সোনা কান্তি বড়ুয়া : নির্লজ্জ পাকিস্তানী সরকার ১৯৪৭ সালে ১৪ আগস্ট ইসলাম ধর্মের নাম দিয়ে বার শত মাইল দূরের বাংলাদেশকে দখল করেছিল! ১৯৪৮ সালে (5th MARCH) কায়দে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাঙ্গালী জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে বাংলাদেশের বাংলা ভাষা বন্ধ করে দিল! ইসলাম ধর্মকে তলোয়ার বানিয়ে চিটিংবাজ পাকিস্তান ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারী বাংলা ভাষা আন্দোলনে পাকিস্তান রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য জয় বাংলার সালাম বরকত রফিক জব্বার সহ অনেক নাম না জানা শহীদদের হত্যা করেছিল! আল্লাহ পাক যেন সকলকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিফ করেন। আমিন!
বাংলাদেশে পাকিস্তানের বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞের ফল আল্লার গজব এবং পাকিস্তানকে এখনই ঋণ দেবে না IMF.! ভিক্ষায় নামছে পাকিস্তানের মানুষ, বাঁচাতে পারবে আইএমএফ’র ঋণ? ইসলাম ধর্মের নাম দিয়ে লুটেরা পাকিস্তান রুখো! বাঙ্গালী জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে বাংলাদেশে দিনের পর দিন অমানবিক পাকিস্তান বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞ করেছে! পাকিস্তানের বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞের ফল পাকিস্তান আজ সর্বনাশের পথে চলেছে! ধর্মান্ধ পাকিস্তানের ইসলামি রাজনীতির এতো উলঙ্গ দর্প বাংলাদেশে কেন? মানুষের মনুষ্যত্ব কেড়ে নেওয়াটাই পাকিস্তানের ও জামাতের হিংসায় উন্মত্ত সা¤প্রদায়িক রাজনীতিতে পাকিস্তানের বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞ!
অন্ধকার জীবনের অভিমুখে পাকিস্তানে আল্লার গজব কেন? বাংলাদেশে পাকসেনা ও রাজাকারদের বাঙ্গালী গণহত্যায় পাকিস্তানে আল্লার গজব! ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্ক সরকার পাকিস্তানী সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে আসতে বারণ করল ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্কে না যেতে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার বলেছে, তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও কমে ৩১০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ভারতকে হটিয়ে বাংলাদেশকে কাছে চায় পাকিস্তান সরকার! দিনের পর দিন অমানবিক পাকিস্তান বাংলাদেশের বাঙ্গালীর ২৩ বৎসরের (১৯৪৭-১৯৭১) করুণ ইতিহাস, বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস।
প্রতিটি ধর্মে আলাদা আলাদা কিতাব, আলাদা নবী, আলাদা মহামানব, আলাদা ঈশ্বর! তাতে পাকিস্তানের ও বাঙ্গালী রাজাকারদের অসুবিধা কেন? কেন সকলকে মুসলমান বানাতে হবে? কেন সকল নবী পয়গম্বরকে ইসলামের নবী বলতে হবে? কেন সকলের ধর্মকে বিনষ্ট করার চেষ্টা করতে হয়? কেউ কি তার বাড়ী জমি অন্যকে দান করে দেয়? তাহলে বেহেস্ত দেবার প্রলোভন টা কী জালিয়াতি নয়? মুসলমান ছাড়া সকলেই কাফের!
মন্দির, মসজিদ, গির্জা, প্যাগোডা সব কিছুর আলাদা আলাদা সম্মান মর্যাদা বহন করে। মুসলমানরা অন্য ধর্মের ক্ষতিগ্রস্ত হলে বলে আল্লার গজব আবার নিজেদের ক্ষতি হলে বলে এটা পরীক্ষা এটা ভ্রান্ত ধারনা। আল্লার ঘর বা ঈশ্বরের ঘর বলে কোনো স্থাপনা হলে তিনি রক্ষা করতে পারতো। ‘পরীক্ষা’ বা ‘গজব’ বলেও কিছু নেই। তোমারটা ধ্বংস হলে ‘গজব’ আমারটা ধ্বংস হলে পরীক্ষা- এই চিন্তা শিশুতোষ মাত্র!
