অনলাইন ডেস্ক : গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে আছেন কানাডায় বসবাসকারী ফারহানা সুলতানা। এছাড়া, রয়েছে হৃদরোগের সমস্যা। তা সত্তে¡ও তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে কানাডা সরকার। এ খবর দিয়েছে টরন্টো-ভিত্তিক সিটিভি নিউজ। কানাডার স্কারবোরোতে বাস
করেন সুলতানা। গত নভেম্বরে সেখানে স্থায়ী আবাসনের জন্য মানবিক অবস্থা বিবেচনায় আবেদন করেন তিনি। কিন্তু তার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। কানাডিয়ান বর্ডার অ্যান্ড সার্ভিস এজেন্সি (সিবিএসএ) তাকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। সুলতানা জানান, তিনি কেন্দ্রীয় সংস্থাটির কাছে মিনতি করেছিলেন, তাকে যেন তার সন্তান জন্ম নেয়া পর্যন্ত সেখানে থাকতে দেয়া হয়। এ অবস্থায় ভ্রমণ করলে তার বা তার অনাগত সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। আগামী মার্চে তার সন্তান জন্ম দেয়ার সম্ভাব্য তারিখ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সিবিএসএ চলতি সপ্তাহে তাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। সুলতানার পাঠানো চিঠি ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট নথিপত্র খতিয়ে বলেছে, তিনি ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত। যদিও সরাসরি শারীরিক কোনো নিরীক্ষা করে দেখেনি তারা। সুলতানা বলেন, আমার বা আমার সন্তানের মৃত্যুর সার্টিফিকেটই তাদের কাছে যথেষ্ট মনে হবে। তিনি আরো বলেন, বিমানে কোনো চিকিৎসক নেই। কিছু ঘটলে সাহায্য করার মতো কেউ নেই। আমি কেবল আমার সন্তানের জন্ম হওয়া পর্যন্ত থাকতে চাইছি।
সুলতানা জানান, তিনি সিবিএসএ’র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে পারেন গত সোমবার। বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত সব গুছিয়েছেন। সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি। দুশ্চিন্তায় শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সিবিএসএ’র এক মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বিকালে জানিয়েছেন, আলাদা করে নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে পারছেন না তারা। তবে তারা জানায়, এ ধরনের ঘটনায় যদি স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে তাহলে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেয়া হয়। তারাই ঠিক করেন কোনো ব্যক্তি ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত কিনা।
সোমবার সিবিএসএ’র এক চিকিৎসক সুলতানাকে এক চিঠির মাধ্যমে জানান, তিনি ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত। চিঠিতে লেখা হয়, বিমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে শারীরিক সুস্থতা ও নথিপত্র যাচাইয়ের পর সুলতানাকে তার নিজদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য উপযুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে।
সুলতানা জানান, তাকে সরাসরি না দেখেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কোনো ধরনের পরীক্ষাও করা হয়নি। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা বিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ গত ৭ই নভেম্বর জানিয়েছেন, সুলতানার বর্তমান অবস্থায় তার জন্য ভ্রমণ অনুচিত। এমনকি কানাডা সরকারের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যানুসারে, ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের প্রসূতি নারীদের জন্য ভ্রমণ নিরাপদ। সুলতানা এখন ৩২ সপ্তাহের গর্ভবতী।
সুলতানা জানান, তার স্বামী ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে কানাডা যান। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। উভয়েরই জন্ম হয় কানাডায়। সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে একজন হিসাব বিশ্লেষকের কাজ করেন তার স্বামী। সুলতানাকে কানাডায় থাকতে দিতে অনলাইনে একটি পিটিশনে ১২ হাজারের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কানাডা থেকে বিমানে উঠার কথা রয়েছে তার।