সোনা কান্তি বড়ুয়া : বাংলাদেশে বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তান ৩০ লক্ষ নর নারীসহ শিশু হত্যা এবং ২ লক্ষ মা-বোনকে ধর্ষন করেছে। পৃথিবীতে যতগুলি ধর্ম আছে তা’র প্রত্যেকটিতেই দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়া’বার কথা জোর দিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে। পাকিস্তান ও সাতচল্লিশের ধর্মান্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মনুষ্যত্বের অনিবার্য অভ্যুত্থান, বহুজন হিতায় বহুজন সুখায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ধর্মান্ধ জামায়াতে সংগঠন! ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চে পাকিস্তান ইসলামের নাম দিয়ে ফতোয়া দিলেন, বাংলাদেশে অপারেশন সার্চ লাইট নামে (বাঙালিদেরকে হত্যা কর) ৩০ লক্ষ নর নারী সহ শিশু হত্যা, ২ লক্ষ মা-বোনকে ধর্ষন করেছে।
পাকিস্তান ও সাতচল্লিশের ধর্মান্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনিবার্য অভ্যুত্থান! ভারত পাকিস্তান-বিভাজনে বিভক্ত মানব সত্তার কান্না! মনুষ্যত্বের শিক্ষা বিরুদ্ধে সাতচল্লিশে ধর্মান্ধ ধর্মের জন্য ভারত ও পাকিস্তান দ্বিখন্ডিত হয়ে ভারতীয় জাতির (ভারত ও পাকিস্তান) মানবাধিকার আত্মহত্যা করেছে। মানবাধিকারের আলোতে আইনতঃ অপরাধ হলো, মানুষ মানুষকে চন্ডাল বা বিধর্মী বলে ঘৃণা করা। মানুষজাতির স্বজন হয়ে মুখে হিন্দুপন্ডিতগণ বলেন, “লোক সামাস্তা সুখিনো ভবনতু;” কাজে ‘মনুর আইন ’ নিয়ে সর্বহারা গরীব জনতাকে ‘চন্ডাল এবংদলিত’ বানিয়ে হাজার হাজার বছর পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ভারতীয় সংবিধান বিরোধি বর্তমান ভারতের জাতিভেদ প্রথা (ব্রাহ্মণ ও দলিত বিতর্ক)। কিন্তু বৌদ্ধ রাজ্য সিকিমকে ভারত অজগরের মতো গিলে ফেলেছ এবং শত শত দেব দেবীর পূজা করতে করতে নর নারায়ন বা দলিত জনতার মনুষ্যত্ব কেড়ে নিয়েছে।
১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট পাকিস্তান ‘রাষ্ঠ্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধানে লিখে বাংলাদেশকে “পূর্ব পাকিস্তান” সংযোজন করে পাকিস্তান রাজনীতির বাংলাদেশী হত্যা যজ্ঞ কেন? পাকিস্তানের বিশ্বাসঘাতকতায় একাত্তরের দুঃখের দিনে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী কারাগারে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে নিজের প্রাণদান করতে প্রস্তুত ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালির জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ! সবুজের জমিনে রক্তিম সূর্য খচিত মানচিত্রের বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস এবং ৫৩তম জাতীয় দিবস। এবং পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশের বিজয় হয় : (১) গণতস্ত্র (২) জাতীয়তাবাদ (৩) সমাজতস্ত্র এবং (৪) ধর্মনিরপেক্ষতা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি কেন? আজ বাংলাদেশে জনতা একটি বিপন্ন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বাংলাদেশে মহান স্বাধীনতা দিবস এবং শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে আসে চোখে পানি / এসো স্মরণ করি শহীদদের কুরবানি।
হিন্দু-মুসলমান রাজনীতিতে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিতে সাতচল্লিশে ধর্মান্ধ ধর্মের জন্য ভারত ও পাকিস্তান দ্বিখন্ডিত হয়েছে। আইনের শাসনে গরীব জনতা দলিত মিসকিন, মুরতাদ, কাফের, চন্ডাল ¤েøচ্ছ ডোম হলো কেন? ধর্মের অপব্যবহারের কারনে ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সরকারের গুলিতে ঢাকার রাজপথ সালাম, রফিক, বরকত সহ কত শত নাম না জানা শহীদদের রক্তে রক্ত্ক্তা হলো এবং সেই বাংলা ভাষার আন্দোলন আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার জন্মদাতা শহীদ মিনার হয়ে বিরাজমান।
১৯৪৮ সালে বাংলাদেশে বাংলা ভাষা বলার অধিকার কেড়ে নিতে ঢাকায় এসেছিল পাকিস্তানের বিশ্বষসঘাতক কায়দে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, পাকিস্তানের ধর্মান্ধ ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষা আন্দোলন বাঙালির রক্তে রক্তে প্রবহমান! বিশ্বষসঘাতক পাকিস্তান সাতচল্লিশের ধর্মান্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে বাংলাদেশে রক্তাক্ত ভাষা আন্দোলনের অনিবার্য অভ্যুত্থান! বাংলাদেশে রক্তাক্ত ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিশ্বষসঘাতক ধর্মান্ধ ইসলাম রাজনীতি এমন এক অভিশাপ ধর্মান্ধ জটিল ধাঁধা, যা থেকে নিস্তার পাইনি বাংলাদেশের বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা!
