সোনা কান্তি বড়ুয়া : জয় বাংলা। বাঙালির রক্তে রক্তে প্রবহমান বাংলাদেশে আমাদের জগৎ ১৯৭২ সালের সংবিধান! আমরা চাই প্রতিটি সহিংসতা থেমে যাক, শান্তি নেমে আসুক পৃথিবীজুড়ে! জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে আত্মসুখকে জয় করায় কন্কায়েষ্ট অব হ্যাপীনেস! জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে নিজের প্রাণদান করতে প্রস্তুত ছিলেন। জীবনে আত্মসুখকে জয় করায় কন্কায়েষ্ট অব হ্যাপীনেস! মানবতার কল্যাণে নিবেদিত বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ এবং আত্মসুখকে জয় করার কথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর লেখা “অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে” ও BRITISH PHILOSOPHER বাট্রেন্ড রাসেল তাঁর লেখা “কন্কায়েষ্ট অব হ্যাপীনেস” নামক বইতে সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র উপর পাঠচক্র ও বই পাঠ প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন। সর্ব ধর্মে হারানো মানবতার খোঁজে দীপ জ্বেলে যাই! মানবাধিকার বাদ দিয়ে ধর্ম হয়, না!
যে কোন ধর্মের নামে মানব সন্তান হত্যা ও রক্তপাত ধর্ম নয়। পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই জনসমুদ্রে বিনা অস্ত্রে অভিনব অহিংসার বাণী দিয়ে “বাংলাদেশের স্বাধীনতা” ঘোষণা করেছিলেন; এবং পালিয়ে না গিয়ে নব রসে ( ১. আদি ২. রৌদ্র ৩. বীভৎস ৪. ভয়ানক ৫. বীর ৬. হাস্য ৭. কারুণ্য. ৮. অদ্ভূত ও ৯. শান্ত) স্বাধীনতার মহা কাব্য রচনা করতে শত্রুর কারাগারে বসে দেশের স্বাধীনতার জন্যে নিজের প্রাণদান করতে প্রস্তুত ছিলেন। এমন অকুতোভয় বঙ্গবন্ধুর মতো মহাবীর কে কবে দেখেছেন? পাল রাজত্বের পর আগামি দিনের ইতিহাসে “বঙ্গবন্ধু অবদান” কাহিনী হয়ে বিজয় সিংহ এর ‘সিংহল অবদান’ এর পাশে সগৌরবে দেদীপ্যমান হয়ে থাকবে। অহিংসা মানব জাতির পরম আশ্রয়। বিগত জোট সরকারের ধর্ম ও রাজনীতির অপপ্রয়োগের কারনে আজ বাংলাদেশে জনতা একটি বিপন্ন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। সময় এসেছে সা¤প্রদায়িক ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার।
বাংলাদেশের মানুষের জন গণ মন অধিনায়ক বঙ্গবন্ধু,
জয় হে বাংলার মর্মভেদী দেবদূত শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধুর সাধনা ছিল বাংলাদেশে জাতীয় জীবনে স্বাধীনতার আলো জ্বালাতে
দুষ্টের দল আঁধারের যাত্রী বি এন পি মার্কা রাজাকার মিশে গেছে জামায়তে।
“এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম” বজ্রযোগীনির বজ্রকন্ঠে বঙ্গবন্ধুর দৃষ্ঠিদান
“এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অমর অবদান।
বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ বীর পুরুষ সর্বকালের ইতিহাস প্রধান
জয় হে, জয় স্বাধীনতার বীর পুরুষ! করে গেলে শতাব্দীর অগ্নিবান।
২০২৪ সালের ১৫ আগষ্ট সেনা প্রশাসনে সরকারের পৈশাচিক উল্লাসনৃত্যের আমলে এবং বিগত খালেদা- / মইত্যা রাজাকার জোট সরকার আইন করে জাতির পিতার জাতীয় শোক দিবস সরকারীভাবে পালন করা বন্ধ করে দেন। জাতীয় স্মৃতির অমরাবতীতে দেশপ্রেমের ঝর্ণাধারায় স্নাত বঙ্গবন্ধু। জনতার সাধনালব্ধ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধুর দান অতূলনীয়। সাঁঝের যমুনা, মেঘনা, বহ্ম্রাপুত্র, বুড়ীগঙ্গা, কর্নফুলী ও সুরমার তীর সহ বাংলাদেশ জুড়ে জনতা একতাবদ্ধ হয়ে আজ ও বঙ্গবন্ধুর জন্য কাঁদে। অনেক বছর পর বাংলাদেশ সরকার দেশের জনতার সাথে বঙ্গবন্ধুর গভীর দেশপ্রেমের কাছে অবনত মস্তকে নতি স্বীকার করেছেন। বিগত সেনা শাসকগণ সহ জোট সরকার (২০০১ -২০০৬) কেন যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানানোর বিরুদ্ধে আইন করেছিলেন তা আজ জনতা প্রত্যাখ্যান করেছেন। “এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন প্রাণ, / মরনে তাহাই তুমি করে গেলে দান।”
