

যখন মার্ভেল অধিগ্রহণের প্রশ্ন আসল, আমি তাকে বললাম মার্ভেল আর একটা পিক্সার কিনা আমি নিশ্চিত নই, তবে তাদের কোম্পানিতে দুর্দান্ত প্রতিভাধর কিছু সংখ্যক মানুষ আছেন এবং তাদের সৃষ্ট বিষয়বস্তুসমূহ অনেক সমৃদ্ধ। আমরা যদি বুদ্ধবৃত্তিক সম্পদ ধরে রাখতে পারি তবে তারা আমাদের এবং অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম কিছু সৃষ্টি করবে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে তিনি আইকের সাথে আমার ক্রয় প্রস্তাবের পক্ষ কথা বলবেন কিনা।
স্টিভ বললেন, ‘ঠিক আছে। যদি আপনি মনে করেন তাঁর সাথে কথা বলা আমার কর্তব্য তাহলে আমি তার সাথে ফোনে কথা বলবো।’ তিনি নিজে কখনই এই ধরনের সংস্থায় বিনিয়োগ করতে রাজি হতেন না কারণ তিনি কমিক বই এবং সুপারহিরো চলচ্চিত্রগুলিকে যতটা অপছন্দ করতেন তার চেয়ে অনেক বেশি আমাকে বিশ্বাস করতেন। তিনি আসলেই আমাকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। পরদিন ফোন করে তিনি আইকের সাথে কিছুক্ষণ কথা বললেন। আমি মনে করি স্টিভ জবসের ফোনকল পেয়ে আইক মুগ্ধ হয়েছেন এবং খুশি হয়েছেন। স্টিভ তাকে বলেছিলেন পিক্সার অধিগ্রহণ চুক্তিটি তার প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। কারণ আমি আমার কথার একবিন্দু বরখেলাপ করিনি। পিক্সার ব্র্যান্ড এবং এর কর্মীদের যথেষ্ট মাত্রায় সম্মান করি।

মার্ভেলের অধিগ্রহণ চুক্তিটি সম্পন্ন হবার পরে আইক আমাকে বলেছিলেন স্টিভের সাথে কথা বলার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তার সন্দেহ ছিল এবং স্টিভের সাথে ফোনে কথা বলার পর তার সন্দেহ দূর হয়। স্টিভের কথাগুলো তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একটা বড় পার্থক্য সৃষ্টি করেছিল। আইক বললেন ‘তিনি বলেছিলেন আপনি আপনার কথায় সবসময় সত্যনিষ্ঠ থাকেন’ । আমি স্টিভের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি আমাদের বোর্ডের সবচেয়ে প্রভাবশালী সদস্য। তার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে তিনি একজন ভালো বন্ধু। এটি করার জন্য আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ । প্রতিবারই যখন আমি তাকে বলতাম ‘এ বিষয়ে আপনার মতামত নেয়া আমার কর্তব্য, কারণ আপনি আমাদের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার।’ প্রতিবারই তিনি উত্তরে বলতেন, ‘আপনি আমাকে এভাবে ভাবতে পারেন না। এটা আমার জন্য অপমানজনক। আমি শুধুমাত্র আপনার একজন ভালো বন্ধু।’ (চলবে)
কোরবান আলী: অন্বুাদক, টরন্টো, কানাডা