সোনা কান্তি বড়ুয়া : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শাহাদাত বার্ষিকীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়নে জাতিসংঘের আহ্বান জাতিসংঘে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন (হিল ভয়েস, ১৮ আগস্ট ২০২২)! মৌলবাদী ও জুম্ম বিদ্বেষী কিছু ইসলামী গোষ্ঠী কর্তৃক সুপরিকল্পিতভাবে জুম্মদেরকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কার্যক্রম জোরদার হয়েছে। ফলে বিগত ২৩ বছরেও পার্বত্য সমস্যার কাক্সিক্ষত সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, সমস্যা আরও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটা চুক্তি-পূর্ব অবস্থায় পদার্পণ করেছে। বাংলাদেশে রাজনীতির ইসলামীকরণ পার্বত্য চট্টগ্রামেকে গ্রাস করে ফেলেছে। মুক্তিযুদ্ধেপরাজিত শক্তি ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠী কোরাণের উপর পদচিহ্ন দিয়ে ইসলাম ধর্ম অবমাননা করেছে! ভূপেন হাজারিকার একটি গানের লাইনে বলা হয়েছে—‘মানুষ যদি সে না হয় মানুষ, দানব কখনো হয় না মানুষ। যদি দানব কখনো-বা হয় মানুষ, লজ্জা কি তুমি পাবে না?’ আসলে এই সকল মানুষরূপী অমানুষদের লজ্জা বলে কিছু নাই। মুক্তিযুদ্ধেপরাজিত শক্তি সা¤প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে!
অনেক আগে থেকেই মুক্তিযুদ্ধেপরাজিত শক্তি ওঁৎ পেতে ছিল কীভাবে একাত্তরের বিজয়কে নস্যাৎ করা এবং দেশকে আবার পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে আনা যায়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়! ইসলাম ধর্ম অবমাননা করে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ও পরিবারের প্রায় সকল সদস্যদের শাহাদাত বরণের দিন ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সাল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর সংখ্যালঘু নির্যাতন হিন্দু ও বৌদ্ধ হত্যা করেছে । অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তা পাল্টে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে ছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। আর এতে ইন্ধন দেয় পাকিস্তান। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ইসলামী প্রজাতন্ত্র না হওয়া হতাশ হয় পাকিস্তান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী জঙ্গি মৌলবাদী ও সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাস রাজাকার ও জামায়াতে ইসলামী! এবং ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যায় বাংলাদেশের সামরিক প্রশাসকগন রাষ্ঠ্রদ্রোহী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধেপরাজিত শক্তি কর্তৃক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর হিন্দু বৌদ্ধ ও জুম্ম আদিবাসীদের নির্যাতন শুরু করেছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের মূল চক্রী অনৈতিক কর্মে প্রবৃত্ত খন্দকার মোশতাক, জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদ- এই তিন শাসক মিলে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিকে পাকিস্তানিকরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায়। ’৭৫-পরবর্তী ছয় বছর বিদেশে বিপন্ন জীবন অতিক্রম করে স্বদেশের মাটিতে ফিরে এসে বাঙালিকে নতুন করে জাগিয়ে তোলেন। ইচ্ছাশক্তির নবউত্থান ঘটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আমাদের অন্তরের সকল ক্লেদ, কালিমা, হিংসা-দ্বেষ দূর হয়ে যাক। আমাদের জীবন-মরণ, নামাজ ও কোরবানি- সকল কিছুই এক আল্লাহর জন্য নিবেদিত হউক। ত্যাগ ও একনিষ্ঠতার শিক্ষাই চারিদিকে ছড়াইয়া পড়ুক।
১৭ আগস্ট ২০২২-এ জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, “আমি সহিংসতা বা জমি জবরদখল থেকে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বিশেষ করে হিন্দু এবং আদিবাসীদের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বারোপের ওপর জোর দিয়েছি। ২৫ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি সম্পাদনা করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্রমাগত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি এবং বেসামরিকীকরণের প্রয়োজনীয়তার সাথে স্বার্থে, আমি শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং স্বাধীন পক্ষগুলোকে সেই এলাকা পরিদর্শনের জন্য অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছি।” পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের আহ্বান জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাচেলেটের!
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্বাধীন পক্ষগুলোর জন্য অবাধ প্রবেশাধিকারের দোয়ার খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন (হিল ভয়েস, ১৮ আগস্ট ২০২২, আন্তর্জাতিক ডেস্)!
বাংলাদেশে সরকারি সফর শেষে মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান।
১৭ আগস্ট ২০২২-এ জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, “আমি সহিংসতা বা জমি জবরদখল থেকে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বিশেষ করে হিন্দু এবং আদিবাসীদের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বারোপের ওপর জোর দিয়েছি। ২৫ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি সম্পাদনা করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্রমাগত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি এবং বেসামরিকীকরণের প্রয়োজনীয়তার সাথে স্বার্থে, আমি শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং স্বাধীন পক্ষগুলোকে সেই এলাকা পরিদর্শনের জন্য অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছি।”
মিশেল ব্যাচেলেট আরও বলেন, মানবাধিকার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সংবিধান, আইন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের একটি দৃঢ? কাঠামো রয়েছে। বাংলাদেশ হচ্ছে জাতিসংঘের সকল মৌলিক মানবাধিকার আন্তর্জাতিক চুক্তি/ আইনের অনুস্বাক্ষরকারী পক্ষ। তবে এখনো জোরজবরদস্তি অন্তর্ধান থেকে সকল ব্যক্তিদের সুরক্ষামূলক আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষর করেনি। তিনি এই কনভেনশনকে অনুস্বাক্ষরের জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন।
স্বল্প-মেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী উভয় প্রকার জোরপূর্বক অন্তর্ধানের ক্ষেত্রে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া ও বিচারিক সুরক্ষার অভাব সম্পর্কে ক্রমাগত ও উদ্বেগজনক অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে তদন্তে অগ্রগতির অভাব এবং ন্যায়বিচারে অন্যান্য বাধার কারণে দীর্ঘস্থায়ী হতাশার প্রেক্ষিতে, তিনি সরকারকে একটি স্বাধীন ও বিশেষ কর্মব্যবস্থা প্রবর্তন করতে উৎসাহিত করেছেন যা বলপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অভিযোগের তদন্ত করার ক্ষেত্রে ভিকটিম, তাদের পরিবার এবং সুশীল সমাজের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
“আন্তর্জাতিক মানদন্ডের সাথে সঙ্গতি রেখে কীভাবে এই ধরনের কমিটি গঠনের পরিকল্পনা করা যায় সে বিষয়ে আমার অফিস পরামর্শ প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে” বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
মিশেল ব্যাচেলেট আরও জোর দিয়েছিলেন যে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ইউনিফর্মধারী কর্মীদের সবচেয়ে বড় যোগানদার হিসেবে, বাংলাদেশের উচিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক মানবাধিকার যাচাইয়ের জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।”
ইতিহাসের সেই ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের নৃশংস গ্রেনেড হামলা স্মরণ করা নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। সেই দিনের জঙ্গি হামলার ১৮ বছর পর আজকের বাংলাদেশ কোন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে- তা আলোচনার দাবি রাখে। দেশজুড়ে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ওই দিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। সেই জনসভায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সময় প্রকাশ্যে যেভাবে গ্রেনেড হামলা হয়, তাতে নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। ২০১৮ সালে দীর্ঘ ১৪ বছর পর ওই গ্রেনেড হামলার রায় প্রকাশ হয়। রায়ে আমরা দেখেছি, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র’ কীভাবে জড়িয়ে পড়ে। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালতও বলেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের’ সহায়তায় ওই হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সর্বস্তরের মানুষের ভূমিকা প্রয়োজন।
জামায়াত হিন্দু ও বৌদ্ধদের মুসলমান বানষতে কোরান অবমাননার গুজব ছড়িয়ে সা¤প্রদায়িক হামলা করছে ! এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার আলবদর চক্র মুসলমান দুর্বৃত্তরা মধ্যরাতে ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ,বাংলাদেশের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে বাংলাদেশ ধ্বংস করেছে! জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! কী দুর্ভাগ্য! উন্নয়ন-অগ্রগতির পথকে রুদ্ধ করতে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে বাঙালির ইচ্ছাশক্তিকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, উন্নয়নসহ সকল বিষয় স্থানীয় সেনা ও গোয়েন্দাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। পার্বত্য চুক্তির অব্যবহিত পরে প্রত্যাহৃত ক্যাম্পসমূহ পুনস্থাপনের জন্য সেনাবাহিনী ২০২০ সালে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২০ সালে ৭টি নতুন ক্যাম্পসহ বিগত কয়েক বছরে অনেক ক্যাম্প পুনস্থাপন করা হয়েছে। “বল বীর – বল উন্নত মম শির!” What cvwKšÍvb taught to Bangladesh? চিটিংবাজ পূর্বের পাকিন্তান সরকারগুলোর মতো বাংলাদেশে বর্তমান সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে একদিকে ইসলামীকরণ নীতি বাস্তবায়ন করে চলেছে এবং বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! মৌলবাদী ও জুম্ম বিদ্বেষী কিছু ইসলামী গোষ্ঠী কর্তৃক সুপরিকল্পিতভাবে জুম্মদেরকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কার্যক্রম জোরদার হয়েছে।
নারীর উপর সহিংসতা: ২০২০ সালে একজন সেনা সদস্যসহ সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ১৬ জন জুম্ম নারী ও শিশু সংহিংসতার শিকার হয়। তার মধ্যে আগস্ট মাসে লামায় বহিরাগত ৬ বাঙালি সেটেলার কর্তৃক এক বিধবা ত্রিপুরা নারীকে (২৫) গণধর্ষণ এবং সেপ্টেম্বর মাসে খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেও ৯ জন বাঙালি সেটেলার কর্তৃক মানসিক প্রতিবন্ধী এক জুম্ম নারীকে গণধর্ষণ এবং বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাটের ঘটনা ছিল সবচেয়ে লোমহর্ষক ও পৈশাসিক।
এপ্রিল মাসে রনিকা চাকমা (২২) নামে এক গর্ভবর্তী জুম্ম নারীকে জুরাছড়ি উপজেলা থেকে রাঙ্গামাটি জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তল্লাসীর নামে সুবলং ক্যাম্পের সেনাবাহিনী কর্তৃক বিনা কারণে প্রায় একঘন্টা আটকে রাখার ফলে হাসপাতালে পৌঁছার আগেই অর্ধেক পথে উক্ত গর্ভবতী নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। জুলাই মাসে রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের অংগ্যপাড়া গ্রামে সেনাবাহিনী কর্তৃক সন্ত্রাসী ধরার নামে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণের ফলে শান্তিলতা তঞ্চঙ্গ্যা (৩০) নামে এক জুম্ম নারী নিহত এবং তার ৫ বছরের সন্তান অর্জুন তঞ্চঙ্গ্যা সুকেন আহত হয়।
কোভিড-১৯ মহামারী সংকটে দমন-পীড়ন জোরদারকরণ: ২০২০ সালে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামেও ব্যাপক আঘাত হানে প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ মহামারী। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনের ফলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামেও দেখা দেয় একদিকে কর্মহীন হয়ে পড়া খেটে-খাওয়া মানুষের খাদ্য সংকট, অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মজীবী জুম্ম যুবক-যুবতীরা এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার স্ব স্ব ঘরবাড়িতে ফেরার সময় যানবাহনের চরম ভোগান্তি ছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার সাথে তিন পার্বত্য জেলা সীমানায় তাদের পড়তে হয়েছে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবর্ণনীয় হয়রানি ও নির্যাতনে। এধরনের চরম দুর্যোগ ও সংকটের মধ্যেও পার্বত্য চট্টগ্রামে থেমে নেই সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান এবং রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় পক্ষ কর্তৃক জুম্মদের জায়গা-জমি বেধখল ও তাদেরকে স্বভূমি উচ্ছেদ।
আগস্ট মাসে বাঘাইছড়ির ১২ বীর বাঘাইহাট সেনা জোন, বাঘাইহাট ৫৪ বিজিবি জোন এবং মারিশ্যা ২৭ জোন করোনা মহামারীর জন্য বরাদ্দকৃত ইউএনডিপি’র উক্ত চাল বিতরণ কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়। আগস্ট মাসে পানছড়ি উপজেলার পানছড়ি বিজিবি জোনের সদস্য চেঙ্গী ইউনিয়নের তারাবন গীর্জা এলাকায় করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে নির্মিত একটি অস্থায়ী বাজারে হানা দিয়ে জুম্ম সবজী বিক্রেতাদের ১৫-২০টি দোকান ভাঙচুর করে দেয়।