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, মনুষ্যত্বের শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন!” আমি আজি ধূলিতলে এ জীর্ণ জীবন
করিলাম নত।
বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও,
ক্ষমা করো আজিকার মতো
পুরাতন বরষের সাথে
পুরাতন অপরাধ যত।”
গত ২১ জুন ২০২২ দুদক সূত্র জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশনে সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাসের শ্বেতপত্র ও বাংলাদেশে হিন্দু হত্যায় মৌলবাদী সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাসের দুই হাজার দিন- প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড সম্বলিত শীর্ষক ২ হাজার ২০০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্রটি অভিযোগ হিসেবে আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের বিশেষ অনুসন্ধান টিম বাংলাদেশে গঠন করা হয়েছে। দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে (Samakal গত ২১ জুন ২০২২); বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে কমিশন। গণকমিশনের ওই শ্বেতপত্রে মৌলবাদ ও সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ১১৬ ধর্ম ব্যবসায়ী! বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে সরে যেতে পারে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ। মঙ্গলবার রাত ৮টায় (17 November, 2020) ইয়াং বাংলা আয়োজিত জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা যে ধর্মেরই হইনা কেনো, আমরা সবাই বাঙ্গালী।
দুই বাংলার বাঙালির ভিটার সন্ধানে! ভারত পাকিস্তান-বিভাজনে বিভক্ত মানব সত্তার কান্না! হিন্দু মুসলমানদের হিংসা পুষে রাখা ভারত “ভাগ’ কথাটা এখানে রক্তে রাঙানো ১৯৪৭ সাল ১৪ আগস্ট এবং ১৫ আগস্ট! দেশভাগ’ এখানে সর্বাত্মক : দেশের ভাগ, মানচিত্রের ভাগ, আত্মা, সম্পর্ক, যোগাযোগ, এমন কি আমার লিখিত “আমি’টির ও ভাগ, পার্টিশন আমার সর্বস্ব; আমার সত্তাকেই বিভক্ত করে রেখেছে। একটি সোশাল নেটওয়ার্কিং গ্রুপ কিছু দিন আগে দুই বাংলার উদ্বাস্তুদের হারিয়ে যাওয়া গৃহের খোঁজের জন্যে তৈরি হতেই সাড়া ফেলে দেয় গ্রুপটি। আন্দামান থেকে মধ্য ভারত, বাঙালির ভিটার সন্ধানে সেখানে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্ব ভারত, ঝড়ের মতো আর্তি আছড়ে পড়ে। ভুল বানানে আবেগদীপ্ত চিঠি, ভাঙা পালঙ্ক, এমনকি কানের দুল, চুড়ির ছবি দিয়ে দেশকে খোঁজার, শিকড়ের সন্ধানের আকুতি দেখে মনে হয়, বস্তুবিশ্বের চেয়ে মানুষের কল্পনার বাস্তবতা কিছু কম নয়, বরং বেশি।
সাতচল্লিশ থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দু উদ্বাস্তুদের স্বাধীনতা গৃহ ও দেশ মানুষের বুকেই থাকে। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানও সহজে সব কিছু ছেড়ে পূর্ব পাকিস্তানে যেতে চাননি! পূর্ব পাকিস্তানের উদ্বাস্তুদের মধ্যে চলচ্চিত্রে ঋত্বিক ঘটকরা এবং কথাসাহিত্যে অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়-প্রফুল্ল রায়রা তাঁদের ছিন্নমূল স্মৃতিসত্তার ছবি এঁকেছেন। ক্যাম্পের দলিত কাহিনি লিখেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। সাতচল্লিশ থেকেই বোধহয় ভাগাভাগি-খেলার এই নেশাটা আমাদের রক্তের মধ্যে ঢুকে গেছে। / ভাগের মা গঙ্গা না-ই পাক, এই ভাগাভাগির নেশাই আমাদের গঙ্গাযাত্রা করিয়ে ছাড়বে।’
