অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা) যুক্তরাষ্ট্রে তিনতলা একটি বাড়ি কিনেছেন বলে তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রও দুদকের হাতে এসেছে।

ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহাকে ব্যবহার করে এস কে সিনহা বাড়ি কেনার অর্থ বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় পাচার করেছেন বলে রেকর্ডপত্রে প্রমাণ পাওয়া গেছে। দুদকের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

রোববার এ বিষয়ে দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ যাচাইয়ে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই, সিংগাপুরসহ বিভিন্ন দেশে এস কে সিনহার সম্পদের তথ্যের জন্য চিঠি দেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান।

অনুসন্ধানের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত নিউজার্সির প্যাটারসনে অবস্থিত ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে অনন্ত কুমার সিনহার অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়। এছাড়া একই অ্যাকাউন্টে পৃথক উৎস থেকে ওই বছরের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ৬০ হাজার ১০ ডলার জমা হয়।

অনুসন্ধানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, অনন্ত কুমার সিনহা বড় ভাই সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে ওই সময় ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে যান। তখন তিনি (এসকে সিনহা) ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান, আমেরিকার প্যাটারসন এলাকায় বাড়ি কেনার জন্য বন্ধুর কাছ থেকে তিনি ফান্ড পেয়েছেন।

প্রকৃতপক্ষে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অবৈধ অর্থ অর্জন করে তা হুন্ডিসহ বিভিন্ন কায়দায় যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেন এবং তার ছোট ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেন। এসব অর্থ দিয়ে তার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহা ২০১৮ সালের ১২ জুন ১৭৯ জ্যাপার স্ট্রিট, প্যাটারসন, নিউ জার্সি ০৭৫২২-তে একটি বাড়ি কেনেন। তিন তলা বিশিষ্ট ওই বাড়ির মূল্য ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। সুতরাং ভাইয়ের নামে কেনা হলেও বাড়িটি পরোক্ষভাবে সুরেন্দ্র কুমার সিনহারই।

সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় অবৈধ প্রকৃতি, উৎস ও অবস্থান গোপন করে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার দেশের বাইরে পাচার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের কয়েকটি ধারায় দুদক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে বলে জানা গেছে।

এরই মধ্যে ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের দুই মামলায় সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে চার ও সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে ঋণ জালিয়াতির মামলায় চার বছর এবং অর্থ পাচারের মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার।