হাসান জাহিদ : কথাশিল্পী হাসান জাহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন ইংরেজি সাহিত্যে, আর কানাডায় পড়াশুনা করেছেন সাংবাদিকতা ও কালচার এন্ড হেরিটেজ বিষয়ে। তিনি ইকো-কানাডা স্বীকৃত পরিবেশ বিশেষজ্ঞ। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের লেখক হাসান জাহিদ ‘বালুকা বেলা’ কলামে ‘বাংলা কাগজ’ এর পাঠকের কাছে তুলে ধরবেন তাঁর প্রিয় সব বিষয়ের অনুসন্ধিৎসু ক্যানভাস।
এবছরের (২০২৩) বইমেলায় বই প্রকাশ ও ঈদ সংখ্যায় লেখালেখি, দুই বাংলার গল্পসংকলনে গল্প প্রকাশ ও দুয়েকটি পত্রিকায় লেখা প্রকাশ ছাড়াও দুটি পুরস্কারপ্রাপিÍ আমার জন্য সাফল্যের বছর হয়ে থাকবে।
যদিও সাফল্য কথাটা উল্লেখ করেছি, তবে লেখালেখি করতে গিয়ে আমি নিজের সাফল্যের কথা আগে ভাবি না; ভাবি দেশ-সমাজ ও বৈশি^ক কল্যাণের কথা। বিশ^ শান্তির কথা।
আমি আত্মিক তাগিদে লিখি, অপসংস্কৃতি ও বই-বাণিজ্যকে ঘৃণা করি আর অলেখকদের করুণা করি। পুরস্কারপ্রাপ্তির জন্য লিখি না; এটা আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীরাও জানে। আমি আজীবন লিখে গেছি মন ও মননের তাগিদে। আমার পাঠক ও বিভিন্ন মহল থেকে প্রশংসা পেয়েছি। এটাকেই আমি পুরস্কারপ্রাপ্তি হিসেবে ধরে নিই।
আমি কোনো গোষ্ঠি বা দলভুক্ত নই। বর্তমান কালচারে এটা আমার অপরাধ। আর এই অপরাধের জেরেই আমার ভালত্ব আমার নিন্দুকেরা সহজে স্বীকার করে নেন না; যদিও তারা জানেন, আমার লেখা গুণে-মানে পরিপূর্ণ। এটা আমার কথা না। বিদগ্ধজন বলে থাকেন।
মোদ্দা বিষয় হলো, সব ছাপিয়ে আমি লিখে চলি। বর্তমানে নানা কারণে আমি শারীরিক ও মানসিক চাপে আছি। এরমধ্যেই ভালো থাকার জন্য নিজের ভেতর থেকে শক্তি সঞ্চয় করি।
আরেকটা বিষয় রয়েছে আমার। একআধটু গান করি। আর আমার গানের তারিফ করার মতো অনেক শ্রোতা-বোদ্ধা আমি পেয়েছি। বিশ^বিদ্যালয় জীবনে নিয়মিত কিংবদন্তি কন্ঠশিল্পী প্রয়াত বশির আহমেদের কাছে ক্লাসিকেল শিখতে যেতাম। ছোটোবেলা থেকেই গান গাইতাম। আর্ট করতাম।
তখন বুঝতে শিখিনি যে, কোনটাকে প্রাধান্য দেবো। এখন বুঝি, গান ও লেখালেখি পাশাপাশি চালিয়ে যেতে পারতাম। ভুলটা তখনই করেছিলাম যখন আমি ওস্তাদজীর ক্লাস শেষ করে বাসায় এসে রেওয়াজ করতাম না। তার বদলে লিখতাম। এমন করেই গানের জগত থেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই।
চাকরি, ক্যানেডায় আগমন, পারিবারিক ঘানি টানা- এসব বিষয় নিয়ে এমনই ঘূর্ণিপাকে পড়েছিলাম যে, লক্ষ্য ঠিক না রাখতে পেরে জীবনটাই জেরবার হয়ে গেল। ছিটকে পড়লাম লেখালেখিতেও; গান থেকে তো আগেই বিরতি নিয়েছিলাম দুয়েকটি ঘরোয়া আসর ছাড়া।
গান-লেখা দুটোই রক্তে ছিল। ক্যানেডায় আমার লেখালেখি জীবনের এক ভিন্ন পর্ব। আর গানেরও আগমনী বার্তা শোনা যাচ্ছিল।
তারপর বিভিন্ন সময় ঢাকায় এসে আমি পুরোপুরি মনোনিবেশ করলাম লেখায়। সেইসাথে গানে। মনে হলো যেন আমি নতুন করে গানের জীবনে প্রবেশ করলাম। ঢাকায় আগমন-অবস্থান আমার জীবনের মোড় বদলানোর একটি সময়। এই বিষয়ে আমি পরের এপিসোডে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব।