অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ছয়জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়নি ইসরাইল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিদের ‘অপমানজনক’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে, যা ইসরাইলের জন্য অগ্রহণযোগ্য। এর ফলে শনিবার মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও ৬০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে কারাগারে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার সরকার।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, “হামাস বারবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের ব্যবহার করছে। তাই অপমানজনক অনুষ্ঠান বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।” উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, যার আওতায় হামাস এখন পর্যন্ত ২৫ জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। তবে মুক্তির সময় হামাস বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করায় ইসরাইল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হামাস চারজন ইসরাইলি জিম্মির লাশ হস্তান্তর করে। তবে একটি লাশের বিষয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়, কারণ শিরি বিবাস নামে এক জিম্মির লাশের পরিবর্তে ভুল করে অন্য কারও লাশ দেওয়া হয়েছিল। পরে শুক্রবার সঠিক লাশ হস্তান্তর করা হয়, যা ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করে তার পরিবার। ইসরাইল এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।
এদিকে হামাসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “যদি চুক্তির শর্ত মানা হয়, তাহলে একসঙ্গে সব ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত হামাস।” সংগঠনটি যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের প্রতিটি ধাপ বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিক বলে উল্লেখ করেছে। চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে মোট ৩৩ জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যার বিনিময়ে ১,৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা। তবে নেতানিয়াহুর বর্তমান অবস্থান যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহু দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে যেতে আগ্রহী নন। অধিকাংশ জীবিত ইসরাইলি জিম্মি মুক্তি পাওয়ায় তার উগ্রপন্থী মিত্ররা গাজায় আবারও যুদ্ধ শুরুর জন্য চাপ দিচ্ছে। ফলে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি শুধু চুক্তির শর্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
তথ্যসূত্র : এএফপি