নাদিরা তাবাসসুম : রোজকার রুটিন মাফিক তিন বন্ধুর পার্কে হাঁটাহাঁটি। দিদার, দিনার আর রুহান সকালের দিকের হাঁটায় বাইরে বেরুতে না পেরে আজ বিকালে হাঁটার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী তিনজনই বেড়িয়েছে গরম কাপড়চোপড় গায়ে জড়িয়ে। কিছুদিন গরম আবহাওয়ার পর হঠাৎ একটু ঠান্ডা পড়েছে। বাইরে শীতল বাতাস বইছে কি জানি কখন শরীরে ঠান্ডা লেগে যায়। আজকাল করোনা ভাইরাসে ঠান্ডা লেগে সর্দি কাশি হলেই ভয়ের ব্যাপার তাই সাবধান থাকাই ভালো। দিনার-এর গায়ের জ্যাকেট লাল রং এবং ডিজাইন করা। তা দেখে দিদার এবং রুহান হাসতে থাকে। দিনার হাসির কারণ বুঝতে পেরে বলে – বুঝেছি তোমরা আমার লাল রং-এর জ্যাকেট দেখে হাসছো তো। আসলে এটা আমার ছেলের, ও জোড় করে আমায় পড়িয়েছে। ও বলে যে বয়স বেড়ে গেলেও মনকে ভাল রাখার জন্য একটু আধটু সাজগোছ করতে হয়। ও অবশ্য ওর বোন-এর কাছ থেকে শিখেছে। ওর বোন ওর মাকে প্রায়ই এই কথা বলে।
রুহান- তোমাকে তাই আজ হাসিখুশী দেখাচ্ছে। মনটা বেশ ভালো। তবে কি জানো, আমার স্ত্রী আবার ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে চলে তাই ও বলে যে, রং চং পোশাক পুরুষদের পরিধান করা নিষেধ আছে। পুরুষদের দাড়ি রাখা নিয়ে আমার সাথে ওর প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। আমার প্রতিদিন দাড়ি সেভিং-এর সময় ও বলতো যে, মুসলমান পুরুষ হিসাবে দাড়ি রাখা উচিত, তাই শেষ পর্যন্ত আপাততঃ ছোট করে দাড়ি রাখা শুরু করেছি।
দিনার- আমার স্ত্রী, ছেলেমেয়ে সকলে ঐ একই কথা বলে। আর বলে ধর্ম কর্ম যথাযথভাবে পালন করতে। হয়তো বয়স বাড়ছে, বিভিন্ন রোগে ভুগছি এবং বেশিরভাগ সময় ডাক্তারের কাছে যাতায়াত করতে হয়; তাই আল্লাহতায়ালাকে বেশি বেশি স্মরণ করতে বলে। ওরা অবশ্য ঠিকই বলে কারণ যে হারে করোনা মহামারীতে আত্মীয় স্বজন এবং আশেপাশের পরিচিত মানুষগুলো এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছে তাতে মানুষের কোন ভরসা নেই।
রুহান- মৃত্যুর সাথে সাথে দেহটা বিকল হয়ে যায়, এ পৃথিবীতে তার আর কোন লেনদেন থাকে না। পরজগত –এর হিসাব নিকাশ তখন মূখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরাআনে সূরা হাদীদ-এর ২০ নং আয়াতে বর্ণনা করেছেন “তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক শ্লাঘা ও ধনে-জনে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তার উপমা বৃষ্টি, যা দিয়ে উৎপন্ন শস্যসম্ভার অবিশ্বাসীদের চমৎকৃত করে, অতপর তা শুকিয়ে যায়। ফলে তুমি তা পীতবর্ণ দেখতে পাও, অবশেষে তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ছাড়া আর কিছুই নয়।” সূরা আনাআম-এর ৩২ নং আয়াতে তিনি আরও বলেন, “আর পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক বই কিছুই নয় এবং যারা সাবধানতা অবলম্বন করে, তাদের জন্য পরকালের আবাসই শ্রেয়, তোমরা কি তা অনুধাবন কর না?”