নানা ষড়যন্ত্রের দুর্ভেদ্য প্রাচীর বিদীর্ণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণে ঘোষণা করেন: “কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় ২৩ বৎসরের করুণ ইতিহাস, বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। ২৩ বৎসরের ইতিহাস মুমূর্ষু নর-নারীর আর্তনাদের ইতিহাস। বাংলার ইতিহাস- এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আয়ুব খান মার্শাল ল’ জারি করে ১০ বছর পর্যন- আমাদের গোলাম করে রেখেছে। ১৯৬৬ সালে ৬-দফা আন্দোলনে ৭ই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯ এর আন্দোলনে আয়ুব খানের পতন হওয়ার পরে যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন, তিনি বললেন, দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন, গনতন্ত্র দেবেন – আমরা মেনে নিলাম। তারপরে অনেক ইতিহাস হয়ে গেলো, নির্বাচন হলো।”
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সাথে হিন্দু বৌদ্ধ রাষ্ট্রদ্বয় (ভারতও ভুটান) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশের বিজয় হয় : (১) গণতস্ত্র (২) জাতীয়তাবাদ (৩) সমাজতস্ত্র এবং (৪) ধর্মনিরপেক্ষতা। মানবাধিকারের আলোকে জামায়াতের উগ্র সা¤প্রদায়িকতার বাহক শক্তিটি ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে জনগণের সম্পদ হরিলুট করেছে! পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম রাষ্ট্রপতি হত্যাকান্ডের পর, বাঙালি হত্যাযজ্ঞই কি বাংলাদেশে পাকিস্তানী ইসলাম?
বাংলা ভাষার প্রথম বই বৌদ্ধ চর্যাপদ এবং বাংলা ভাষার প্রথম বিপ্লবী মিনার’। বৌদ্ধ পাল রাজত্বের আধিপত্যের প্রেক্ষাপটে এবং ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পূনরুত্থান কালে চর্যাপদের জন্ম আধুনিক গণতান্ত্রিক অধিকারের মেনিফিষ্টো হিসেবে। এর মধ্যে নিহিত রয়েছে বাঙালীর সর্বপ্রথম গনতন্ত্রের বীজ ‘বাক স্বাধীনতার অধিকার’। বৌদ্ধ কবি ও সাধকগন বিপুল প্রজ্ঞা ও ক্ষুরধার বৌদ্ধদর্শন প্রয়োগ করে মনুষ্যত্বের উন্মেষ বিকাশে চর্যাপদের (৮ম – ১২শ শতাব্দী) এক একটি কবিতা রচনা করতেন। মানুষের দেশ মানুষের মনেরই সৃষ্টি।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চে নির্লজ্ চিটিংবাজ পাকিস্তান ইসলামের নাম দিয়ে বাঙ্গালী জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে বাংলাদেশে “অপারেশন সার্চ লাইট” নামে পাকিস্তান রাজনীতির ষড়যন্ত্রে বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞ ৩০ লক্ষ বাংলাদেশী মানুষ হত্যা, ২ লক্ষ মা-বোনকে ধর্ষন এবং বুদ্বিজীবি হত্যা করেছিল! আল্লাহ পাক যেন সকলকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিফ করেন। আমিন পাকিস্তানে আল্লার গজব আরও বিপাকে ধুঁকতে থাকা নির্লজ্জ পাকিস্তান। খাবার ও জ্বালানির বাড়তি দামের লাগাম টানা এবং চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে মরিয়া পাকিস্তান সরকার। তাই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল – আইএমএফ’র ঋণ নিয়ে সংকট সামলানোর চেষ্টা করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত লিখেছেন, “জামায়াতের উগ্র সা¤প্রদায়িকতার বাহক শক্তিটি ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে জনগণের সম্পদ হরিলুট করেছে!”
