অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা তিনজনকে বিশ্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তারা হলেন- মাহফুজ আলম, সুচিস্মিতা তিথি ও নাইম আলী।
এ সময় মাহফুজকে ‘গণঅভুত্থানের পেছনের কারিগর’ হিসেবেও বিষেশভাবে পরিচয় করে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’ অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শেষ দিকে আন্দোলনের এই তিনজনকে পরিচয় করিয়ে দেন ড. ইউনূস। সুচিস্মিতা তিথি ও নাইম আলী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত।
অন্তবর্তী সরকার গঠনের পর মাহফুজ আলমকে নিজের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। সুচিস্মিতা তিথি ও নাইম আলী তার সহকারী প্রেস সচিব।
ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজে ড. ইউনূস বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। কীভাবে আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, ছাত্ররাও গুলির সামনে কীভাবে বুক পেতে দাঁড়িয়েছে, সেই গল্প বলেন তিনি। এক পর্যায়ে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। এ সময় তিনি দর্শকদের জানান, এখানে ছাত্র আন্দোলনের তিনজন প্রতিনিধি রয়েছেন।
ড. ইউনূস বলেন, তারা যেভাবে কথা বলে এরকম কথা আমি আগে কখনও শুনিনি। তারা নতুন পৃথিবী, নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রস্তুত। প্লিজ আপনারা তাদের হেল্প করবেন। যেন তারা তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এ গুরু দায়িত্ব আমাদের সবার নিতে হবে।
এ সময় বিল ক্লিনটনের হাত ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনি আমাদের সঙ্গে আছেন এ স্বপ্ন পূরণে।
তিনি আরও বলেন, তাদের দেখতে অন্য তরুণদের মতো মনে হলেও আপনি যখন তাদের কাজ দেখবেন, বক্তব্য শুনবেন, আপনিও অবাক হবেন। তারা সারা দেশ নাড়িয়ে দিয়েছে। অনেক কিছু হয়েছে, কিন্তু তারা তাদের বক্তব্য, ত্যাগ কিংবা কমিটমেন্ট থেকে পিছিয়ে যায়নি। তাদের বক্তব্য ছিল, আপনারা চাইলে আমাদের হত্যা করতে পারেন, কিন্তু আমরা পথ ছেড়ে যাব না।
এ সময় মাহফুজকে সামনে এগিয়ে দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, গণঅভুত্থানের পেছনের কারিগর মাহফুজ। যদিও মাহফুজ সব সময় বলে, সে নয় আরও অনেকে আছেন। যদিও সে গণঅভ্যুত্থানের পেছনের কারিগর হিসেবে পরিচিত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে স্বৈরশাসকের পতনের ডাকে হওয়া আন্দোলন সম্পর্কে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটা হঠাৎ করে হয়েছে এমন কিছু নয়। খুবই গোছানো আন্দোলন। এছাড়া এত বড় আন্দোলন হয়েছে মানুষ জানতো না কে আন্দোলনের লিডার! ফলে একজনকে আটক করা যেত না। বলাও যেত না, একজনকে আটক করলে আন্দোলন শেষ।
এ সময় মাহফুজকে দেখিয়ে ড. ইউনূস বলেন, তার কথা শুনলে সারা পৃথিবীর যেকোনও তরুণ অনুপ্রাণিত হবে। তারা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করবে। তাদের সফলতার জন্য আপনারা প্রার্থনা করবেন। তাদের জন্য হাততালি হোক। এ সময় বিল ক্লিনটনসহ সবাই হাততালি দিয়ে সম্মান জানান।