দিদার- আসলে আমাদের দেহকে একটি সচল কারখানার সংগে তুলনা করা চলে। এতে আছে অনেক কোমল অথচ মজবুত যন্ত্রের সমাবেশ। এগুলো মস্তিষ্কের মাধ্যমে একে অপরের সংগে যুক্ত। যেমন স্পর্শ (ত্বক), গন্ধ (নাক), স্বাদ (জিব্বা), শ্রবণ (কান) ও দৃষ্টি (চোখ) – এই পাঁচটি ইন্দ্রিয় আমাদের জ্ঞান অর্জন করতে, জীবিকা নির্বাহ করতে ও জীবনকে উপভোগ করতে সাহায্য করে। শরীর ও মনের অতি নিবিড় সম্পর্ক থাকায় আমদের মন ভালো থাকলে শরীর ভালো থাকে আবার শরীর ভালো থাকলে মনও ভালো থাকে। কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানো, শরীরের অস্তিত্ব আছে, দেখা যায়, ধরা যায় ও ছোঁয়া যায়; শরীরের প্রত্যেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যায়, কিন্তু মনকে দেখা যায় না, ধরা যায় না ও ছোঁয়া যায় না; মনকে সেভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যায় না তবুও তার অস্তিত্ব আছে বলে স্বীকার করি। কিভাবে আমরা মনের অস্তিত্ব স্বীকার করি? মনকে দেখা যায় না কিন্তু আমরা অনুভব করি। মানুষের কথাবার্তা, চলাফেরা, আচার ব্যবহার ইত্যাদি দেখে আমরা তার মনের ভেতরটা এবং মানুষটাকে ভালো মন্দ বিচার করে থাকি। এজন্যেই মনোবিজ্ঞানীরা ‘সাইকোলজি’-কে ‘সাইন্স অফ মাইন্ড’ বলে না; বলে ‘সাইকোলজি ইজ এ সাইন্স অফ বিহেভিয়ার’। আবার মানুষের আবেগ, অনুভূতি, প্রেম ভালোবাসা, জ্ঞান বুদ্ধি, বিবেক, চিন্তা চেতনা সবই থাকে মানুষের মনে। তবে মনের অবস্থানই বা কোথায়?
দিনার – বিজ্ঞান বলে ‘সুপার কম্পিউটার’ সদৃশ্য মানুষের মস্তিষ্কে মন, চিন্তা আর সচেতনতা যাই বলো তাদের অবস্থান এবং সেখানেই তাদের উৎপত্তি ঘটে। সকল প্রাণীদেহেই তো মস্তিষ্ক থাকে কিন্তু মানবদেহের মস্তিষ্কের মতো এত উন্নত নয়। শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে মস্তিষ্ককেও বস্তুগত (ম্যাটেরিয়াল) বলা যায়। কিন্তু মস্তিষ্কে উৎপাদিত চিন্তা চেতনা, আবেগ অনুভূতি, প্রেম ভালোবাসা ইত্যাদি সবই অবস্তুগত অর্থাৎ দেখা যায় না, ধরা যায় না ও ছোঁয়া যায় না তবে অনুভব করা যায়। মানুষ বস্তুগত শরীরের পঞ্চইন্দ্রীয় অর্থাৎ চোখ, কান, নাক, জিহ্বা ও ত্বক-এর সাহায্যে দেখে, শুনে, গন্ধ, স্বাদ ও স্পর্শ গ্রহণের মাধ্যমে যে তথ্য ও অভিজ্ঞতা প্রাপ্ত হয় তা মস্তিষ্কে প্রেরণ করে যেখানে স্নায়ু, কোষ, নিউরোন ক্রিয়া প্রক্রিয়া পদ্ধতিতে চিন্তা, চেতনা আবেগ অনুভূতি প্রেম ভালোবাসা, বিবেক বুদ্ধি ও বিচিত্র অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করে। শারীরিক গঠনভেদে প্রত্যেকটি মানুষ যেমন ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্টে গঠিত তেমনই পারিবারিক, সামাজিক পরিবেশ ভেদে মানুষের চিন্তা চেতনাও ভিন্ন ভাবে গঠিত হয়। মানুষ সচেতন এই পৃথিবী, মহাবিশ্ব এবং সৃষ্ট সকল বিষয় সম্পর্কে। সচেতন প্রেম ভালবাসা,হিংসা বিদ্বেষ, ন্যায় অন্যায়, সত্য অসত্য্,ধর্ম অধর্ম নতুন নতুন উৎভাবিত জ্ঞান বিজ্ঞান নিয়ে। এই সচেতনতা শুধুমাত্র মানুষেরই আছে অন্য কোন প্রাণীর নেই। তাই মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। বস্তুগত হিসেবে মানব শরীর-এর ক্ষয় ও বিনাশ আছে কিন্তু মন,অন্তর চিন্তা চেতনা বিবেক বুদ্ধিরও কি বিনাশ আছে? শরীর-মন সমস্যা নিয়ে বিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, পদার্থবিদ, নিউরোলজিষ্টদের মধ্যে তত্ত ও মতবাদে বিভেদ রয়েছে প্রচুর। তারা প্রকৃত সত্যকে আবিষ্কার –এর পিছনে ছুটে চলেছেন আজ অবধি। কেউ বলেছেন বস্তুজগত সত্য; বস্তুজগৎ- এর বাইরে মনোজগৎ বা সচেতনতা বলতে কিছু নেই আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, মনোজগৎ বা সচেতনতাই সত্য; বস্তুজগত সত্য নয়, মহাবিশ্বের সর্বত্রই সচেতনতা (Consciousness) বিরাজমান। সচেতনতা অমরনশীল, এর কোন বিনাশ নেই। যত তত্ত মতবাদ থাকুক না কেন – এনিয়ে প্রকৃত সত্য একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।
