Home আন্তর্জাতিক যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজায় পানি সংকটের মধ্যে বৃষ্টি, মিলছে খাবার পানি

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজায় পানি সংকটের মধ্যে বৃষ্টি, মিলছে খাবার পানি

অনলাইন ডেস্ক : যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজা ফিলিস্তিনিদের জন্য, মঙ্গলবার থেকে বর্ষা মৌসুম নিয়ে এসেছে চরম দুর্দশা। বৃষ্টিতে বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যা। অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাসকারী বাস্তুচ্যুত মানুষরা এখন আরও উদ্বিগ্ন, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তাঁবুতে প্রবেশ করেছে বৃষ্টি-বন্যার পানি। ফলে বাড়িয়েছে ঘর-বাড়ি ছেড়ে অচেনা ও খোলা জায়গায় আশ্রয় নেওয়া সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ।

কিন্তু দুর্ভোগের সাথে এসেছে কিছুটা সস্তিও। পানি সংকটের মধ্যে এই বৃষ্টিতে মিলছে বিশুদ্ধ খাবার পানি।

গাজার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা জানান, ৩০ দিনেরও বেশি সময় ধরে বাস্তুচ্যুত হয়েছি, তাঁবুগুলি ঢেকে রেখেছিলাম এবং সেগুলি ঠিক করছিলাম। “কিছুক্ষণ আগে এখানে বৃষ্টি হয়েছিল এবং সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। এই পানি তার আশীর্বাদ। আমরা এই বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারবো।

আল বালাহের শুহাদা আল-কুদস হাসপাতালের অস্থায়ী শিবিরে, বাস্তুচ্যুত মানুষ তাদের তাঁবুগুলিকে প্লাস্টিকের শীট দিয়ে ঢেকে রেখেছেন যাতে যতটা সম্ভব ক্ষতি সীমিত করার চেষ্টা করছেন।

গাজার বাস্তুচ্যুত এই বাসিন্দা আরও বলেন, তাঁবুতে পানি ভরে গেছে এবং গদিগুলো ভিজে গেছে, এটা একটা ঝামেলা কিন্তু আমরা কি করতে পারি, তবুও সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।

ভিজে যাওয়া এড়াতে বাস্তুচুত উম্মে মোহাম্মদ শাহীন, তাঁবুর মাঝখানে একটি গাড়ির টায়ারে একটি কম্বল দিয়ে তার উপর বসে আছেন, সারা রাত তার দুই মেয়েকে কোলে। বাস্তুচুতদের গ্রীষ্মের কিছু পোশাক থাকলেও নেই আসন্ন ঠান্ডায় তাদের শরীর গরম রাখার মতো কিছুই।

গাজার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা, উম্মে মোহাম্মদ শাহীন বলেন, “যখন বৃষ্টি শুরু হয়েছিল, আমি বাইরের অংশটি বালি দিয়ে আটকে দিয়েছিলাম যাতে পানি ঢুকে না যায়, আমার দুটি ছোট মেয়ে আছে। এখানে এখন সারারাত ঠান্ডা। তাদের শুধুমাত্র গ্রীষ্মের কিছু পোশাক আছে শীতের পোশাক নেই। আমি জানি না কি করবো।

কিন্তু সমস্ত অসুবিধা সত্ত্বেও, বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে কেউ কেউ বৃষ্টিকে আশীর্বাদ বলে মনে করছিলেন এবং বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব নিয়ে কয়েক সপ্তাহ বেঁচে থাকার পরে বৃষ্টির পানি পানের জন্য বালতিতে সংগ্রহ করেছিলেন।

উম মোহাম্মদ শাহীন আরও জানান, এটা কঠিন ছিল, পানি ঝরছে, আজ রাতে টায়ারের উপর একটি কম্বল দিয়ে বসে ছিলাম। ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে কোনও বিশুদ্ধ পানি নেই, আমরা নোনা পানি ব্যবহার করি। এখানে বালতিতে পরিষ্কার পানি যা আমি বৃষ্টি থেকে সংগ্রহ করেছি, সৃষ্টিকর্তাকে কাছ থেকে। সবকিছুর জন্য সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।

গেল সাত অক্টোবর ইসরায়েল ঢুকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। পাল্টা জবাব হিসেবে গাজায় স্থল, আকাশ ও সমুদ্র থেকে অভিযান চালিয়ে আসছে দখলদার ইহুদি বাহিনী। চলছে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ। ভয়াবহ এ হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের ৪০ শতাংশই নিষ্পাপ শিশু। গাজায় দুই তৃতীয়াংশ গৃহহীন, যেখানে খাদ্য, জ্বালানি, বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিৎসা সংকটে ভোগছেন তারা।

Exit mobile version