ফারজানা চৌধুরী, মিশিগান : আমেরিকার মিশিগান অঙ্গরাজ্যের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ পদে নির্বাচনে ডিস্ট্রিক্ট-৪ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থেকে আসা বাংলাদেশি আমেরিকান সাহাব আহমেদ (সুমিন)।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দাউদপুর তুরুকখলায় জন্ম নেওয়া সাহাব আহমেদ অল্প বয়সে পরিবারের সঙ্গে আমেরিকায় আসেন। নিজের কর্মজীবন গড়ে তোলার পাশাপাশি নিজেকে রাজনীতিতে জড়িয়ে হয়ে উঠেছেন এক আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রেখেছেন সব সময়। মিশিগান রাজ্যের হ্যামট্রাম্যাক শহরে বিভিন্ন সময়ে আগত উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন ও মাল্টি-কালচারাল কো-অর্ডিনেটর হিসেবে তিনি বিভিন্ন জাতিসত্তার মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করেছেন।

১৯৯৯ সালে হ্যামট্রাম্যাক শহরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে বাঙালি আমেরিকান ও আরব আমেরিকানদের নাগরিক ও ভোটাধিকার সংরক্ষণে তাঁর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়। যার ফলশ্রুতিতে আজকের হ্যামট্রাম্যাকের অধিবাসীরা আরও সুরক্ষিত নাগরিক অধিকার ভোগ করছে।

আমেরিকার ইতিহাসে সর্বপ্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০৩ সালে সাহাব আহমদ হ্যামট্রাম্যাক সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত হন। পরবর্তী আট বছর তিনি এই পদে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। ২০০৬ সালে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম নির্বাচিত বাংলাদেশি হিসেবে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটসের পক্ষ থেকে তৎকালে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে টমাসের আমন্ত্রণে হোমটাউন ডিপ্লোম্যাট হিসেবে সাহাব আহমেদ বাংলাদেশ ভ্রমণ করেন। এই সময় আমেরিকান সেন্টার আয়োজিত তাঁর জন্মভূমি সিলেটসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে সাহাব আহমেদ বক্তৃতা করেন, যা বাংলাদেশের সেই সময়ের প্রায় সব প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয়েছিল।

আমেরিকার ইতিহাসে সর্বপ্রথম লাউড স্পিকারে আজান দেওয়ার অনুমতি আদায় করা; হ্যামট্রাম্যাক সিটির কোনান্ট অ্যাভিনিউ নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার নামকরণ ‘বাংলাদেশ অ্যাভিনিউ’ করা; স্থানীয় জনগণ বিশেষ করে সংখ্যালঘু ইমিগ্রান্টদের সামাজিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো ছিল তাঁর অর্জনগুলোর অন্যতম।

নিজের কমিউনিটি ও ইমিগ্রান্টদের জন্য আরও শক্তিশালী এবং গঠনমূলক কিছু করার ইচ্ছায় সাহাব আহমেদ আগামী ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ পদে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে স্টেট কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্ব করতে চান। নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হবেন বলে অনেকেই আশাবাদী।