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত- এমন অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে খুনিদের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে সহযোগিতা এবং বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করতেন না। তিনি খুনি ও ষড়যন্ত্রকারী না হলে খুনি মোশতাক তাঁকে সেনাপ্রধান বানাত না। (সমকাল প্রতিবেদক প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২২)! জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়দাতারাই আজ মানবাধিকারের সবক দিচ্ছে: ”মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটের কারণে প্রায় তিন বছর পর তিনি সশরীরে গতকালের আলোচনা সভায় উপস্থিত হলে নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরেও হাজার হাজার নেতাকর্মী হাত নেড়ে ও গগনবিদারী স্লোগান দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রবাসে ছয় বছরের নির্বাসন ও ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পরও দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিচারের বাণী নীরবে কাঁদে। দেশে ফিরে এসেও বিচার চাইতে পারিনি। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার আগে আদালতে গিয়ে বিচার চেয়েছি। ওই সময়ে ক্ষমতায় না এলে আমরা ইনডেমনিটি বাতিল করতে পারতাম না। বিচারের উদ্যোগও নিতে পারতাম না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে কখনও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না।
২০২০ সালে সংস্কারপন্থী ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সদস্যদের রাঙ্গামাটি জেলার বরকলের সুবলং বাজার, লংগদু উপজেলার তিনটিলা, দীঘিনালার বাবুছড়া, কাপ্তাই ও রাজন্থলী উপজেলাসহ খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সদর জেলার বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্রভাবে মোতায়েন রেখে চুক্তি স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতির সদস্য ও চুক্তি সমর্থকদের উপর এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে সেনাবাহিনী সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর নাকের ডগায় এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি করে চলেছে। সেপ্টেম্বরে সেনাবাহিনীর ২১ বীর (দুর্ভেদ্য একুশ)-এর লংগদু সেনা জোনের পক্ষ থেকে সংস্কারপন্থী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদেরকে ২৫ সেট সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ডিসেম্বর মাসে সংস্কারপন্থীরা লংগদু থেকে জনসংহতি সমিতির সদস্য ও সমর্থকদের ২৮টি পরিবারকে উচ্ছেদের তৎপরতা চালায়।
২০২০ সালে এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে সেনাবাহিনী যৌথভাবে বিভিন্ন জায়গায় টহল প্রদান ও তল্লাসী অভিযান চালাতেও দেখা গেছে। যেমন ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে রাজস্থলীতে সেনাবাহিনী ও তাদের মদদপুষ্ট ‘মগ পার্টি’ যৌথভাবে গ্রামে গ্রামে টহল দিয়ে চলছে। সেনাবাহিনীর এজেন্ডা মোতাবেক মগ পার্টি কর্তৃক জনসংহতি সমিতির সদস্য ও সমর্থকদের খুন ও অপহরণ করতে না পারার কারণে মগ পার্টির উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ডিসেম্বরে রাজস্থলী সেনা সাব-জোনের কম্যান্ডার মেজর মঞ্জুর ‘মগ পার্টি’কে আদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা লাশ চাই, আমাদেরকে লাশ দেখাও। তোমরা কোথা থেকে লাশ আনবে আমরা জানি না।’ এভাবে সেনাবাহিনী এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে মদদ ও প্রশ্রয় দিয়ে খুন-খারাবি, অপহরণ ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সেনাবাহিনীর প্রকাশ্য মদদ ও প্রশ্রয় প্রদান: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে নস্যাৎ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা, সর্বোপরি জুম্মকে দিয়ে জুম্মদেরকে জাতিগতভাবে নির্মূলীকরণের জন্য সংস্কারপন্থী খ্যাত জেএসএস (এমএন লারমা), ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও এএলপি থেকে দলচ্যুত মগ পার্টি নামে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীন দল আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে। এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২০ সালে ১০০টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ২১ জনকে হত্যা করা হয়েছে, ৫০ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, ১৭ জনকে মারধর ও হয়রানি করা হয়েছে, ৮ জনকে হত্যার হুমকি প্রদান হয়েছে, জনসংহতি সমিতির ৮২ জন সদস্য ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া মগ পার্টি কর্তৃক ১২টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!