প্রত্যেক মানুষের একটা নিজস্ব ভুবন বা দেশ আছে। মানুষ নিজের ভুবনে নিজেই সম্রাট। সেই ভুবনে বিচরণকারী অন্যান্য বাসিন্দারা পার্শ্ব চরিত্রমাত্র। বাংলাদেশে কাল্পনিক আল্লাহ’র ইসলাম ধর্মের নাম দিয়ে দিনকে রাত করা যায় ! বিগত ২০২৪ সালের ৬ই আগষ্ট বাংলাদেশে সেনা প্রশাসনে হেফাজতে ইসলামের গুন্ডারা বাঙালি জাতির বষপের ঘরে আগুন দিল / – এর চেয়ে হৃদয়হীন, এর চেয়ে নির্দয়, এর চেয়ে নির্মম সভ্যতা ইতিহাসে আর সৃষ্টি হয়নি। এ সভ্যতা, মানুষের প্রেম ভালবাসা, তার মায়া মমতা, প্রীতি, বন্ধুত্ব, যা কিছু সুন্দর, সুকুমার তাকে পঙ্গু করে দেয়, তাকে শুষ্ক করে দেয়, পণ্যে পরিণত করে। প্রত্যেকের উচিত কাল্পনিক আল্লাহ বা ঈশ্বরের পরিবর্তে বিজ্ঞানের শরণে এসে বিজ্ঞানকে প্রসারিত করা। আপদ-বিপদে একমাত্র হাসপাতাল ও ডাক্তারই হল ভরসা। হাসপাতাল, ঔষধ, ডাক্তার প্রভৃতি আমাদেরকে ঈশ্বর, আল্লাহ বা গড কর্তৃক প্রদত্ত হয়নি, – বিজ্ঞানই দিয়েছে।
বিগত ৫ই মে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলাম ঢাকার রাজপথে নেমে ধর্ম রক্ষার নামে পুলিশ মেরে দলে দলে শহীদ হবার নাটক হল কেন? সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে! ঢাকার রাজপথে বইয়ের দোকানে হেফাজতে ইসলামের গুন্ডারা পবিত্র কুরআন শরীফে আগুন দিল। মুক্তিযুদ্ধ গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের মূল নকশা পাকিস্তানের রাও ফরমান আলীর। ঢাকার পতনের পর গভর্নর হাউসে (বর্তমানে বঙ্গভবন) রাও ফরমান আলীর একটি ডায়েরি পাওয়া যায়। সেখানে অনেক নিহত ও নিখোঁজ বুদ্ধিজীবীর নাম লেখা ছিল। তবে অধ্যাপক মুনতাসির মামুন ও মহিউদ্দিন আহমেদ যৌথভাবে ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানে গিয়ে রাও ফরমান আলীর এক সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। ওই সাক্ষাৎকারের বিবরণ পরবর্তীতে ছাপা হয়েছে ‘সেই সব পাকিস্তানী’ বইতে। সাক্ষাৎকারে বুদ্ধিজীবী নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করেন রাও ফরমান।
ধর্মের নামে যে পশু আমাদের অন্তরে প্রবেশ করেছে সেই পশুকে মানবতার অস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করে মানবতার দেশ গড়ে তুলতে হবে। অহিংসার মহব্বতই মানবিক কর্মযজ্ঞ। অপেক্ষার সময় ফুরিয়ে গেছে। বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াসহ জামাত মার্কা চার জোটে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী পাশবিক শক্তি বিরাজমান। বাংলাদেশে ইসলামের ধর্মের নাম দিয়ে দিনকে রাত এবং রাতকে দিন করা যায়! জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজটিতে মেনে নিতে পারি না পরাজয়। বাঙালির রক্তে রক্তে বঙ্গবন্ধু প্রবহমান! তবে জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমাজ গড়ে তোলার কাজটি সহজ নয়। এ জন্য আমাদের আরও অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। আমরা যখন আত্মত্যাগ করতে শিখেছি; যখন আমাদের রয়েছে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের স্রোতধারা; যখন আমাদের সামনে রয়েছে জগন্নাথ-সোহেলের রক্তের ঋণ, তখন আমাদের এই প্রজন্মকে কেউ বিপথে নিয়ে যেতে পারবে না। আমরা এসব শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দিতে পারি না। মেনে নিতে পারি নাপরাজয়।” ১৯৭২ সালের সংবিধান বাঙালির রক্তে রক্তে প্রবহমানে আমাদের জগৎ! সেনা প্রশাসনের রাজনীতিতে গভীর যড়যন্ত্র বুদ্ধিজীবীর অবিশ্বাস!
