অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ভাষণে ছিল আক্রমণাত্মক মন্তব্য ও গাজা যুদ্ধ নিয়ে নানা দাবি। নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের প্রশংসা করেন। তবে কংগ্রেসে তাঁর ভাষণের বিরোধিতা করেছেন বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা। এ ছাড়া মার্কিন ক্যাপিটলের বাইরে তাঁর বিরুদ্ধে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কংগ্রেসে নেতানিয়াহু যে ভাষণ দিয়েছেন তাতে আশাহত হয়েছেন ডেমোক্রেটিক দলের আইনপ্রণেতাদের অনেকে। শুধু তারাই নন, হাজার হাজার মার্কিন নাগরিককে হতাশ করেছেন নেতানিয়াহু। কেননা, তারা আশা করেছিলেন, নেতানিয়াহু তাঁর ভাষণে গত ৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসানের ক্ষেত্রে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ভাষণ দেবেন। কিন্তু তিনি তা না করায় ক্যাপিটল হলের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মার্কিন নাগরিক। এ ছাড়া কংগ্রেসের ভেতরেও ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের বিরোধিতার মুখে পড়েন তিনি। ভাষণে নেতানিয়াহু গত ৯ মাসের আগ্রাসনকে ‘বিজয়’ হিসেবে চিহ্নিত করার পর অনেকেই তাঁর বক্তব্য বয়কট করেছেন।

মার্কিন কংগ্রেসের ভাষণে নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা শুধু নিজেদের রক্ষা করছি না। আমরা আপনাদেরও রক্ষা করছি, আমাদের শত্রু আপনাদেরও শত্রু, আমাদের লড়াই আপনাদের লড়াই এবং আমাদের বিজয় আপনাদের বিজয়।

এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ বারবারই টেনেছেন।

নেতানিয়াহুর এ ভাষণকে সাধুবাদ জানিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি। তবে তাঁর বক্তব্য কংগ্রেসের ভেতরে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের কারও কারও মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

এদিকে কংগ্রেসের বাইরেও জড়ো হওয়া জনতা নেতানিয়াহুর বক্তব্যের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের দমনে মার্কিন পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। বিক্ষোভকারীদের ওপর মরিচের স্প্রে ব্যবহার করে পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ‘নেতানিয়াহু আপনি পালাতে পারবেন না’ বলে স্লোগান দিতে শোনা যায়। ওয়াশিংটনের ডাউনটাউন এলাকার সড়কগুলোতে বিক্ষোভকারীদের উপস্থিতিতে জটলার সৃষ্টি হয়। তবে নিউইয়র্ক পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাদের ওপর চড়াও হয়েছিল বলে গার্ডিয়ান তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

কংগ্রেস হাউসের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিসহ কংগ্রেসের কয়েক ডজন ডেমোক্র্যাট সদস্য গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তারা নেতানিয়াহুর ভাষণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

কংগ্রেসের আরেক আইনপ্রণেতা বার্নি স্যান্ডার্স নেতানিয়াহুর ভাষণের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটাই প্রথম ঘটনা যেখানে একজন ‘যুদ্ধাপরাধীকে’ কংগ্রেসে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে তাঁর ভাষণকে মিথ্যায় ভরা বলেছে হামাস। হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি বলেছেন, নেতানিয়াহু মার্কিন কংগ্রেসে যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে তিনি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হতে চান না বলে মনে হয়েছে। হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা আহমাদ আব্দেল হাদি বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণের বিষয়ে ফিলিস্তিনি জাতি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।