অনলাইন ডেস্ক : এশিয়া ছেড়ে ক্রমশই ইউরোপ ও আমেরিকায় চেপে বসেছে করোনাভাইরাস। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনার শিকার ৮১ শতাংশ রোগী ১০ দেশের বাসিন্দা। আর এ তালিকায় অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালি। তবে, আফ্রিকায় করোনাভাইরাস তেমন সুবিধা করতে পারছে না। দক্ষিণ এশিয়াতেও এর অবস্থান বেশ দুর্বল।
বুধবার (১ এপ্রিল) দুপুর ১২টা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, এ পর্যন্ত ২০০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত রোগীর ৮১ শতাংশ মাত্র ১০টি দেশের। এর মধ্যে ৬টি দেশ ইউরোপের এবং ৩টি এশিয়ার। তবে শীর্ষে রয়েছে উত্তর আমেরিকার দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এককভাবে দেশটিতে শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৩০০ জন।
এছাড়া ইতালিতে আক্রান্ত ১,১০,৫৭৪ জন, স্পেনে ১,০৪,১১৮ জন, চীনে ৮১,৫৫৪, জার্মানিতে আক্রান্ত ৭৭,৯৮১ জন, ফ্রান্সে ৫৬,৯৮৯ জন আক্রান্ত, ইরানে ৪৭,৫৯৩ জন, যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ২৯,৪৭৪ জন, সুইজারল্যান্ডে ১৭,৭৬৮ ও তুরস্কে আক্রান্ত ১৫,৬৭৯ জন।
৫৩ শতাংশ রোগী ইউরোপে: নানা চেষ্টা করেও করোনার ‘চর্বি’ যেন গলাতে পারছে না বিশ্বে শীতপ্রধান অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ইউরোপের দেশগুলো। জ্যামিতিক হারে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে এ অঞ্চলে। গতকাল পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া রোগীর ৫৩ শতাংশ ছিল ইউরোপের। প্রতি মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইউরোপে এ পর্যন্ত মারাই গেছে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ।
উত্তর আমেরিকাকে ভোগাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউরোপের পর সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী এখন উত্তর আমেরিকায়। এ অঞ্চলের ২৪টি দেশে করোনা রোগী ২ লাখ ২ হাজার ৭৬৯ জন। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬২৪ জন। সব মিলিয়ে উত্তর আমেরিকায় থাকা ২৪ শতাংশ রোগীর ২২ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর আছে কানাডা। সেখানে রোগী ৮ হাজার ৫৬৯ জন। বাকি ২২টি দেশে রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৫৫৪ জন।
এমআইটির গবেষণা বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরের দিকের রাজ্যগুলোর তাপমাত্রা কম এবং সেখানে সংক্রমণের হার অপেক্ষাকৃত উষ্ণ দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর তুলনায় বেশি।
এশিয়ায় বিক্ষিপ্ত ছোটাছুটি
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে এশিয়া মহাদেশের চীন থেকে শুরু হয় করোনার বিস্তার। এরপর এটি ইউরোপে জুড়ে বসলেও এশিয়ার ৪৩টি দেশে বিক্ষিপ্ত ছোটাছুটি করছে। মোট চিহ্নিত রোগীর ২১ শতাংশ এশিয়ার, যার মধ্যে শুধু চীনে রয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। দেশটিতে ৮২ হাজার ২৯৪ জন শনাক্ত হলেও এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। নতুন করে খুব একটা বাড়ছে না।
এদিকে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষক কাশিম বুখারিসহ বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীর করা গবেষণা বলছে, আক্রান্ত দেশগুলোর গড় তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৪ থেকে ৯ গ্রাম। আর এশিয়ার যে দেশগুলোয় বর্ষা মৌসুম আছে, সেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়তো কম হবে। কারণ এই অঞ্চলে প্রতি ঘনমিটারে আর্দ্রতার পরিমাণ ১০ গ্রাম পর্যন্ত।