১৯৭২ সালের ৪ই নভেম্বর বাংলাদেশ গণপরিষদ গৃহীত এবং ১৯৭২ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রথম খন্ডে প্রকাশিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানানুসারে বাংলাদেশ ইসলাম ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র নহে। হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্ঠান সহ সর্ব ধর্মের মানুষ একত্রে মানুষের ভাই বোন আত্মীয় স্বজন। কোন মানুষ অন্য মানুষের শত্রু নয়। জামাতের রাজনীতি হিন্দু বৌদ্ধদের মুসলমান বানষচ্ছে!
আফগানিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ! মুসলমানদের রাজনীতি বৌদ্ধদের হাত থেকে বৌদ্ধ দেশ এবং আফগানিস্তানের বামিয়ান বুদ্ধ মূর্তি কেড়ে নিল! সুদূর আরব থেকে এসে ৭১১ সালে মোহাম্মদ বিন কাশিম SIND দখল করে নিল!
পাকিস্তান বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ
২. আফগানিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
৩. কাজাখস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
৪. উজবেকিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
৫. তাজিকিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
৬. আজার বাই জান বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
৭. মালদ্বীপ বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
৮. বাংলাদেশ ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ,অবশিষ্ট বিলুপ্তি সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
৯. মালয়েশিয়া বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
১০. ইন্দোনেশিয়া বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
১১. খোটান বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
১২. তুর্কমেনিস্তান বৌদ্ধ দেশ ছিল এখন মুসলিম দেশ।
১৩.কিরগিস্তান ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
১৪. ইরান প্রদেশ ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
১৫. বেলুচিস্তান প্রদেশ ছিল বৌদ্ধ দেশ এখন মুসলিম দেশ।
মহামতি সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ভারত গোলেমালে হিন্দু ইন্ডিয়া এবং মুসলমান পাকিস্তান হল কেন? বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে বাহাত্তরের সংবিধান বাদ দিয়ে রাষ্ঠ্রধর্মের ফেসবুকে কোরাণ অবমাননার দুর্নীতি কেন? বৌদ্ধদেশে বৌদ্ধ রাজনীতির ইসলামীকরণ হ’ল কেন? হিন্দু যেই মানব, মুসলমান ও সেই মানব। মানুষ মানুষকে হিংসা করা আইনত: দন্ডনীয়! হিন্দু মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্ঠানসহ সকল মানব সন্তান মিলে আমাদের মানবজাতি। রাজনীতি ও ধর্ম মানবাধিকারকে ধ্বংস করা অমানবিক অপরাধ বলে কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ভাষায়, “গোত্র দেবতা গর্তে পুরিয়া, / এশিয়া মিলাল শাক্যমুনি।
প্রাচীন বাংলাদেশে মহাস্থানের পুন্ড্রবর্দ্ধনে (বগুড়া) এবং পাহারপুরে (রাজশাহীর সোমপুরী বিহার) বসে গৌতমবুদ্ধ দিনের পর দিন বাঙালি সমাজকে দান, শীল, ভাবনা এবং সুন্দর ভাবে জীবন যাপনের শিক্ষা দিয়েছেন। ফেসবুকে কোরাণ অবমাননার দুর্নীতি বধে বাহাত্তরের সংবিধান! স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে নির্মূল করতে ‘বিশ্বমানবতার আলোয় উদ্ভাসিত বাহাত্তরের সংবিধান! ধর্মান্ধ বখতিয়ার খিলজি ধ্বংস করেছে সপ্তম শতাব্দীর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ BUDDHIST বিশ্ববিদ্যালয় নালান্দাকে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করছে! পৃথিবীতে এমন একটা জাতি আছে যারা যুগে যূগে ধর্মের দোহাই দিয়ে ধ্বংস করেছে!