ধর্মের হাঁড়িতে রাজনীতির মজা প্রবহমান! একদা ইসলামের নাম ব্যবহার করে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশে বাংলা ভাষা বন্ধ করে দিল। ধর্ম সর্বশক্তিমান। ইসলামের ধর্মের নাম দিয়ে দিনকে রাত এবং রাতকে দিন করা যায়। আইন ও রাষ্ঠ্রের নৈতিক শৃঙ্খলা দিয়ে ধর্মের বিচার হয়। ধর্মের হাঁড়িতে রাজনীতির মজাটাই আলাদা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চের ভাষণে ঘোষণা করেন: “কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় ২৩ বৎসরের করুণ ইতিহাস, বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। ২৩ বৎসরের ইতিহাস মুমূর্ষু নর-নারীর আর্তনাদের ইতিহাস। বাংলার ইতিহাস- এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আয়ুব খান মার্শাল ল’ জারি করে ১০ বছর পর্যন- আমাদের গোলাম করে রেখেছে। ১৯৬৬ সালে ৬-দফা আন্দোলনে ৭ই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯ এর আন্দোলনে আয়ুব খানের পতন হওয়ার পরে যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন, তিনি বললেন, দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন, গনতন্ত্র দেবেন – আমরা মেনে নিলাম। তারপরে অনেক ইতিহাস হয়ে গেলো, নির্বাচন হলো।”
সভ্যতার ইতিহাসে মানবজাতি অন্যায়কে পরাভ‚ত করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছে, তেমনি অসত্যকে পরাভ‚ত করে সত্য, অকল্যাণকে পরাভ‚ত করে কল্যাণময় সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছে। এ প্রক্রিয়ায় মূর্খতা ও অজ্ঞতাকে পরাভ‚ত করেই জ্ঞানকে জয়ী হতে হয়েছে। মানবজাতি আদিম যুগ থেকেই প্রকৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে পর্যায়ক্রমে নিজেদের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। প্রকৃতিতেই সৃষ্টি এবং প্রকৃতিতেই বেড়ে উঠেছে বিধায় অন্যান্য প্রাণিক‚লের মতোই মানবপ্রজাতিও বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতি নির্ভরশীল ছিল। ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য গাছের ফলমূল, ক্ষুদ্র প্রাণী, পশুপাখি, পানি, মাছসহ জলজপ্রাণী আহরণ ও ভক্ষণই ছিল আদি মানুষের প্রধান কাজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু “কন্কায়েষ্ট অব হ্যাপীনেস” ১৯৭২ সালের সংবিধান বাঙালির রক্তে রক্তে প্রবহমান!