দিদার- সকল মানুষের মস্তিষ্ক একই ধরনের সচেতনতা সৃষ্টি করে না। আর তাই তো একই পরিবার, একই সমাজে ও একই পরিবেশে জন্ম হওয়া, বসবাস করা ও বেড়ে উঠা মানুষগুলো কেউই একই শারীরিক এবং মানসিক চেতনার অধিকারী হয় না। তাই প্রত্যেকটি মানুষ প্রত্যেকটি মানুষ থেকে আলাদা ও ভিন্ন। কেউ ভালো কেউ মন্দ,কেউ সত্যবাদী কেউ মিথ্যাবাদী, কেউ পাপী কেউ পূণ্যবান। এটাও মহান আল্লাহতায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত। তবে মানুষকে পাপ-পূণ্যের যেমন জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তেমনি আবার পছন্দ (Choice) করার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে।
রুহান- মানুষের শারীরিক সুঠাম গঠন এবং তাকে যে পাপ-পূন্যের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে দুটি সূরায় চমৎকার ভাবে বর্ননা করেছেন। আমাদের জানা উচিত যে, আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে শপথ বা কসম করে যে বিষয়ে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূরা আত তীন-এ চারটি বিষয়ে (তীন, যাইতুন, তূর পাহাড় এবং মক্কা নগরী)-এর কসম বা শপথ করে আল্লাহ বলেন “নিশ্চয়ই মানুষকে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাকে ফিরিয়ে দেই হীন থেকে হীনতম অবস্থায়। যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তারা ব্যতীত, তাদের জন্য রয়েছে এমন শুভফল যা কখনও নিঃশেষ হবার নয়। এরপর কোন বস্তু কর্মফল সম্পর্কে তোমাকে অবিশ্বাসী করেছে? আল্লাহ কি শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?” আবার সূরা আস শামস-এ এগারোটি বিষয়ে শপথ করা হয়েছে। “শপথ সূর্য ও তার কিরণের, আর সূর্যের পশ্চাতে আসা চন্দ্রেরও শপথ, আর সূর্যকে প্রকাশকারী দিবসেরও, আর সূর্যকে আচ্ছাদনকারী রাতেরও, আকাশ ও তার নির্মাতার, আর পৃথিবী ও সংস্থাপন কারীর, আর মানবের ও সুবিন্যস্থকারীর যিনি তাকে পাপপূণ্যের জ্ঞান দিলেন, সে সফলকাম যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করলো, আর সেই ব্যর্থ যে পাপাচারে কলুষিত হয়েছে”।
দিনার- তাইতো কি চমৎকার ভাবে মানুষের শরীরে কতগুলো সিস্টেম কাজ করে যাচ্ছে ভাবলে বিস্ময়ে অবাক হয়ে যাই। যেমন- শ্বাসতন্ত্র, পাচনতন্ত্র, সঞ্চালনতন্ত্র, মূত্রতন্ত্র, প্রজননতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র, কঙ্কালতন্ত্র, বহিরাবরণতন্ত্র, রোগপ্রতিরোধতন্ত্র, পরিবহনতন্ত্র, চেতনাতন্ত্র – এই তন্ত্রগুলো স্বয়ংক্রিয় ভাবে পরস্পরের সাথে সুসমন্বয় বজায় রেখে কাজ করে চলেছে। চেতনা তন্ত্রে অবস্থিত মস্তিষ্ককে স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন যন্ত্র, সুপার কম্পিউটার এবং শরীরের টেলিফোন এক্সচেঞ্জের সংগে তুলনা করা চলে। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ মস্তিষ্ক। এর গুরুত্বের জন্যই মাথার খুলির দ্বারা সুরক্ষিত এবং তরল মস্তিষ্ক মেরুজলে ভাসমান ভাবে অবস্থিত। মস্তিষ্ক বিচার বুদ্ধি ও যুক্তি, নড়াচড়া করা, ইন্দ্রীয় দৃষ্টি,পেশী নিয়ন্ত্রণ, বাকশক্তি ও শ্রবণ, শ্বাস ও হৃদস্পন্দনের মতো স্বয়ং চালিত ক্রিয়া, অম্লে মাত্রা,মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করে।
দিদার- তাহলে চিন্তা করো, সৃষ্ট সকল বস্তুর মতো মানুষ একই উপাদানে গঠিত তাই শরীরটা এত ভংগুর ও ক্ষণস্থায়ী। শরীর নিয়ে গর্ব বা অহংকার করার কিছু নেই ! আমার ধারণা, মানুষের মন, চিন্তা ও চেতনাই সব। একজন মানুষ নিজেকে যা ভাবে ও চিন্তা করে, সে ঠিক তাই-ই। তার চিন্তা চেতনা ভালো হলে সে ভালো মানুষ আর খারাপ হলে সে খারাপ মানুষ।
