অনলাইন ডেস্ক : আমেরিকায় সম্প্রতি রেকর্ডসংখ্যক মানুষ নিজেদের মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই পাঁচ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষ মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বামব্রিজ অ্যাকাউন্ট্যান্ট নামে নিউইয়র্কভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান এই গবেষণাটি করেছে। ৯ আগস্ট গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। যারা মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে দেয়, আমেরিকা সরকার প্রতি তিন মাস পর পর তাঁদের তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকার ওপর ভিত্তি করে বামব্রিজ অ্যাকাউন্ট্যান্ট গবেষণাটি করেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ছয় মাসেই পাঁচ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষ মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। অথচ পুরো ২০১৯ সালে মাত্র দুই হাজার ৭২ জন মানুষ মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়েছিলেন।
বামব্রিজ অ্যাকাউন্ট্যান্টের অংশীদার অ্যালিস্টেয়ার বামব্রিজ বলেন, ‘এখন সবকিছু আছে, আর কিছুর প্রয়োজন নেই—এমন ভাবনা থেকেই মানুষ মূলত মার্কিন নাগরিকত্ব ছাড়ছে। এ ছাড়া বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তাঁর পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক নীতির কারণেই মানুষ নাগরিকত্ব ছেড়ে দিচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে আমেরিকার প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজন মানুষ আমেরিকা ছেড়ে দিচ্ছেন। যারা ইতিমধ্যে মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন তাঁদের অভিযোগ, আমেরিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তাঁরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। এ ছাড়া আমেরিকার ট্যাক্স ব্যবস্থাও তাঁদের নাগরিকত্ব ছেড়ে দেওয়ার আরেকটি বড় কারণ।
অ্যালিস্টেয়ার বামব্রিজ আরও বলেন, বিদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের এখনো প্রতি বছর ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হয়। তাঁদের বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিনিয়োগ ও পেনশনের যাবতীয় তথ্য জানাতে হয়। তিনি বলেন, যারা (অন্য দেশের নাগরিক) মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে দিতে চান, তাঁদের বাধ্যতামূলক দুই হাজার ৩৫০ ডলার দিতে হবে এবং তাঁদের নিজ দেশের মার্কিন দূতাবাসে হাজির হয়ে জানাতে হবে।
ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও মানুষ মার্কিন নাগরিকত্ব ছাড়ছে। আর এই ছাড়ার হার ক্রমশ বাড়তে থাকবে বলে মনে করে বামব্রিজ অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
অ্যালিস্টেয়ার বামব্রিজ বলেন, ‘অসংখ্য মানুষ নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন নির্বাচনে কী ঘটবে, তার অপেক্ষায় আছে। যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার নির্বাচিত হন, তাহলে আমাদের বিশ্বাস তখন অসংখ্য মানুষ তাঁদের মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’