শান্ত বিশ্বকে যুদ্ধের মাধ্যমে অশান্ত করেছে। সুন্দর সভ্যতা সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছে। ধ্বংস করেছে সপ্তম শতাব্দীর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় নালান্দাকে। এই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সুন্দর বস্তু হচ্ছে বুদ্ধ মূর্তি, ধর্মের মিথ্যা মতবাদ দিয়ে তারা ১৯৯২ সালে ধ্বংস করেছে বিশ্ব ঐতিহ্যর্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন আফগানিস্থানের সে বামিয়ান বুদ্ধ মূর্তি। দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে ৭৭০ শতাব্দী পর্যন্ত বামিয়ান বৌদ্ধ সংস্কৃতির তীর্থস্থান ছিল। পুনরায় ৮৭০ থেকে ৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত আবার বৌদ্ধ সংস্কৃতির কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। যারা কলা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছে তাদেরকে মা নবজাতি কখনও ক্ষমা করবে না।
রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী “জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। আইএস নাম দিয়ে বাংলাদেশকে অচল করার চেষ্টা হয়েছে। শোলাকিয়া ঈদগাহে হামলা করা হলো। ক্রমাগতভাবে হামলা হতে থাকলো। এর মধ্যেই হলি আর্টিজানে হামলা হলো। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষ বিশেষ করে আমেরিকা বলেছিল বাংলাদেশ শেষ হয়েছে গেছে। সেখান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
গেøাবাল টেররিজম ইনডেক্স বা বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাপক উন্নতি লাভ করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এ সূচকে বাংলাদেশের আগে রয়েছে কেবল ভুটান। কিন্তু এ অবস্থানে থেকে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সফলতা অর্জন করলেও এখানে সা¤প্রদায়িক সহিংসতা থেমে নেই। মনে রাখতে হবে, সা¤প্রদায়িকতা ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দেশে সা¤প্রতিক সময়ে কয়েকটি সা¤প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে। নড়াইলে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে যেমন সংখ্যালঘু হিন্দু স¤প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা করা হয়, এর আগে একই প্যাটার্নের হামলা আমরা দেখেছি। গ্রামেও যেভাবে এসব সা¤প্রদায়িক হামলা বিস্তার লাভ করছে, তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। উদ্বেগের আরেকটি কারণ হলো, এসব হামলা হলেও জনগণ তা প্রতিহত করতে এগিয়ে আসছে না। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এসব হামলার কারণে দেশের সংখ্যালঘু স¤প্রদায়, বিশেষত হিন্দু স¤প্রদায়ের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ধরনের সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।
গত ২৬ নভেম্বর ২০২২-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের বৈঠকের বিষয় নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, স¤প্রতি জঙ্গিরা দেশে যে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বৈঠকে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামে আপনারা দেখেছেন, একটি দলকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। (প্রথম আলো, ২৭ নভেম্বর ২০২২)। হিজরতের নামে (হরকাতুল জিহাদ, জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), আনসার আল ইসলামের কিছু সদস্য মিলে ) ২০১৭ সালে নতুন করে এই উগ্রবাদী সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। চিটিংবাজ ধর্মান্ধ এই সংগঠনটি মূলত তরুণদের দলের সদস্য হিসেবে সংগ্রহ করে এবং জিহাদের কথা বলে চরাঞ্চলে ও সীমান্তবর্তী পাহাড়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল।