বৌদ্ধ নগরী মুন্সিগঞ্জের নাটেশ্বর গ্রামে বৌদ্ধ স্মৃতি বৌদ্ধগণকে যেমনি আনন্দিত করতে পারে তেমনি হতাশায় নিমজ্জিত করতে পারে। ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে বর্তমান বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান এবং ইন্ব্দোনেশিয় একসময় বৌদ্ধপ্রধান দেশ ছিলো! ইসলামি রাজনীতি বৌদ্ধধর্ম এবং বৌদ্ধ প্রধান দেশকে অজগরের মতো গিলে ফেলেছে! রাজাকারগণ ইসলামের নামে একাত্তরের ২৫শে মার্চের রাত্রিতে পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খানের ৯৪ হাজার সৈন্যবাহিনীকে সাহার্য করেছিল এবং বারশত মাইল দূরের বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনতাকে তিলে তিলে হত্যা করেছে। মানুষের মনুষ্যত্ব কেড়ে নেওয়াটাই রামুর মুসলমান রাজনীতি! বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশী হত্যাযজ্ঞই কি পাকিস্তানী ইসলাম এবং মুসলমান ফেইসবুকে কোরাণের উপর পদচিহ্ন কি বাংলাদেশী ইসলাম?
১২০২ সালে রাজা লক্ষন সেনের মহামন্ত্রী হলায়ুধ মিশ্র বিশ্বাসঘাতকতায় বখতিয়ার খিলজির বাংলা জয়, এবং বখতিয়ার খিলজির বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের জন্যে বৌদ্ধগণ মুসলমান হয়েছিলেন! কর্নাটকের রাজা বিজয় সেনের বাংলাদেশ দখল করাতে একাদশ শতাব্দীতে ইতিহাস রক্তাক্ত বাংলাদেশী বৌদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো। কথাশিল্পী শওকত আলীর লেখা “প্রদোষে প্রাকৃতজন” এবং “দুষ্কালের দিবানিশি” গ্রন্থদ্বয়ে দক্ষিন এশিয়ার হিন্দু মুসলমান শাসকগণ কর্তৃক বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের রক্তাক্ত ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন। হিন্দু মুসলমান রাজনীতির মাফিয়া চক্রে বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ)! স্রোতস্বিনীর বুকে পাহাড়ী জনতার অশ্রæ নিয়ে কর্নফুলির কান্না এখন ও থামেনি। রাষ্ঠ্রক্ষমতার দুর্নীতির মাফিয়াচক্রে রাজনীতির মস্তক বিক্রয় করে চলেছে দিনের পর দিন।
১১৯২ সালে রাজা লক্ষন সেনের মহামন্ত্রী বিশ্বাসঘাতক হলায়ুধ মিশ্র হিন্দু রাষ্ঠ্রধর্মের নেতা হয়ে বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ করতে ‘শেক শুভোদয়া’ শীর্ষক বই লিখেছিলেন। তিনি তাঁর রচিত দিনলিপির (ডায়েরী) উক্ত বইতে মুসলিম তুর্কী মিশনের যোদ্ধাদের সাথে মহামন্ত্রীর গোপন ষড়যন্ত্রে রাজা লক্ষণ সেনকে সরিয়ে বখতিয়ার খিলজি কে বাংলার সিংহাসন আরোহনের নীলনক্সার পুঞ্জীভ‚ত লোমহর্ষকর বাস্তব ঘটনাবলী অকপটে রচনা করে স্বীকার করলেন। এমনকি রাজা লক্ষন সেনের সভাকবি উমাপতি ধর পরে বখতিয়ার খিলজির সভাকবি হলেন কেন? ১২০২ সালে বিশ্ব বিখ্যাত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় তূর্কি শাসক সন্ত্রাসী বক্তিয়ার খিলজী ধ্বংস করেছিল। আটশত বছর পর চীন ও জাপানের দুই বিলিয়ন ডলার এবং ভারত সরকারের সাহায্যে দুইহাজার আঠারো সালের সেপ্টেম্বর মাসে ক্লাস শুরু হয়েছে। সুদূর তূর্কি দেশ থেকে এসে ১২০২ সালে বখতিয়ার খিলজি বাংলাদেশ দখল করল এবং রামষই পন্ডিতের লেখা “শূন্য পুরান” শীর্ষক বই বলছে (16th Century), সন্ত্রাসী তুর্কি মুসলমান বখতিয়ার খিলজি ও মুসলমান শাসকগণ বৌদ্ধগণকে মুসলমান বানিয়েছিলেন!
