অনলাইন ডেস্ক : সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার ঠেকাতে গোপনে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন দেশটির জয়েন্টস চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি। এর মাধ্যমে তিনি ক্ষমতার অতিরিক্ত প্রয়োগ করেছিলেন বলে অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগ চেয়েছে রিপাবলিকান পার্টির কয়েক জন আইন প্রণেতা। তবে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জেনারেল মিলির প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের।

আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের সময়ে নিজ কর্তৃত্ব ছাড়িয়ে পদক্ষেপ নেওয়ায় জেনারেল মিলির পদত্যাগের দাবি উঠেছে। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার দুই দিন পর জেনারেল মিলি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেন। তার আশঙ্কা ছিল তত্কালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করতে পারেন। এমনকি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিতে পারেন। এই আশঙ্কায় জেনারেল মার্ক মিলি চীনের সেনাপ্রধানকেও ফোন করেছিলেন। পুলিত্জার পুরস্কারজয়ী সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড এবং ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টার রবার্ট কস্টার লেখা ‘পেরিল’ নামের বইয়ের অংশবিশেষে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ সংক্রান্ত খবর সামনে আসার পরই মিলির পদত্যাগ দাবি করেছে রিপাবলিকান পার্টি।

অনেক রিপাবলিকানের মতে, নির্বাচিত বেসরকারি নেতার কর্তৃত্বকে লংঘন করেছেন জেনারেল মিলি। সিনেটর মার্কো রুবিও দ্রুততম সময়ের মধ্যে জেনারেল মিলিকে বরখাস্ত করার জন্য বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, মিলি যা করেছেন তা এক বিপজ্জনক নজির। রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল জেনারেলের ব্যাপারে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। ২০১৮ সালে মিলিকে নিয়োগ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি মিলির বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি খুবই অসম্মানজনক।

তবে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন সাকি এক সাংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জেনারেল মিলির নেতৃত্ব, দেশপ্রেম এবং সংবিধানের প্রতি আনুগত্যের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। এদিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজেও সাংবাদিকদের বলেছেন, মিলির প্রতি আমার বড় আস্থা আছে।

এদিকে মিলির কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে জেনারেলের কোনো অনৈতিক কাজ করার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, তিনি নিয়মিত বিভিন্ন দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের (কাউন্টারপার্ট) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মিলির মুখপাত্র ডেভ বাটলার বলেন, গত অক্টোবর ও জানুয়ারিতে চীনের কাউন্টারপার্টকে তার ফোন করাটা ছিল কাজের অংশ। কৌশলগত স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আশ্বস্ত করার জন্যই ফোন করেছিলেন। এদিকে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, জেনারেল মিলির প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনেরও পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে।