স্পোর্টস ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি সিরিজ আগেই ঘরে রেখে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার ঘুরে দাঁড়িয়ে ওয়ানডে সিরিজও নিজেদের ঘরে রেখে দিলো টাইগ্রেসরা। শেষ ওয়ানডেতে পাকিস্তান নারীদের ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে জ্যোতি-ফাহিমারা। এতে করে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ এ জয় তুলে নিলো টাইগ্রেসরা।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অঘোষিত ফাইনালে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তুলেছে সফরকারীরা। সর্বোচ্চ ৮৪ রান করে অপরাজিত থাকেন সিদরা আমিন। বাংলাদেশের হয়ে ২৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন নাহিদা আক্তার। জবাবে বাংলাদেশ ৭ উইকেট ও ২৬ বল হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছে।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার সিদরা আমিন ও সাদাফ শামস। প্রথম উইকেটের দেখা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০ ওভার পর্যন্ত। ব্যক্তিগত ৩১ রান করে শামস আউট হলে ভাঙে ৬৫ রানের উদ্বোধনী জুটি।
তিন নম্বরে নামা মুনিবা আলি উইকেটে থিতু হয়েছিলেন। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ রান। এরপর আর বড় কোনো জুটি গড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখেছে স্বাগতিকরা। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার ছাড়া বাকি ৮ জনের মধ্যে মাত্র একজন দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছে।
পাকিস্তানের ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মাঝে এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন সিদরা আমিন। তার অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসে ভর করেই দেড়শো পেরোনো সংগ্রহ গড়ে পাকিস্তান। তবে শেষ দিকের ব্যাটাররা সিদরাকে যোগ্য সহায়তা করতে ব্যর্থ হওয়ায় পাকিস্তানের সংগ্রহ বড় করতে সক্ষম হয়নি।
বাংলাদেশের হয়ে নাহিদা আক্তার ৩টি, রাবেয়া খান ২টি ও ফাহিমা, নিশি, স্বর্ণা একটি করে উইকেট লাভ করেন।
পাকিস্তানের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ১২৫ রান সংগ্রহ করে ফারজানা হক ও মুর্শিদা খাতুন। ১১৩ বলে ৬২ রান করা ফারজানাকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন নাসরা সান্ধু। তিন রান পর আরেক ওপেনার মুর্শিদা খাতুনকে নিদা দারের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান নাসরা। তার আগে মুর্শিদা ১০৬ বলে ৬ চারের সাহায্যে ৫৪ রানের ইনিংস উপহার দেন। একই রানে কোনো বল খেলার আগেই রান আউটের শিকার হন ফাহিমা খাতুন।
চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক জ্যোতি ও শবনম মুশতারি বাকিটা সময় নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত নিগার জ্যোতি ২৫ বলে ১৮ রান ও শবনম মুশতারি ৩০ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তানের হয়ে নাসরা সান্ধু ২টি উইকেট তুলে নেন।
দ্বিপাক্ষিক সিরিজে বাংলাদেশের এটা বাংলাদেশের চতুর্থ সিরিজ জয়। আর পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রথম কোনো সিরিজ জয় টাইগ্রেসদের। ২০১৪ সালে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তাদের ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল মেয়েরা। এছাড়া ২০২১ সালে জিম্বাবুয়েতে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে এবং ২০১৬ সালে বৃষ্টির কারণে প্রথম দুই ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
এই জয়ে আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে টপকে সাত নম্বরে উঠেছে বাংলাদেশ। ১২ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ১১। ছয় ম্যাচে সমান ১১ পয়েন্ট অস্ট্রেলিয়ারও। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ১০। ৯ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ভারত।