বাঙালি জাতির পিতা বিশ্বমানবতায় উদ্ভাসিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন, এবং ২০২৪ সালের সেনা প্রশাসনে (৭১-এর) মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তিই ২০২৪ সালের ৬ই আগষ্ট বাঙালি জাতির বষপের ঘরে আগুন দিল এর চেয়ে হৃদয়হীন, এর চেয়ে নির্দয়, এর চেয়ে নির্মম সভ্যতা ইতিহাসে আর সৃষ্টি হয়নি। এ সভ্যতা, মানুষের প্রেম ভালবাসা, তার মায়া মমতা, প্রীতি, বন্ধুত্ব, যা কিছু সুন্দর, সুকুমার তাকে পঙ্গু করে দেয়, তাকে শুষ্ক করে দেয়, পণ্যে পরিণত করে।”
বাংলাদেশে হারানো মানবতার খোঁজে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের স্রোতধারার; দীপ জ্বেলে যাই! মানবাধিকার বাদ দিয়ে ধর্ম রাজনীতি হয়, নষ! ধর্মের ছদ্মবেশে দুর্নীতির মাফিয়াচক্র বাংলাদেশে জঙ্গিবাদীদের ধর্ম বিদ্বেষের অভিশপ্ত রাজনীতি!” জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশে সমাজ গড়ে তোলার কাজটি সহজ নয়। এ জন্য আমাদের আরও অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। আমরা যখন আত্মত্যাগ করতে শিখেছি; যখন আমাদের রয়েছে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের স্রোতধারা; যখন আমাদের সামনে রয়েছে জগন্নাথ-সোহেলের রক্তের ঋণ, তখন আমাদের এই প্রজন্মকে কেউ বিপথে নিয়ে যেতে পারবে না। আমরা এসব শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দিতে পারি না। মেনে নিতে পারি না পরাজয়।”
– (জনাব মহসিনুল হক)!
কবি মোহিনী চৌধুরীর কথায়:
মুক্তির মন্দির সোপানতলে
কত প্রাণ হল বলিদান,
লেখা আছে অশ্রæজলে।।
কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা
বন্দীশালার ওই শিকল ভাঙ্গা,
তারা কি ফিরিবে আজ
তারা কি ফিরিবে আজ সু-প্রভাতে,
যত তরুণ অরুণ গেছে অস্তাচলে।
মুক্তির মন্দির সোপানতলে
কত প্রাণ হল বলিদান,
লেখা আছে অশ্রুজলে।”
মানবতার কল্যাণে নিবেদিত বাংলাদেশ এবং বাঙালি সংস্কৃতির মূল কথা হলো বিশ্বমানবতা, অসা¤প্রদায়িকতা ও স¤প্রীতি। ‘আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী ভুসুকু আজ আলোকপ্রাপ্ত সিদ্ধপুরুষ বা বাঙালি হলেন” থেকে ঐতিহাসিক’ বাঙালি শব্দের অভ‚তপূর্ব সংযোজন হয়েছিল। স¤প্রতি টরন্টোর বাংলাদেশী সাপ্তাহিক আজকাল (১১ আগষ্ট, ২০০৯) পত্রিকার ৩০ পৃষ্ঠায় ইংরেজি সংবাদে আমরা পড়েছি, বৌদ্ধধর্ম পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মের পুরস্কার লাভ করেছেন।” এবং আগামীর বাংলাদেশ হবে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত একটি দেশ।
জনাব মহসিনুল হক: (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চাঁদপুর, SAMAKAL, 13 NOVEMBER 2023), লিখেছেন, “আমরা চাই বাংলাদেশের তরুণদের একদিকে থাকবে বিশ্বাস, আরেকদিকে থাকবে যুক্তি ও বিবেক। ধর্মের জিগির তুলে মুক্তচিন্তা বা বিশ্বাসকে ভুল পথে প্রবাহিত করে স্বার্থোদ্ধারে দেশ-জাতির জন্য ক্ষতিকর কাজে তাদের কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ধর্ম হবে এক আলোকবর্তিকা। সমাজে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় মানুষকে উজ্জীবিত করে তোলার মূলমন্ত্র হবে এই ধর্ম। সবার ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক জীবন হবে নৈতিকতা, মূল্যবোধ, সংস্কার ও আদর্শ দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত। সেখানে কেউ কারও বিশ্বাসের প্রতি অবজ্ঞা হেতু কুৎসিত আক্রমণ করবে না।
এই প্রজন্ম স্বপ্ন দেখে, আগামীর বাংলাদেশ হবে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত একটি দেশ। এই বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের মধ্যে থাকবে গভীর দেশপ্রেম। তারা হবে এই দেশ ও জাতির সম্পদের রক্ষক, সৎ ও আদর্শ নাগরিক। সেই বাংলাদেশে শুধু শাস্তির ভয়ে নয়, বরং আত্মার তাগিদেই মানুষ যাবতীয় অপরাধ থেকে নিবৃত্ত থাকবে। প্রতিটি জীবন ও সম্পদের থাকবে পূর্ণ নিরাপত্তা। এ দেশে নারীকে কেউ কখনও অসম্মান করার কথা কল্পনাতেও ভাববে না। স্কুলফেরত ছোট্ট শিশুটি সড়ক কিংবা ফুটপাত ধরে নিশ্চিন্তে পথ হেঁটে পৌঁছে যাবে নিজ বাড়িতে।
এই প্রজন্ম এখন মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে, জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী ও তাদের সমর্থকরা হিংসা ও নিপীড়নের মাধ্যমে যে সমাজ গড়ে তুলতে চায়, সেখানে আমাদের মানবিক বোধ বিপন্ন হতে বাধ্য। বিচারক জগন্নাথ-সোহেলের মৃত্যু দিবসে এই প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি হয়ে স্পষ্ট বলতে চাই– আমরা বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী, প্রগতিশীল, সুকুমারবৃত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা চাই বাংলাদেশ হবে সারাবিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের চিন্তা-চর্চার প্রাণকেন্দ্র। আগামীর বাংলাদেশ হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আলোকিত বাংলাদেশ।”
উক্ত দু:খভরাক্রান্ত পরিস্থিতিতে অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে মনে পড়ে স্বাধীনতার কবি শামসুর রাহমানের একটি বিখ্যাত কবিতা এবং পাঠক উক্ত কবিতার মধ্যে খুঁজে পাবেন ফেলে আসা জোট সরকারের বাস্তবচিত্র:
‘হে পাক-পরওয়ার দিগার, হে বিশ্বপালক,
আপনি আমারে লহমায়,
একজন তুখোড় রাজাকার করে দিন।
তেলা মাথায় তেল ঢালতে পারবো অবিরল,
গরিবের গরিবী কায়েম চিরদিন আর
মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ের চামড়া দিয়ে
ডুগডুগি বানিয়ে নেচে বেড়াবো দিগি¦দিগ
আর সবার নাকের তলায়
একনিষ্ঠ ঘুনপোকার মতো অহর্নিশ
কুড়ে কুড়ে খাবো রাষ্ট্রের কাঠামো অবকাঠামো’
আমরা কি মানুষ না আমাদেরকে ধর্মের নামে অধর্মের ভ‚তে পেয়েছে। বাংলাদেশে অর্পিত সম্পত্তি বা শত্রু সম্পত্তির অর্থ কি? মানুষ জাতি বা আশরাফুল মাকলুকাত শয়তানের গোলাম হয়ে পাকিস্তানের লাল মসজিদ রক্ত গঙ্গায় ভাসানোর দরকার ছিল না। ধর্মের নামে নর নারী হত্যা কোন ধর্মেরই পবিত্র বাণী নয়।ৈ ্বজ্ঞানিকগণ গভীর গবেষনা করার পর বুঝতে পারলেন যে, মানুষ প্রকৃতির সৃষ্ঠি। নদী ও প্রকৃতি ধ্বংস হলে মানুষ ও ধ্বংস হবে। অমানবিক ধর্মের এতো উলঙ্গ দর্প কেন? বিশ্বপ্রেম ও অহিংসা ব্রতে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে মানুষকে বাঁচতে হবে। জামাত ও যুদ্ধাপরাধীরা রাষ্ঠ্রদ্রোহী হয়ে ইসলামকে কলঙ্কিত করেছে। আজকের বুড়িগঙ্গার পানির মতো জামাত, মুজাহিদীন সন্ত্রাসী ও যুদ্ধাপরাধীদের ধর্ম পুরোপুরি বিষ এবং জামাতকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। ঘর পোষে চোর আর ও কহে জোর এ বড় কুটিনী ঘাগী। জামাতের ধর্ম নামক পাথর বাটির ‘শানে নযুল।
