অনলাইন ডেস্ক : করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে ব্যবসা শুরু হলে আরও ভয়ংকর হবে উঠতে পারে মহামারী। এমনটাই হুশিয়ারি দিয়েছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটস।
তিনি বলেছেন, ভাইরাস প্রতিরোধে বিদ্যমান ওষুধ এবং সম্ভাব্য ভ্যাকসিন যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এমন দেশ ও মানুষের কাছে সবার আগে পৌঁছে দিতে হবে।
অন্যথায় ভ্যাকসিন যদি বাজারের নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ সর্বোচ্চ দরদাতার হাতে চলে যায় তাহলে এই মহামারী সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে। একই সঙ্গে এটা হবে অন্যায় কাজ। শনিবার ইন্টারন্যাশনাল এইডস সোসাইটি আয়োজিত কোভিড-১৯ বিষয়ক ভার্চুয়াল কনফারেন্সে এসব কথা বলেন গেটস। খবর রয়টার্স ও দ্য প্রিন্টের।
বিশ্বের অন্তত ১২০টি প্রতিষ্ঠান কোভিডের ভ্যাকসিন কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশের কোম্পানিগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে সফলতার পথে অনেক দূর এগিয়েছেও। কেউ কেউ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই মুহূর্তে ২১টি ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত তিনটি ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে আছে। কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে ধনী দেশগুলো আগেভাগে এসব লুফে নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকটায় ইঙ্গি করে বিল গেটস বলেন, ‘যে মানুষদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের উপেক্ষা করে যদি সর্বোচ্চ দরদাতা মানুষদের কাছে ওষুধ ও ভ্যাকসিন চলে যায় তবে আমরা দীর্ঘ, অন্যায্য ও প্রাণঘাতী এক মহামারীই দেখতে পাব।
সমতার ভিত্তিতে এসব বণ্টনের জন্য আমাদের ভালো নেতৃত্ব প্রয়োজন, বাজারের ওপর নির্ভরতা নয়।’
গেটস আরও মনে করিয়ে দেন, দুই দশক আগে এইচআইভি/এইডসের বিরুদ্ধে যখন লড়াই শুরু হয় তখন সব দেশ ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসে এবং পরিশেষে আফ্রিকাসহ অধিকাংশ দেশ ওষুধ পেয়েছে। যদিও এইচআইভির পরিপূর্ণ ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কৃত হয়নি।
একই মডেল কোভিড-১৯ ওষুধ বণ্টনের ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি। তার কথায়, ‘এইচআইভি ও এইডসের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে শিক্ষা নিয়েই এখন বিশ্বব্যাপী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন বণ্টন করা যেতে পারে।’
আন্তর্জাতিক এইডস সোসাইটি আয়োজিত ভার্চুয়াল কোভিড-১৯ সম্মেলনের সময় প্রকাশিত একটি ভিডিওবার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। বিল গেটস আরও বলেন, ‘বাজারনির্ভর বিষয়গুলো নয়, সমতার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন ও ওষুধ বণ্টনের জন্য আমাদের ভালো নেতৃত্ব প্রয়োজন।’
বিশ্বজুড়ে শতাধিক ভ্যাকসিন প্রকল্পের কাজ চলছে এবং ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার গবেষণা, ট্রায়াল ও উৎপাদনের জন্য বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। উদ্বেগ রয়েছে যে, উন্নত দেশগুলো সম্ভাব্য ভ্যাকসিন ও ওষুধ নিজেরাই মজুত করবে এবং এর কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো খালি হাতে পড়ে থাকবে।