অনলাইন ডেস্ক : করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি অপরিহার্য পণ্য উৎপাদনকারী পোশাক কারখানা প্রয়োজনে চালু রাখা যাবে বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি অপরিহার্য পণ্য, যেমন, পিপিই, মাস্ক হ্যান্ডওয়াশ, ওষুধপত্র উৎপাদনের কার্যক্রম যেসব কারখানায় চলমান রয়েছে, সেসব কলকারখানার মালিকদের শ্রমিকের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সাপেক্ষে প্রয়োজনবোধে কলকারখানা চালু রাখতে পারবেন।
এতে আরো বলা হয়, গত ২৬শে মার্চ তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ করার বিষয়ে প্রচারিত এবং প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে, যেসব রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক ক্রয় আদেশ বহাল রয়েছে এবং করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি অপরিহার্য পণ্য উৎপাদনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে, সেসব কলকারখানা শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ সাপেক্ষে প্রয়োজনে চালু রাখতে পারবে। এ বিষয়ে বিজিএমইএ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছে।
এ বিষয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরও একই নিদের্শনা দিয়েছে।
শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, কারখানাগুলোয় ধারাবাহিকভাবে কাজ কমছে। বিদ্যমান কাজ যা আছে সেগুলোতেও বিরতি দিতে হচ্ছে ক্রেতার ইচ্ছে অনুযায়ী। আবার নতুন কোনো কাজও আসছে না।
কারখানায় করোনা আতঙ্কের ব্যাপ্তিও বাড়ছে। সব মিলিয়ে কোনো কারখানার মালিক একদিন কাজ চালু রাখলে আরেকদিন বন্ধ রাখছেন।
করোনা আতঙ্কে কারখানা বন্ধের ঘটনাও ঘটেছে। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ওপেক্স সিনহা গ্রুপের কারখানায় কাজ করেন ১৩ হাজার শ্রমিক। শ্রম আইনের ধারা ১২ ও ১৬ অনুযায়ী জরুরি রপ্তানি কাজে প্রয়োজনীয় তিন হাজার শ্রমিককে কাজে রেখে বাকি ১০ হাজার জনকে ছুটি দিয়ে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র জানিয়েছে, ওপেক্স সিনহা গ্রুপের কারখানা বন্ধ হয় ২৫শে মার্চ। এর আগে ২৩শে মার্চ সাভারের হেমায়েতপুরে দুটি পোশাক কারখানা দীপ্ত অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ডার্ড গার্মেন্ট লিমিটেড করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণ দেখিয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট ৩৮টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তাদের মধ্যেই অধিকাংশ আবার শ্রম আইনের ১২ ও ১৬ ধারা অনুযায়ী কারখানা লে-অফ করেছে। তাতে কারখানা বন্ধকালীন সময়ে শ্রমিকেরা মূল মজুরির অর্ধেক ও বাড়ি ভাড়া পাবেন। বিজিএমইএর একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান।
রুবানা হক বলেন, ‘সরকারের সাধারণ ছুটি যতদিন, ততদিন পর্যন্ত কারখানা বন্ধের জন্য সবাইকে বলা হয়েছে। করোনা থেকে রক্ষায় সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে সব তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রাখতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা মার্চ-এপ্রিলের বেতন একসঙ্গে পাবেন বলেও জানান তিনি। তবে কোনও কারখানা মালিক চাইলে তার কারখানা খোলা রাখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে শ্রমিকদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। কোনও শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হলে বা কোনও সমস্যা হলে এক্ষেত্রে কারখানার মালিককে দায়দায়িত্ব নিতে হবে বলে জানান রুবানা হক।