অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচনের প্রচারে চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হুমকি দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে চীনা পণ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবেন। এতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আবার বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর চীন নিয়ে নীরব ট্রাম্প।
চীন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য অংশীদার। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও ক্ষমতাধর সামরিক বাহিনীর একটি চীনের। ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানের পাশাপাশি বিরোধী ডেমোক্র্যাটরাও বেইজিংকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করে। তাই ধারণা ছিল ট্রাম্পের চীন নীতি হবে কঠোর। কিন্তু হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তনের পরে দেখা যাচ্ছে চীনের সঙ্গে সূক্ষ্ম বোঝাপড়ার সম্পর্ক চান ট্রাম্প।
সুইজারল্যান্ডের দাভোস শহরে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন। গত বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়ালি সেই সম্মেলনে যুক্ত হয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা ও চীনের সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি।’ ট্রাম্পের এমন কথার সঙ্গে নির্বাচনের প্রচারে চীন নিয়ে তাঁর কথার মিল পাওয়া যাচ্ছে না।
নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন চীনের পাশাপাশি কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে বাণিজ্যেও নতুন করে শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। ক্ষমতা গ্রহণের পর কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে তাঁর প্রশাসন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো দেননি ট্রাম্প।
ধৈর্য ধারণের নীতিতে ট্রাম্প
ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীনের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। ফেনটানিলের (হেরোইন বা কোকেনের মতো মাদকের কাজ করে) জন্য চীন রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি। গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট জানান, চীনা পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি ট্রাম্পের বিবেচনায় রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক দিন পরই চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ও চীনা পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের বিষয়ে ধৈর্য ধারণের নীতি নিয়েছেন ট্রাম্প।
৮ মাসের বেতন-ভাতাসহ পদত্যাগের প্রস্তাব
বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের লাখ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। সরকারের ব্যয় হ্রাস পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এবার নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে সরকার পরিচালনার ব্যয় হ্রাসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী শপথ গ্রহণের পরপরই সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি।