অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের মানুষদের ভীষণ ভীষণ অকৃতজ্ঞ বলে অভিহিত করেছেন তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়। ভারতের জি নেটওয়ার্কের ইংরেজি ভাষার সংবাদ মাধ্যম উইওনকে একটি বিশেষ ফোন সাক্ষাৎকারে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তার মায়ের বিরুদ্ধে এটাসেটা নিয়ে সমালোচনা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

জয় বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষদের খুবই অকৃতজ্ঞ হতে দেখছি। তারা ভীষণ ভীষণ অকৃতজ্ঞ এবং তারা যে নেতৃত্ব পাবে, তা তাদের প্রাপ্য।’ তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার তিনবার এর মধ্য দিয়ে গেছে। এর পর আমরা আর এর মধ্যে নেই। বাংলাদেশকে বাঁচাতে বাঁচাতে আমরা ক্লান্ত। বাংলাদেশ এখন নিজের সমস্যা নিজেই সামলাতে পারে। এটা আর আমাদের সমস্যা নয়।’
শেখ হাসিনার ভারতে আসার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি অন্তর্র্বতী সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়ার একদিন পর জয় এই মন্তব্য করেন। হাসিনা সম্পর্কে জয় বলেন, ‘তিনি ভালো আছেন কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তিনি খুবই হতাশাগ্রস্ত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তার মায়ের বিরুদ্ধে এটাসেটা নিয়ে সমালোচনা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ এখন পরবর্তী পাকিস্তান হতে যাচ্ছে।’

জয় বলেন, ‘হাসিনা ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, যা দেশের স্থিতিশীলতা অবলোকন করেছিল, এই অঞ্চলের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ।’

জয় বলেন, ‘আমি বলতে চাচ্ছি যে আপনি যদি এর নৈরাজ্যের দিকে তাকান, তবে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার কাছে কোনও আইনের শাসন নেই, আপনার জনতা রাস্তায় বাড়িঘর ভাংচুর করছে এবং আমি এখন যা শুনছি, তারা সংখ্যালঘু এবং হিন্দু মন্দিরগুলিতে আক্রমণ করছে। তাই বাংলাদেশ আসলে নৈরাজ্যের মধ্যে রয়েছে।’

জয় আরও বলেন, ‘আমার মা দেশটিকে একটি গরিব দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন এবং ইতিহাসের বইয়ে শেখ হাসিনার শাসনামল চিরকাল বাংলাদেশের স্বর্ণযুগ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ জয় বলেন, ‘সারা দেশে সহিংসতা চলছে সামরিক বাহিনী কি করছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি কিছুই করছে না। তাদের এখন কোনও ক্ষমতা নেই।’

জয় বলেন, ‘তার বয়স ৭৭ বছর, এটাই ছিল তার শেষ মেয়াদ। সে এমনিতেই এরপর অবসরে যাচ্ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা এখন আমাদের আওয়ামী লীগ নেতাদের শিকার করছে। এবং অন্তর্র্বতীকালীন সরকার এমনকি আওয়ামী লীগকে অন্তর্ভুক্ত করছেনা। তাহলে আমরা কেন মাথাব্যাথা করব?’
জয় এও বলেন, ‘ডিজিটালাইজেশনের দ্বারা আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একবিংশ শতাব্দীতে নিয়ে আসতে আমি নিজেই সাহায্য করেছি। বিনা পারিশ্রমিকে আমি নিজেই ভীষণ পরিশ্রম করেছি।

আমি বাংলাদেশ সরকারের সম্মানসূচক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছি, বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে একটি পয়সাও নিইনি এবং আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পেরেছি।’

এদিকে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে দিল্লির কাছে একটি বিমান ঘাঁটিতে অবতরণের পর ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দয়াল তার সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব ভারতের প্রতিটি বিমান ঘাঁটি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সূত্র: উইওন।