অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ভারতে নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। এই সংক্রমণকে ইতিমধ্যেই ‘মহামারী’ বলে ঘোষণা করেছে রাজস্থান এবং তেলঙ্গানা সরকার। মহারাষ্ট্রেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণে ইতিমধ্যেই ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দেড় হাজার। পশ্চিমবঙ্গেও আক্রান্ত হয়েছেন ৫ জন।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসও এখন মহামারীর কারণ হয়ে উঠেছে। রাজ্যগুলিকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জন সাধারণকে সচেতন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এবার আতঙ্ক বাড়িয়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরোমাইকোসিসের সংক্রমণ ধরা পড়ল পশ্চিমবঙ্গেও। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ওই রাজ্যে ৫ জনের শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের আক্রান্তদের নিয়ে। বলেছেন, এর ওষুধ দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। কিন্তু কেন্দ্র কোনও স্পষ্ট দিশা দিচ্ছে না। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে দ্রুত ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রান্ত একটি সরকারি নির্দেশিকা বা গাইডলাইন তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য। বাংলায় ৫ জন রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের খবর জানার পরেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তারা।
অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) জানিয়েছে, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগী, বেশি মাত্রায় স্টেরয়েড নেন যারা, তাদের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ক্যানসার বা অন্য কোনও জটিল রোগের চিকিৎসা যাদের অনেকদিন ধরে চলছে, তাদেরও এই ছত্রাক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি গুরুতর ভাবে কোভিডে আক্রান্ত, ভেন্টিলেটরে অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন, এমন রোগীরাও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
নাক দিয়ে অস্বাভাবিক কালো রস বেরনো বা রক্ত বেরনো এই রোগের একটা লক্ষণ। পাশাপাশি মুখে অসাড় ভাব, মুখ খুলতে বা চিবোতে খুব অসুবিধা হচ্ছে, নাক বন্ধ, মাথা ও চোখে প্রচণ্ড যন্ত্রণা, লাল চোখ ইত্যাদি সবই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের লক্ষণ। কেন্দ্রের তরফেও রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রান্ত সব খবর জানাতে এবং আক্রান্তদের তালিকা তৈরি করে রিপোর্ট জমা দিতে।
এআইআইএমএস জানিয়েছে, মিউকরমাইকোসিস মুখে আক্রমণ করতে পারে। নাক, চোখ ও মস্তিষ্কে এর সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ সংক্রমণে সাইনাসের ব্যথা, এক নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথার এক পাশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, দাঁতে ব্যথাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। সংক্রমণে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন। এটা ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সূত্র: নিউজ ১৮, টিওআই।