অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ আজ মঙ্গলবার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদের চলমান বাজেট অধিবেশনে ‘মুজিব কোট’ পরে যোগ দিয়েছেন। হঠাৎ করে তার এই আচরণে দলের মধ্যে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন সিনিয়র নেতারা। বরং তারা বলছেন, এ বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মনোভাব জানার জন্য অপেক্ষায় আছেন তারা। যদিও এমপি হারুন বলছেন, তার এই পোশাক মুজিব কোট নয়।
মুজিব কোট পরার বিষয়ে কল করে জানতে চাইলে হারুনুর রশীদ, ‘এই মহামারির সময় কে কী কাপড় পরলো এগুলো নিয়ে এতো খেয়াল করার কী আছে। মুজিব কোটে ছয়টা বোতাম এবং কালো হয়। এর বাইরে অন্য কালারের (রঙ) কোটগুলো মুজিব কোট ধরা হয় না। এমনিতে মানুষ পাঞ্জাবির ওপর কোট পরে। আমিও পরেছি।’
তিনি আরও জানান, আজ সংসদ থেকে তিনি ওয়াকআউট করেছেন। সংসদে বৈঠকে সভাপতির দায়িত্বপালনকারী ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বির বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে তিনি ওয়াকআউট করেন।
২৩ জুন জাতীয় সংসদে মুজিব কোট পরে উপস্থিত হন এমপি হারুন (ছবি: সংগৃহীত)
বিএনপি নেতারা বলছেন, অনেক নাটকীয়তার পর তারেক রহমান নিজের একক সিদ্ধান্তে দলের সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়ায় অনুমতি দিয়েছিলেন। এখন এমপি হারুনের এমন কর্মকাণ্ডে আগে তার মনোভাব কী সেটা জানার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে। আর হারুনও কেন হঠাৎ করে মুজিব কোট পরেছেন, তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা শুনতে হবে। তখন তারা এ বিষয়ে দলের করণীয় ঠিক করতে পারবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কী বলবো। আমি কিছু জানিও না।’
দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সঙ্গে কথা বললে তিনিও কোনও মন্তব্য জানাতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির সিনিয়র দুই নেতা দলীয় সংসদ সদস্যের এমন আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘হঠাৎ করে হারুন সাহেব কেন এমন কর্মকাণ্ড করতে গেলেন তা আগে জানতে হবে। তার এ বিষয়ে তারেক রহমানের মনোভাব কী সেটা আগে জানা দরকার। নিশ্চয়ই আজ-কালের মধ্যে তার মনোভাব জানা যাবে।’
এই দুই নেতা আরও বলেন, ‘আমরা নিজ থেকে তারেক রহমানকে এ বিষয়ে কিছু জানাবো না এবং তার মনোভাবও জানতে চাইবো না। তিনি নিজ থেকে কী মনোভাব ব্যক্ত করেন সেটাই মুখ্য বিষয়।’
বর্তমান একাদশ সংসদে সংরক্ষিত নারীসহ সাত জন সংসদ সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সংসদ সদস্য বলেন, “হারুনুর রশীদ সংসদে যোগদান করার পরে প্রথম বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘আমাদের নেত্রী’ বলেও সম্বোধন করেছিলেন। সেটা নিয়ে তখনও অনেক কথা হয়েছিল। এখন আজ কেন এমন একটা কাণ্ড করলেন তার কিছুই বুঝতে পারছি না।”
এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘আমি বাকি সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে তারেক রহমান ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবো। তবে তার আগে হারুন সাহেবের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’