আজও বাঙালি বিবেক প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে। বিশ্বাসঘাতক আমাদের বিশ্বাসের ছায়ায় ছায়ায় ঘুরে। সামরিক শাসকগণের দুর্নীতির মাফিয়াচক্র থেকে বাঁচতে বঞ্চিত সর্বহারা মানুষ তাই আশ্রয় খুঁজেছে শেখ মুজিবের ভাষণে এবং বুদ্ধিজীবিদের লেখার মাধ্যমে। ৭ই মার্চ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অমর স্বাধীনতা মহাকাব্যের মহাকবি বঙ্গবন্ধু ঢাকার রেসকোর্সের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মহাজনসমুদ্রে জনগণমনের মুক্তির মঞ্চে দাঁড়িয়ে জলদ গম্ভীর স্বরে ঘোষণা করেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” স্থিতপ্রজ্ঞ শেখমুজিবুর রহমানের সুখ্যাতি ছিল – দেশ জুড়ে, বাংলার দূরতম প্রান্ত থেকে জনতা এসেছিলেন “বাংলাদেশ স্বাধীনতার ঘোষনা”ঐতিহাসিক প্রথম শুভক্ষণ অনুভব ও অবলোকন করতে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্চে বঞ্চনা, আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া হচ্চে লোভ। যে হেরে ছিল তার নাম হলো বিগত জোট সরকার (২০০১- ২০০৬)। একাত্তরে যে জামায়াত (জামাত) বাংলাদেশ নামক রাষ্ঠ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছিল, আজ সেই জামায়াতের আমীর মইত্যা রাজাকার খালেদা জিয়ার পরম শ্রদ্ধাভাজন বান্দা এবং তাঁর আমলে মন্ত্রী ছিলেন।
জামাত দ্বারা বাঙালী সমাজ শোষিত, নিপীড়িত, লাঞ্ছিত ও পাকি দালারদের দ্বারা অপমানিতের সমাজ। দেশবাসীরা নৈরাশ্য, নৈরাজ্য, অভাব ও দারিদ্র সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকার জন্য দায়ী আমাদের শাসক ও রাষ্ঠ্রক্ষমতার দুর্নীতির মাফিয়াচক্র। দুর্নীতি বধে রাষ্ঠ্রক্ষমতার পরাজয় হল কেন? বাংলাদেশে প্রতারক রাজনীতিবীদ ও আমলাগণের চরিত্র কয়লার মত শত ধু’লে ও ময়লা যায় না। প্রতারণার রাজনীতিতে দেশ ও জাতি স্বাধীনতায় অমৃতের সাধ ভোগ করতে করতে ও ভোগ করতে পারেন নি। জামাত নকল মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বানিয়ে আসল মুক্তিযোদ্ধাকে লাতি মারে। ছিঃ ! জামাত ছিঃ! কারন জামাত ও বিএনপি
“ইমানে আমানে সালাতে সিয়ামে
সাচ্ছা কোমল বান্দা
তারা যদি কয় মিছা অতিশয়;
জনমনে জাগে ধান্ধা ।”
বিগত দুর্নীতিবাজ জোট সরকারের পৈশাচিক উল্লাসনৃত্যের আমলে ৫০০ বোমার প্রতিধ্বনিতে আলকায়দার হায়নারা চট্টগ্রামের গহন বনে প্রবেশ করে কোথায় হারিয়ে গেল? খালেদা-নিযামী সব জানেন কিন্তু না জানার ভান করে আছেন। উক্ত অভিশপ্ত প্রতারক জোট সরকারই বিরাজমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার জন্য দায়ী এবং দেশ ও জাতির কত যে সর্বনাশ করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও শ্লীলতাহানির কারনে আজ মুক্তিযোদ্ধাদের ঘরে ভাত নেই।
আমার দেশ, আমার জন্মভ‚মি আমার কাছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থভ‚মি। “অশোক যাহার কীর্তি গাইল. / হিমালয় থেকে জলধি শেষ।” সপ্তম শতাব্দীতে মহাচীনের পরিব্রাজক হিউয়েন সাং বাংলাদেশের পাহারপুর ও বগুড়ায় এসে আমার দেশের মাটিতে অবনত মস্তকে আমাদের আলোকিত প্রাচীন ঐতিহ্য ও ধর্মকে পূজা করেছেন। বলে গেলেন যে বাংলাদেশে সাধনার ধন অহিংসা পরম কমের্, বাংলাদেশ বিশ্বমানবতার তীর্থভ‚মি। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায়, “বাঙালি অতীশ লভিল গিরি তুষারে ভয়ঙ্কর,/ তিব্বতে জ্বালিল জ্ঞানের প্রদীপ বাঙালি দীপংকর।” বাঙালি জাতি জ্ঞানের প্রদীপের আলোকে পৃথিবীর বুকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” প্রতিষ্ঠা করে প্রমান করে দিয়েছেন, বিশ্বমানবতার সভায় মোরা বাংলা ভাষার জন্যে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের শহীদ মিনার হৃদয় বাংলায় সর্বদা বিরাজমান।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি !