অনলাইন ডেস্ক : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে বাজেটের কপি ছেঁড়া বিএনপির ঔদ্ধত্যের নতুন বহিঃপ্রকাশ। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এমন একটি রাজনৈতিক দল, যারা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষকে হত্যা করেছিল। পেট্রলবোমা নিক্ষেপের কর্মসূচি যে রাজনৈতিক দল দেয়, সংসদের সামনে গিয়ে তাদের বাজেটের কপি ছিঁড়ে ফেলা খুব স্বাভাবিক। যে উদ্ধত আচরণ তারা সব সময় করে আসছে, সেটিরই নতুন বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে সংসদের সামনে গিয়ে বাজেটের কপি ছিঁড়ে ফেলা।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যে এবারই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছে তা তো নয়, ১১ বছর ধরে প্রতিবারই তারা বাজেট প্রত্যাখ্যান করছে এবং প্রতিবারেই বলেছে বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য না, জনগণের কল্যাণে আসবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু ১১ বছর ধরে সমস্ত বাজেটই বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাস্তবায়নের হার ৯৭ থেকে ৯৮ শতাংশ। সেই বাজেটগুলো বাস্তবায়নের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের দারিদ্র্য কমে অর্ধেকে নেমেছে, মানুষের মাথাপিছু আয় সাড়ে তিন গুণ বেড়েছে, জিডিপি প্রায় চার গুণ বেড়েছে। দেশ খাদ্যে উদ্বৃত্ত হয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের পথে উন্নীত হয়েছে। এটিই হচ্ছে বাস্তবতা। কিন্তু তারা কোনোবারই বাজেট গ্রহণ করতে পারেনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সেখানে বলেছে, মাত্র এক দিন বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আসলে তা নয়, পুরো বাজেট সেশনেই কিন্তু বাজেটের ওপর বক্তৃতা হয়েছে। তারা নিজেরা বাজেট অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেনি, বাজেট অধিবেশনে যে আলোচনা হয়েছে, সেটিও ঠিকমতো খেয়াল রাখেনি, সে কারণেই তারা এ ধরনের ভুল বক্তব্য দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন সংসদ চালানো সম্ভবপর নয়। পৃথিবীর কোনো দেশে সেটি হচ্ছে না। আমাদের দেশে এখন করোনাভাইরাস প্রায় তুঙ্গে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, গড়ে প্রায় ৪০ জন বা তার বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। এই সময় তো সংসদ প্রতিদিন চালানো সম্ভবপর নয়, এই বাস্তবতা তারা বুঝেও এ ধরনের অসত্য, অপ্রাসঙ্গিক কথাগুলো বলে।

কুয়েতে সাংসদ শহিদ ইসলাম পাপুল আটকের ফলে সেখানে কর্মী রপ্তানি ব্যাহত হবে কি না, জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কুয়েতের তদন্তে সেখানকার সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদদের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে এসেছে। তাদের সম্পৃক্ততা, সহযোগিতা ছাড়া এই কাজগুলো হতো না, সুতরাং তারাও সমভাবে দায়ী। সুতরাং এ ঘটনায় আমাদের শ্রমবাজারে অর্থাৎ কুয়েতে কর্মী রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি না।’

করোনা পরীক্ষার ফি নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে একেবারেই বিনা মূল্যের কারণে অনেক সময় যাঁদের প্রয়োজন নেই, তাঁরাও পরীক্ষা করান। কিন্তু গরিব মানুষ যাতে প্রয়োজনে বিনা মূল্যে পরীক্ষা করাতে পারে, সেটি নিয়ে তার সাথে আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি।’

এর আগে তথ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রামের সল্টগোলায় ৫০ শয্যার বিজিএমইএ কোভিড-১৯ ফিল্ড হাসপাতাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক, প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম ও বোর্ড সদস্যরা উদ্বোধনী সভায় অংশ নেন।