অনলাইন ডেস্ক : অল ফ্রেঞ্চ ফাইনাল হলো না। পিএসজি গতকাল নিজেদের কাজটা করে রেখেছিল। কিন্তু ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে চমক দেখিয়েই শক্তি ফুরিয়ে গেছে লিওঁর। আজ বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৩-০ গোলে হেরে গেছে দলটি। ১০ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়ে প্রতিশোধ নেওয়া আর হলো না লিওঁর। আগামী ২৩ আগস্ট ফাইনালে নেইমারদের পরীক্ষা নেওয়ার কাজটা পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখই পেল।
কোয়ার্টার ফাইনালেই সুযোগ কাজে না লাগাতে পারলে কী চড়া মূল্য দিতে হয় তা দেখেছে লিঁও। ম্যানচেস্টার সিটির ভুলগুলো সেদিন কাজে লাগিয়েছিল ফ্রেঞ্চ দল। শেষ ১৫ মিনিটে নিশ্চিত দুটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছিল সিটি, পরের মিনিটেই পাল্টা আক্রমণে উঠে গোল করেছিল লিওঁ। আজ সেটার উল্টো অভিজ্ঞতাও হয়ে গেল।
প্রথম সুযোগটা ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই পেয়েছিল লিওঁ। বার্সেলোনার বিপক্ষে হাইলাইন রক্ষণ খেলিয়েও সমস্যা হয়নি বায়ার্নের। নিজেরা গোল খেতে ব্যস্ত, অন্যের রক্ষণের পরীক্ষা নিবে কখন? আজ লিওঁ সে সুযোগটাই নিল। সিটির বিপক্ষে যে পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিল, আজও সেটা মাথায় নিয়েই নেমছিল তারা। বল পায়ে রাখতে পছন্দ করে এমন দলের বিপক্ষে পাঁচজনের রক্ষণের সামনে চারজনের মিডফিল্ড। আর কাগজে-কলমে দুজন আক্রমনে থাকার কথা থাকলেও শুধু মেম্ফিস ডিপাইকে সামনে রেখে প্রতি আক্রমনে ওঠা।
চতুর্থ মিনিটে ম্যাক্সেন্স ক্যাকেরের এক থ্রুতে বায়ার্ন রক্ষণ খালি হয়ে যায়। একা ম্যানুয়েল নয়্যারকে পেয়ে যান ডিপাই। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও নয়্যারের বিশাল দেহকে ফাঁকি দেওয়া হয়নি ডিপাইয়ের। লিওঁর দ্বিতীয় সুযোগ হাতছাড়া ১৭ মিনিটে। এবার একাম্বি বায়ার্ন রক্ষণকে তছনছ করে নয়্যারকেও হার মানালেন। কিন্তু এবার গোলপোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়াল। সে আক্রমণের বয়স ৬০ সেকেন্ড পেরোনোর আগেই গোল খেল লিওঁ।
জশুয়া কিমিখের এক পাশ পেয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে একের পর এক লিওঁ রক্ষণকে কাটালেন সার্জ নাব্রি। যখন মনে হলো একটু বেশিই এদিকে চলে এসেছেন, তখনই বাঁ পায়ের জোরালো শট। লিওঁ গোলরক্ষক ঝাঁপ দিয়েছিলেন বটে, তবে সেটা শুধু গোলের সৌন্দর্য্য বাড়ালো।
২৫ মিনিটে ওই নাব্রিরই আরেকটি গোলা ঠেকালেন লোপেস। তবে এবার কোনো নৈপুন্যের কারণে নয়, লিওঁ রক্ষনের ভুলে বক্সের ভেতর বল পেয়েছিলেন জার্মান উইঙ্গার। ৩৩ মিনিটে অবশ্য লোপেসের পক্ষে সম্ভব ছিল না নাব্রিকে আটকানো। পেরিসিচের ক্রস থেকে গোল করতে গিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা হয়ে গেল রবার্ট লেভানডফস্কির। তাঁকে ঠেকাতে গিয়ে মাটিতে লুটোপুটি খেলেন লোপেসও। এদিকে গড়াতে থাকা বল পেলেন নাব্রি। মাত্র কয়েক গজ দূর থেকে পোস্টে বল পাঠাতে কোনো সমস্যা হয়নি তাঁর।
প্রথমার্ধেই গোলের ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল বায়ার্ন। কিন্তু লেভানডফস্কির ভুলে সেটা আর করা হয়নি তাদের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সে দুঃখ ভুলতে পারত দলটি। কিন্তু ৫১ মিনিটে ইভান পেরিসিচ গোলরক্ষককে একা পেয়েও দুর্বল এক শট নিয়েছেন।
অন্যপ্রান্তে হোসেম অওর, একাম্বি এবং ডেমবেলে ভালোই আক্রমণ করছিলেন। কিন্তু ৫৮ মিনিটে একা পেয়েও একাম্বি যখন নয়্যারের অয়ায়ে বল লাগালেন তখন নিশ্চিত বোঝা গেছে আজ ভাগ্যটা বায়ার্নের পক্ষে। এর পর দুই দলই গোল দেওয়ার অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বায়ার্ন পেল গোলের দেখা। ৮৮ মিনিটে কিমিখের ক্রসে লাফিয়ে উঠে হেড করে বহুদিন পর চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে গোলের স্বাদ পেলেন লেভানডফস্কি। এতে এ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৫ গোল হয়ে গেল তাঁর। তাঁর সামনে এখন শুধু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড (এক মৌসুমে ১৬ ও ১৭ গোল)।