অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি আফসানা বেগমের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের এক আদালতে জালিয়াতির যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তা থেকে নির্দোষ বিবেচনায় খালাস পেয়েছেন। ৩১ বছর বয়সী আফসানা বেগম পূর্ব লন্ডনের পপলার অ্যান্ড লাইম আসনের এমপি।
তিনি লেবার পার্টির টিকিটে এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে, তিনি অসত্য তথ্য দিয়ে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কাছ থেকে আবাসন ভাতা নিয়েছিলেন।
শুক্রবার লন্ডনের স্নেয়ার্সব্রুক কাউন্টি আদালতকে আফসানা বেগম জানিয়েছেন, তার আর্থিক বিষয় দেখাশোনা করতেন তার স্বামী, যিনি সবকিছু ‘নিয়ন্ত্রণ’ করতে চান। তার নামে আবাসনের আবেদন করার বিষয়টি জানার পর তিনি ‘অবাক’ হয়েছিলেন।
আফসানা বেগম আরও অভিযোগ করেন যে, তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনার পেছনে ‘হীন অভিপ্রায়’ কাজ করেছে। আদালত যখন তাকে নির্দোষ বলে রায় দেয় তখন আফসানা বেগমকে কাঠগড়ায় কাঁদতে দেখা যায়।
পরে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই মামলার কারণে তার সুনামের বিরাট ক্ষতি হয়েছে। তাকে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
আফসানা বেগম বলেন, তিনি পারিবারিক নির্যাতনের শিকার এক নারী। তার বিরুদ্ধে এরকম হয়রানিমূলক অভিযোগ আনার পর গত ১৮ মাস ধরে তাকে অনলাইনে অনেক নারী বিদ্বেষী ও ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্যের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাকে বিভিন্ন রকম হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ সময়টা তার জন্য খুব কঠিন ছিল।
তিনি আরও বলেন, অন্য কেউ যেন এ রকম ঘটনার শিকার না হন, তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে তিনি ভাববেন।
আফসানা বেগম ২০১৯ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বড় ব্যবধানে পপলার অ্যান্ড লাইম আসনে জয়ী হন। ২০১১ সালের ২২ জুলাই তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের হাউজিং রেজিস্টারে তালিকাভুক্ত হন আবাসন সুবিধার জন্য।
তার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে ২১ মে, ২০১৩ সালের ২১ মে থেকে ২০১৪ সালের ২৪ মে এবং ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের ২১ মার্চ সময়কালে নেওয়া আবাসন সুবিধার জন্য অভিযোগ আনা হয়েছিল।
অভিযোগ করা হয়েছিল, আফসানা বেগম প্রথম আবাসন সুবিধা নিয়েছিলেন তিন বেডরুমের একটি জনাকীর্ণ বাড়িতে থাকেন বলে। এই দাবির কারণে তিনি আবাসন প্রার্থীদের তালিকায় অগ্রাধিকার পেয়েছিলেন। তবে ২০০৯ সালে আফসানা বেগমের এক আত্মীয় যে আবেদন করেন, তাতে বলা হয়েছিল- বাড়িটিতে চারটি বেডরুম আছে।
কিন্তু আফসানা বেগম আদালতকে জানান, এই বাড়িতে বেডরুম ছিল আসলে তিনটি। সেখানে থাকার সময় তার নিজের কোনো আলাদা বেডরুম ছিল না। তবে কেন তার এক আত্মীয় বাড়িতে চারটি বেডরুম ছিল বলে দাবি করেন- তার ব্যাখ্যা তিনি দেননি।
আফসানা বেগম পরে তার তৎকালীন স্বামী এহতাশামুল হকের সঙ্গে ভিন্ন একটা বাড়িতে চলে যান। তবে তিনি বিষয়টি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলকে অবহিত করেননি বলে অভিযোগ করা হয়। এই বাড়িতে তিনি দুই বছর ছিলেন।
সূত্র : বিবিসি