আমিনা শাহনাজ হাশমি (পুষ্টিবিদ) : বাংলায় গ্রীষ্মকাল আবার বলা হয় মধু মাস। চলছে ফলের মৌসুম। চারিদিকে ফল আর ফল। দেশি-বিদেশি নানা রকমের ফলের সমাহার বাজারে। আমরা সবাই কম বেশি ফল পছন্দ করি। তবে বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের ফল খাবারের বিশেষ কিছু পার্থক্য রয়েছে।কোন কোন ফল আছে যা খেতে মানা নেই, কিছু ফল আছে পরিমাণে অল্প পরিমাণে গ্রহণ করতে পারে, আবার কোনোটা আছে একেবারেই খাওয়া চলবে না।
সাধারণত যাদের গ্লুকোজের মাত্রা ৬ এর বেশি হয়ে থাকে এবং রক্তের গ্লুকোজের উপস্থিতির পরিমাণ ৬ এর ওপরে তাদেরকে ডায়াবেটিস রোগী ধরা হয়ে থাকে। তবে ফল খাবারের বেলায় গ্লুকোজের উপস্থিতি কী পরিমাণ তার ওপর নির্ভর করে। তবে পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী ফল গ্রহণ করাটাই ভালো।
আসুন জেনে নেয়া যাক রোগী দিনে কোন ফল কতটুকু গ্রহণ করতে পারবেন-
আম: এখন পাকা আমের সময়। চারিদিকে আমের গন্ধে ভরপুর। এই ফল সবাই কম বেশি পছন্দ করে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীরা এ ফল খেতে পারবেন যার পরিমাণ ৩০ গ্রাম অর্থাৎ ছোট আমের অর্ধেক।
কাঁঠাল: জাতীয় ফল কাঁঠাল ।পুষ্টিগুণে ভরপুর শর্করা সমৃদ্ধ কাঁঠাল ও ডায়াবেটিস রোগী পাবেন ৫০ গ্রাম অর্থাৎ মাঝারি কোয়া তিনটি।
লিচু: এই ফল খুবই কম সময় থাকে।ডায়াবেটিস রোগীরা এই ফল খেতে পারেন। এর পরিমাণ হলো ৪০ গ্রাম গুনে গুনে বড় চারটা থেকে পাঁচটা।
আনারস: আনারস খেতে পারেন ডায়াবেটিস রোগী ৬০ গ্রাম।
জাম: জাম ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই ভালো ফল। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করার পরিমাণ কমায় হলো জাম। জাম খেতে কোনও বাধা নেই।
পেয়ারা: কাঁচা পেয়ারা ইচ্ছেমত খাওয়া যায়। তবে পাকা পেয়ারা ৬০ গ্রাম খেতে পারেন অর্থাৎ মাঝারি একটি।
পেঁপে: কাঁচা পেঁপে ইচ্ছেমতো খাওয়া যায়। তবে পাকা পেঁপে ৬০ গ্রাম খেতে পারেন।
পাকা কলা: ডায়াবেটিস রোগী পাকা কলা খেতে পারেন ২৫ গ্রাম অর্থাৎ একটি কলার অর্ধেক।
আপেল: ডায়াবেটিস রোগী মাঝারি সাইজের আপেল খেতে পারেন যার ওজন ৪০ গ্রাম।
কমলা: ৬০ গ্রাম কমলা দেওয়া যেতে পারে অর্থাৎ মাঝারি একটি।
ডালিম বা বেদানা: বেদানা খেতে পারেন ৪০ গ্রাম বা একটির অর্ধেক।
জামরুল: জামরুল রক্তের চিনির পরিমাণ কমায়। এছাড়া জামরুলে আছে প্রচুর ফাইবার যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ উপকারী।
এছাড়া আমড়া ,আমলকি, টক বরই, টক জাতীয় ফল এক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। তাই দেরি না করে মৌসুমী ফলগুলো নিয়মিত খাবার শুরু করুন। মনে রাখবেন সব ফল একদিনে খাওয়া যাবে না প্রতিদিন এর মধ্যে থেকে একটি ফল খেতে পারবেন।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি গাইড বই।