দ্বীপের স্কুলগুলো আবার চালু করতে চাইছে স্থানীয় প্রশাসন। ছবি: বিবিসি

অনলাইন ডেস্ক : করোনা ভাইরাসে ভারত যখন বিপর্যস্ত, তখন সে দেশরই একটি দ্বীপ বিরল নজির গড়েছে। মুসলিম প্রধান এই দ্বীপে এখন পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব হলো?

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বীপটির নাম লাক্ষাদ্বীপ। এখানে প্রায় ৭০ হাজার জনসংখ্যার ৯৭ শতাংশই মুসলমান।

আরব সাগরের এই দ্বীপপুঞ্জটি ভারতের একমাত্র অঞ্চল যেখানে একটিও করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়নি। এটি ৩৬টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাকি দেশের তুলনায় অনেক আগে থেকে যাতায়াতে কড়াকড়ি আরোপ করাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়ায় এই দ্বীপে ভাইরাস ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।

ওই অঞ্চলের এমপি মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘দ্বীপে বহিরাগতদের প্রবেশ করতে না দেওয়ায় এমন সাফল্য মিলেছে।’

সম্প্রতি লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসন সেখানে ফের স্কুল খোলার জন্য কেন্দ্রের অনুমতি চেয়েছে।

এমপি ফয়সাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘যখন জানুয়ারির শেষে কেরালায় প্রথম কোভিড রোগীর সন্ধান মেলে, তখনই আমরা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আসা বন্ধ করে দিই।’

‘এমন কী, এন্ট্রি পারমিট নিয়ে যারা এখানে শ্রমিকের কাজ করতে আসেন তাদের জন্যও লাক্ষাদ্বীপের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়।’

‘এছাড়া পুলিশ এখানে কারফিউ খুব কঠোরভাবে বলবৎ করেছে। লোকজনও অযথা বাড়ির বাইরে বেরোয়নি।’

লাক্ষাদ্বীপ কীভাবে প্রায় ছয়মাস ধরে করোনা মুক্ত থাকতে পারল তা নিয়ে বিস্তারিত স্টাডি করেছেন দিল্লির সাংবাদিক অবন্তিকা ঘোষ। তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন।

অবন্তিকা ঘোষ বলেন, ‘লাক্ষাদ্বীপ খুব ভালো করেই নিজেদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন ছিলো। আর সে কারণে অনেক আগে থেকে ভাইরাস ঠেকাতে তারা কঠিন ছিলো।’

তিনি আরো বলেন, ‘লাক্ষাদ্বীপ যখন ডোমেস্টিক স্ক্রিনিং শুরু করে, তখন বাকি দেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র চীন, হংকং, সিঙ্গাপুর থেকে আসা যাত্রীদেরই স্ক্রিন করছিলো। অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের স্ক্রিন করার কথা তখন কেউ ভাবেনি।’

এছাড়া লাক্ষাদ্বীপে মানুষের ভিড় নেই। ফলে ভাইরাস ঠেকাতে এটিও ভীষণ সাহায্য করেছে বলে জানান অবন্তিকা ঘোষ।