অনলাইন ডেস্ক : লিবিয়ায় মানব পাচারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ পর্যন্ত সংস্থাটি ৩৬ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। শনাক্ত হয়েছে তিনজন মূল হোতা। গ্রেপ্তার হওয়া একটি এজেন্সির একজন পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০-৩০ কোটি টাকা রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্ত সংশ্নিষ্টরা।

লিবিয়ায় মানব পাচার মামলার তদন্তসহ সিআইডির বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সংস্থাটির সদর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় আরও জানানো হয়, মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষ্মীপুরের এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি। অবশ্য তার বিষয়ে এখনই কোনো তথ্য প্রকাশ করতে চান না সিআইডির কর্মকর্তারা। সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের মধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। অনেকের নাম বেরিয়ে এসেছে। এসব যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তিন মূল হোতা শনাক্ত হয়েছে। তাদের সম্পদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগির তাদের বিষয়ে তথ্য তুলে ধরা হবে।

গত ২৮ মে লিবিয়ায় মানব পাচারকারী চক্রের হামলায় ২৬ বাংলাদেশি নিহত হন। এ ঘটনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় ২৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। তদন্তে নেমে সিআইডি চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্য সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার ৩৬ জন। গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে একটি এজেন্সির পিয়ন রয়েছে, যার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০-৩০ কোটি টাকা থাকার তথ্য রয়েছে সিআইডির হাতে।

মাহবুবুর রহমান জানান, সিআইডির তদন্তকাজ আরও গতিশীল করার কাজ চলছে। আগে ৬০ বা ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে মৌখিক স্বীকারোক্তির ওপর সিআইডি নির্ভর করত। এখন ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ফরেনসিক সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করার চেষ্টা চলছে। সিআইডি ২২ ধরনের মামলা করে থাকে। ৮২ ভাগ ক্ষেত্রে তারা অভিযোগপত্র দিয়েছে, সাজা হয়েছে ২৪ ভাগ ক্ষেত্রে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার মাহবুবুর বলেন, অভিযোগপত্র দেওয়ার পর কেন শাস্তির হার কম, তা জানতে বিচারক ও আইনজীবীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। সিআইডি সাইবার থানা স্থাপন করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় থানাটি স্থাপন করা হলেও সারাদেশ থেকে ভুক্তভোগীরা অনলাইনে এই থানায় অভিযোগ দায়েরের সুযোগ পাবেন।

এমপি পাপুল সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন বিভাগের ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ধৈর্য ধরুন। সময়মতো সাক্ষ্য-প্রমাণসহ এ বিষয়ে তথ্য দেওয়া হবে।