অনলাইন ডেস্ক : আগামী বছর নির্বাচন পর্যন্ত পেরুর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ফ্রান্সিসকো সাগাস্তি। তাকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছে পেরুর কংগ্রেস। সাগাস্তি এক সপ্তাহের মধ্যে পেরুর তৃতীয় প্রেসিডেন্ট!

৭৬ বছর বয়সী কংগ্রেসম্যান সাগাস্তি একজন প্রকৌশলী ও শিক্ষাবিদ। সংকটের মুহূর্তে তিনি দেশের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন।

ঘুষের অভিযোগে গত সপ্তাহে অপসারণ করা হয় প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভিজকারাকে। যদিও তিনি এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তার অপসারণ নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভও হয়েছে, যাতে অন্তত দুজনের মৃত্যু হয় ও বহু মানুষ আহত হয়।

গত সপ্তাহে ভিজকারার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট আনা একমাত্র দলের নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট হলেন সাগাস্তি। তিনি ন্যূনতম ৬০ ভোট নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হন। সংসদ সদস্য আলবার্তো ডি বেলাউন্ডে বলেন, মূল বিষয় হলো, দুঃস্বপ্নের সমাপ্তি ঘটেছে এবং পেরুতে স্থিতি এসেছে।

এক সপ্তাহে কী ঘটছিল পেরুতে?

ভিজকারা ও সাগাস্তির মাঝেও একজন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন! ইমপিচমেন্টের শিকার হয়ে ভিজকারার বিদায়ের পর কংগ্রেসের সাবেক স্পিকার ম্যানুয়েল মেরিনো প্রেসিডেন্ট হন, যদিও তিনি টিকতে পারেন এক সপ্তাহেরও কম সময়। তার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ তৈরি হলে তিনি কঠোর ও সহিংস উপায়ে তা দমন করেন। এতে তার পদত্যাগের দাবি তোলেন রাজনীতিকরা। চাপের মুখে গত রোববার পদত্যাগ করেন মেরিনো। এতে ভাগ্য খুলে যায় সাগাস্তির এবং এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে তিনি পেরুর তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন।

ভিজকারার অপসারণ ঠেকাতে লাখো মানুষ রাস্তায় নামেন, যার বেশির ভাগই বয়সে তরুণ। তারা ভিজকারার বিরুদ্ধে ‘সংসদীয় অভ্যুত্থানের’ অভিযোগ তোলেন। ৫৭ বছর বয়সী ভিজকারা ভোটারদের সমর্থন নিয়ে নিজের মেয়াদ উপভোগ করছিলেন এবং তিনি সংবিধান সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

শনিবার লিমার প্রতিবাদ বেশ শান্তিপূর্ণ ছিল, যদিও বিকালের দিকে পুলিশের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও শটগান থেকে গুলি ছুঁড়লে দুই শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটে। এতে পতন হয় মেরিনোরও।

মেরিনো পরিস্থিতি যেভাবে সামাল দিয়েছেন এবং পুলিশ যেভাবে সহিংসতা দেখায়, তার প্রতিবাদে মন্ত্রিসভার ১২ জন রোববার পদত্যাগ করেন। ফলে বাধ্য হয়েই মেরিনোও সরে দাঁড়ান।

করোনাভাইরাস মহামারীতে বিপর্যস্ত লাতিন আমেরিকার দেশ পেরু, যা তাদের অর্থনীতিকেও বিধ্বস্ত করেছে। দেশটিতে ৯ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৩৫ হাজারের। মৃত্যুহারে তারা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে। নতুন করে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ায় দেশটি অর্থনৈতিকভাবে আরো বিপাকে পড়বে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

বিবিসি অবলম্বনে