স্পোর্টস ডেস্ক : নেপালে চলমান নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ। এই বড় জয়ের মূল কারিগর অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। হ্যাটট্রিক উপহার দেন তিনি। সাফ টুর্নামেন্টে সাবিনার দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের রেকর্ড এটি। এ ছাড়া মনিকা চাকমা, সিরাত জাহান স্বপ্না ও রিতু পর্ণা চাকমা একটি করে গোল করেন। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। এ নিয়ে টানা দুই জয়ে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলা চূড়ান্ত হয়েছে।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন সাবিনা খাতুন। মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচে জোড়া গোল উপহার দেন তিনি। এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করলেন। এর আগে ২০১৬ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ ৫-০ গোলে হারিয়েছিল আফগানিস্তানকে। সেবার সাবিনা একাই ৫ গোল করেন। এ নিয়ে সাফ টুর্নামেন্টে মোট ১৯টি গোল উপহার দিলেন তিনি। গতকাল কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়টা অনুমিতই ছিল। তবে বড় ব্যবধানে জয়ের লক্ষ্যে কথা বলেছিলেন সাবিনা খাতুনরা। লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন তারা। বড় জয়ই পেয়েছেন মেয়েরা। এ জয়ে সবার মুখে হাসি ফুটেছে। আনন্দ উচ্ছ্বাস এখন বাংলাদেশ শিবিরে। নারী দলের কোচ কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন জানান, গোল পার্থক্য বাড়ানোর জন্য পাকিস্তানের

বিপক্ষে বড় জয়ের প্রয়োজন ছিল। সাবিনারা জয় এনে দিয়েছেন। পরিকল্পনামাফিক খেলেছেন তারা। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেন অধিনায়ক সাবিনা। অধিনায়কোচিত পারফরম্যান্স দেখালেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার ৩০, ৩৫ ও ৫৮ মিনিটে গোল তিনটি গোল উপহার দেন বাংলাদেশের ‘গোল-মেশিন’ সাবিনা।

খেলার শুরু থেকেই পাকিস্তানের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশের মেয়েরা। একের পর এক গোল উৎসবে মেতে ওঠেন তারা। ৩ মিনিটে সাবিনার শট পাকিস্তানের ডিফেন্ডার মিশেল আকরাম রিসিভ করতে গিয়ে পড়ে যান। কিন্তু ওই গতিময় বলেই মনিকার জোরালো শট খুঁজে নেয় জাল। প্রথম গোল হওয়ার পরই দর্শকদের উদ্দেশে স্যালুট প্রদর্শন করেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। ১৮ মিনিটে সাবিনার থ্রু পাসে বক্সে থাকা সিরাত জাহান বল পান। তার আলতো টোকায় ম্যাচের দ্বিতীয় গোল আসে (২-০)। ৩০ মিনিটে মনিকা মাঝমাঠ থেকে বল পায়ে বক্সের একটু ওপরে এসে সাবিনার উদ্দেশে বল বাড়িয়ে দেন। পাকিস্তানের ডিফেন্ডার হাজেরা খান ক্লিয়ার করতে গেলে বল তার পায়ে লেগে উঠে যায় ওপরে। দারুণ টোকায় সুযোগ কাজে লাগান সাবিনা (৩-০)। ম্যাচে সাবিনা নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেছেন ৩৫ মিনিটে। আঁখির লং পাস ধরে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ান সানজিদা। গোলমুখ থেকে বল পেয়ে অনায়াসে বাকি কাজ সারেন সাবিনা (৪-০)। বিরতিতে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে পাকিস্তানের জুলফিয়া নাজির বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে কাটিয়ে এগিয়ে যান। কিন্তু অরক্ষিত গোলবারে থেকে ডিফেন্ডার আঁখি সেই আক্রমণ ক্লিয়ার করেন। এরপর ৫৯ মিনিটে মারিয়ার ক্রস থেকে দারুণ হেডে সাবিনা হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেছেন (৫-০)। কৃষ্ণার বদলি হিসেবে নামা ঋতুপর্ণার গোলও ছিল দেখার মতো। ৭৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট পাকিস্তানের গোলরক্ষক শাহিদ বুখারির মাথার ওপর দিয়ে জালে জড়ায় (৬-০)। পাকিস্তানের মেয়েরা কোনো গোল শোধ করতে পারেননি। ফলে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। দল হারলেও পাকিস্তানের কোচ সাবিনা খাতুনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।