রুহান- এজন্যই বুঝি পবিত্র কোরআনে বারবার চিন্তা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সূরা ওয়াকিয়ার ৫৭ থেকে ৬২ নং আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন “তোমাদের সৃষ্টি করলাম, বিশ্বাস কর না কেন? বীর্যপাত সম্পর্কে তোমরা কি ভেবেছ? তা কি তোমরা সৃষ্টি করেছ নাকি আমি সৃষ্টি করেছি? আমিই তোমাদের মধ্যে মৃত্যু নি র্ধারন করেছি,আর আমি এব্যাপারে অক্ষম নই যে তোমাদের আকৃতি প রিবর্ত ন করে এমন আকৃতি দিতে পারি যা তোমরা অবগত নও। আর প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে তো তোমরা জান, তবে কেন তোমরা চিন্তা কর না”? সূরা নিসার ৮২ নং আয়াতে তিনি বলেন “আচ্ছা তবে কি তারা কোরআন সম্মন্ধে চিন্তা করে না? এ (কোরআন) যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও হতো তবে তাতে নিশ্চয় অসংগত কথা পেত”। সূরা রুম এর আয়াত নং ৮-এ তিনি আরও বলেন “তারা কি নিজেদের অন্তরে এ চিন্তা করেনা যে, আল্লাহ আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডল এবং এদুয়ের মধ্যস্থিত সবকিছু যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন নির্দিষ্ট কালের জন্য; অনেক মানুষই তাদের প্রতিপালকের সংগে সাক্ষাতকে স্বীকার করেনা”। উক্ত সূরার আয়াত ২১ ও ২২-এ উল্লেখ করা হয়েছে “তাঁর নিদর্শন, তিনি তোমাদের মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন, এরপর তোমরা মানুষরূপে ছড়িয়ে পড়ছ। আর তাঁর আর একটি নিদর্শন হল তোমাদের মধ্য হতে সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যেন তাদের কাছে তোমরা শান্তি পেতে পার; এবং পারস্প রিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন আছে। আরও তাঁর নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি, তোমাদের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা। নিশ্চয়ই এতে রয়েছে, যারা জ্ঞানী তাদের জন্য বহু নিদর্শনাবলী”।
দিনার- ভেবে দেখ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যতই উন্নতি ঘটছে ততই মানুষের কাছে আল্লাহতায়ালার অস্তিত্ব সুস্পষ্ট হতে চলেছে। বর্তমান যুগে অনেক ফিজিসিষ্ট এবংএস্ট্রোফিজিসিষ্ট –দের মতো এস্ট্রোফিজিসিষ্ট ডক্টর হুগ রস বলেছেন science continues reveal God, God reavealed in both Scripture and Nature” বিখ্যাত আমেরিকান পদার্থবিদ মিচিও কাকু ‘স্ট্রিং থিওরি ‘‘থিওরি অফ এভ রিথিং’ কে বলেছেন ‘গড একুয়েশন’।
রুহান- ঠিকই বলেছো, বর্তমান আধুনিক যুগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রমশ উন্নয়ন মহান আল্লাহতায়ালারই ঐশর্য, বিশালত্ব ও মহানুভবতা প্রকাশ করে চলেছে। ফরাসী ডাক্তার ও বিষেশজ্ঞ মরিস বুকাইলি পবিত্র কোরআন নিয়ে অনেক অধ্যয়ন, পর্যবেক্ষন ও গবেষণার পর তার লিখিত গ্রন্থ ‘বাইবেল, কোরআন ও বিজ্ঞান’-এ জানিয়েছেন “কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে বিশ্ব সৃষ্টি, জ্যোতির্ম ন্ডল, ভূমন্ডল গঠনে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদানের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ, পশু প্রজাতি, উদ্ভিদজগত এবং মানব প্রজনন প্রভৃতি বিষয়ে এত অধিক আলোচনা রয়েছে যে অভিভূত না হয়ে পারা যায় না”। তিনি আরও জানিয়েছেন “যেসব বৈজ্ঞানিক তথ্য ও সত্য সম্পর্কে কোরাআনে স্পষ্ট কোন অভিমত বা সুনির্দিষ্ট বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে, সেসব বক্তব্য ও অভিমত বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য বলে সাব্যস্ত ও সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে- একান্ত হালে- একদম আধুনিক যুগে এসে”।