ধর্ম ও বর্ণবিদ্বেষের অভিশপ্ত রাজনীতির বিদায়ের পর ও আলোকিত জনতা উপলব্ধি করেছেন ধর্মীয় রাজনীতির বর্ণবাদ প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম নয়। সন্ত্রাসীদের হাতে প্রতিশোধের হত্যাযজ্ঞ রাজনীতি মানব জাতির জন্যে মর্মান্তিক অশনি সংকেত। বাংলাদেশে অমানবিক বিভিন্ন ইসলামিক সন্ত্রাসী দল সাম্রাজ্যবাদই তৈরী করেছে “আহা রে হজ যাত্রীর নামে সউদিতে উগ্র মৌলবাদী পাচার হচ্ছে (যায়যায়দিন,২ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮)।”
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলমন্ত্র এবং আজ জয় বাংলার ইতিহাসে ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে অমরত্বের বরপুত্র শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে চোখে আসে পানি! মনের একুশে অগ্নিগিরি জেগে ওঠে শহীদ মিনারের পাশে। হে মোর চিত্ত গণতীর্থে জাগোরে ধীরে / বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের শহীদ মিনারের স্মৃতির সাগর তীরে। বাংলাদেশে রক্তাক্ত ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের ক্ষেত্রে বাঙালির অখন্ড সাধনা এবং এই অখন্ড সাধনার ফলেই সালাম, বরকত, রফিকসহ অনেক নাম না জানা শহীদদের জীবন দান! ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রæয়ারী বাংলাদেশের ইতিহাসে জয় বাংলার শহীদ দিবস! এসো স্মরণ করি সালাম বরকত রফিক জব্বারের স্মৃতি, ভাইদের কুরবানি। ভাষা শহীদদের আন্দোলনের স্মৃতির সাগর তীরে বাংলা ভাষা এবং বাঙালির ধর্ম উদ্ভাসিত বাংলাদেশে!
বাংলাদেশে অমানবিক ধর্মান্ধ পাকিস্তানী রাজনীতির ভয়ঙ্কর ষড়য়ন্ত্র! বৌদ্ধ বাংলায় এয়োদশ শতাব্দীতে ইসলাম ধর্মকে তলোয়ার বানিয়ে তুর্কি সন্ত্রাসী মুসলমান বখতিয়ার খিলজি দখলে নেন। ১৬৬৬ সালে মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খান, বৌদ্ধ আরাকানীদের পরাজিত করে চট্টগ্রাম দখলে নেন। ধর্মান্ধ ইসলাম এমন এক অভিশাপ ধর্মান্ধ জটিল ধাঁধা, যা থেকে নিস্তার পাইনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা! সাতচল্লিশ থেকেই ধর্মান্ধ পাকিস্তানী রাজনীতির আধিপত্যবাদের দুর্বৃত্তপনা বাংলাদেশে কেন?
বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতাই ছিল বঙ্গবন্ধুর ধ্যানজ্ঞান। এই মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জনের জন্য জীবনের ১৩ বছরেরও বেশি সময় তিনি কাটিয়েছেন কারাগারে। ঘুরে বেড়িয়েছেন বাংলার আনাচে-কানাচে। তাঁর নেতৃত্বে ২৩ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৭১ সালের মার্চে এসে সশস্ত্র রূপ লাভ করে। তাঁর স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। ৯ মাসের রক্তস্নাত যুদ্ধ, ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান এবং দুই লাখ মা-বোনের সর্বোচ্চ ত্যাগের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ তথা বাঙালির জন্য জাতিরাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।
বাঙালি মুসলমান হত্যাযজ্ঞে পাকিস্তানের ধর্মান্ধ ইসলাম ও ইসলামি রাজনীতি বাংলাদেশকে অজগরের মতো গিলে ফেলেছে ! এই প্রসঙ্গে ইহা ও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৭১ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানের পাঞ্জাবি কবি আহমদ সেলিমের লেখা “সদা জিও বাংলাদেশ” শীর্ষক কবিতা করাচীর উর্দূ পত্রিকা ‘আওয়ামি আওয়াজে’ প্রকাশিত হলে; তদানিন্তন ইয়াহিয়া সরকার উক্ত কবির রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধে ছয়মাস জেল ও ডজন খানেক বেত্রাঘাতের শাস্তি দিয়েছিল।
পাকিস্তান ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধানে লিখে বাংলাদেশ জয়ের বিনিময়ে দেখলেন রক্তপাত এবং মৃত্যুর বিভীষিকা সাথে এই দলের সদস্যরা হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট, সংখ্যালঘু নির্যাতন, হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকজনকে জোড়পূর্বক ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা , এটি জয় নাকি পরাজয়? একি ন্যায় নাকি অন্যায়? একি বীরত্ব নাকি চরম পরাজয়? নিরপরাধ শিশু এবং নারীদের হত্যা করা কি বীরের কাজ? অন্য রাজ্য ধ্বংস করে কি নিজ রাজ্যের সমৃদ্ধি করা যায়? কেউ স্বামী, কেউ পিতা, কেউ সন্তান হারিয়ে হাহাকার করেছে-এসব মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ কি জয় নাকি পরাজয়? আমার বাংলাদেশে, আমার জন্মভ‚মি আমার কাছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থভ‚মি। “অশোক যাহার কীর্তি গাইল. / হিমালয় থেকে জলধি শেষ।”
ইসলাম ধর্ম কে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে যেন ব্যবহার করা না হয়, ইহাই বাংলাদেশের আপামর জনসাধারনের মত ও ইচ্ছা । বাঙালি এনলাইটেনমেন্ট যুগে জনৈক জনপ্রিয় কবির ভাষায়, “বিশ্বমানব হবি যদি শাশ্বত বাঙালি হও, সম্পূর্ণ বাঙালি হও।” মুসলমান না হলে কি বাংলাদেশের আদর্শবান নাগরিক হওয়া যায় না? ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে চারিদিকে শুধু মানুষের আহাজারি, হাহাকার। বিভেদ বিদ্বেষের নামই কি রাজনীতি? ধর্মান্ধের হিংসা উন্মত্ত রাজনৈতিক ধর্ম মানবতাকে ধ্বংস করেছে! ধর্মের নামে‘ধর্ম যার, যার, সংবিধান সবার’! ১০ বছরে বাংলাদেশে ৯ লক্ষ হিন্দু কমেছে (টরন্টোর বাংলা কাগজ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১২)
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির (বর্তমানে প্রয়াত) গোলাম আযমের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার দলকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে উল্লেখ করে। ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই ঐতিহাসিক এ রায়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের বিচারের পথ উন্মুক্ত হয়। এরপর বিভিন্ন মহল থেকে বিচারের দাবি জোরালো হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৮ বছরেও এ-সংক্রান্ত আইন সংশোধন না হওয়ায় ঝুলে আছে বিচারপ্রক্রিয়া। এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি ও নেতারা এক সময় জোরালো প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন তারা নীরব। কেউ কেউ বলছেন, সরকারের ‘ধীরে চলো’ নীতির কারণেই জামায়াতের বিচারের বিষয়টি ঝুলে আছে। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন শহীদদের পরিবার ও বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, বিচারের মাধ্যমে জামায়াত নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির যে আস্ফালন এখন চলছে, তা দেখতে হতো না।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!