জঙ্গিবাদের শিকড় আমাদের সমাজের গভীরে কতটুকু প্রোথিত হয়েছে তার নির্মোহ অনুসন্ধান প্রয়োজন। আর জঙ্গিবাদের মূল উৎপাটনের জন্য শুধু পুলিশি ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল না থেকে অন্য কিছুর দিকেও জরুরি মনোযোগ দেয়া দরকার। কারা জঙ্গিবাদে জড়িত হচ্ছে, কেন হচ্ছে- এ ব্যাপারে ওপরভাসা ধারণা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এখন এ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা হওয়া উচিত। মনে করা হয় যে, বর্তমানে জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক আন্দোলন কিংবা আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য লক্ষ্যে পৌঁছানোর এক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা জঙ্গি তালিকায় নাম লেখাচ্ছে তারা একটা ভুল বিশ্বাস নিয়ে এই পথে পা বাড়াচ্ছে। তারা ধর্মের জন্য ও শোষণ-বঞ্চনা অবসানের লক্ষ্যে কাজ করছে বলে মনে করছে। ‘মানুষ ধর্মের জন্য নয়, ধর্ম হল মানুষের জন্য।’
আসলে তারা বড় দেশগুলোর স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সরাসরি সৈন্য নামিয়ে যুদ্ধ ঘোষণার পরিবর্তে এখন বৃহৎ দেশগুলো জঙ্গি লেলিয়ে দিচ্ছে। তাই দেশে দেশে জঙ্গি তৎপরতা থামছে না। নানা নামে নানা কৌশল প্রয়োগ করে জঙ্গিরা তাদের অপতৎপরতা চালিয়েই যাচ্ছে। মূলত ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের দুটি উঁচু ভবন ‘টুইন টাওয়ার’-এ বিমান হামলার পর থেকে সন্ত্রাসবাদ গোটা দুনিয়ায় পরিচিতি পায়। সে সময় এই হামলার জন্য জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা ও এর প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করা হয়। আমেরিকার সৈন্যরা আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে ২০১১ সালে পাকিস্তানের এবোটাবাদে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে হত্যা করে হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিয়মিত জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটছে। ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই রাতে ফ্রান্সে নৃশংস ট্রাক আক্রমণে প্রাণ হারালেন ৮৪ জন এবং আরো অধিকসংখ্যক আহত হলেন। এক্ষেত্রে একজন ট্রাকড্রাইভার একটি ট্রাক ফ্রান্সের জাতীয় দিবসে দেশটির নিস নামক শহরে আনন্দ-উল্লাসকারী অসংখ্য মানুষের ওপর দিয়ে চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এটি একটি নতুন কৌশল, যেমনটি নতুন কৌশল ছিল বিমান হাইজ্যাক করে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে হামলা। আবার দেখা যায় এক ব্যক্তি গুলি চালিয়ে অনেককে হতাহত করে, যেমনটি দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরল্যান্ডোতে একটি নৈশক্লাবে। তাছাড়া কয়েকজন মিলে ১৩ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায় ফ্রান্সের প্যারিসে, ২০১৬ সালের ২২ মার্চ বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে এবং ২৮ জুন, ২০১৬ তারিখে তুরস্কের আতাতুর্ক বিমানবন্দরে। এছাড়া গত কয়েক বছরে ফ্রান্স, জার্মানি ও লন্ডনেও একাধিকবার জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ধরন ও বাস্তবায়ন পদ্ধতিতে ক্ষেত্রবিশেষে ভিন্নতা থাকলেও এসব জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড একই সূত্রে গাথা।
ইসলাম ধর্মের বিকৃত ও মনগড়া ব্যাখ্যাদানকারী উগ্রবাদীদের প্ররোচনা ও পরিকল্পনা রয়েছে এগুলোর পেছনে। যারা এ ধরনের সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনা করছে, প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, অর্থায়ন করছে এবং বাস্তবে ঘটাচ্ছে এরা প্রায় সবাই দেখা যাচ্ছে ইসলাম ধর্মের অনুশাসনের অপব্যাখ্যাকারী ও বিকৃত ব্যাখ্যাদানকারী বিপথগামী ব্যক্তি। পৃথিবীর কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠীর নাম তালেবান, আল কায়েদা, বোকোহারাম, আল শাবাব, ইসলামিক স্টেট বা আইএস। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডগুলো দেশীয় জঙ্গিরাই ঘটিয়েছে। দেশে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং হিজবুত তাহরীর নিষিদ্ধ হলেও এখনো তৎপর রয়েছে।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!