অনলাইন ডেস্ক : সাবেক আইএস বধূ শামীমা বেগম ব্রিটিশ জনসাধারণের কাছে তাকে ‘দ্বিতীয় সুযোগ’ দেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। ‘দ্য রিটার্ন: লাইফ আফটার আইসিস’ নামের নতুন এক তথ্য চিত্রে তিনি এই আবেদন জানান। ছবিটি বুধবার টেক্সাস-ভিত্তিক সাউথ বাই সাউথ ওয়েস্ট (এসএক্সএসডাবøুু) উৎসবে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হয়েছে।
তথ্যচিত্রটির নির্মাতারা ২০১৯ সালে বেশ কয়েক মাস ধরে সিরিয়ার কুর্দি চালিত রোজ শরণার্থী শিবিরে শামীমা বেগম এবং অন্যান্য পাশ্চাত্য মহিলাদের সাথে কথা বলেছেন। সেখানে শামীমা বলেন, ‘আমার নাম শামীমা। আমি যুক্তরাজ্যের অধিবাসী। আমি বয়স ১৯ বছর।’ তিনি বলেন, ‘আমি যুক্তরাজ্যের লোকদের বলব, আমাকে দ্বিতীয় সুযোগ দিন। কারণ আমি যখন চলে আসি তখন আমি নাবালিকা ছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুধু চাই তারা যেন মিডিয়াতে আমার সম্পর্কে যা শুনেছে, তার সব বিশ্বাস না করে।’
তথ্যচিত্রটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া হোদা মুথানা এবং কানাডিয়ান কিম্বারলি পোলম্যানসহ আইএসে যোগ দেয়া অন্যান্য পাশ্চাত্য মহিলাদের সাক্ষাতকারও দেখানো হয়েছে। তথ্যচিত্রটির পরিচালক আলবা সোটোরা এএফপি নিউজ এজেন্সিটিকে বলেছেন, ‘শামিমার সাথে যখন আমার সাক্ষাত হয়েছিল তখন সে শোকে পাথর ছিল।’ তিনি বলেন, ‘আমি যখন সেখানে ছিলাম তখন সে কেবল তার বাচ্চাটি হারিয়েছিল, সে এতটাই শোকগ্রস্থ ছিল যে কাঁদতেও পারছিল না। আমি মনে করি এটি কেবল বেঁচে থাকা, বেঁচে থাকার জন্য নিজেকে রক্ষা করা দরকার।’
প্রসঙ্গত, শামিমা বেগমের ঠাঁই এখন উত্তর পূর্ব সিরিয়ার এক ক্যাম্পে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে লন্ডন ছেড়ে চলে তিনি চলে গিয়েছিলেন সিরিয়ায়, আইএস জঙ্গি দলে যোগ দেবেন বলে। সিরিয়ায় পৌঁছবার কিছু দিনের মধ্যেই বিয়ে করেছিলেন ইয়াগো রিয়েডজিক নামের এক ওলন্দাজ বংশোদ্ভ‚ত যুবককে। বিয়ের পরে ৩টি সন্তানের জন্ম দেন শামিমা। কিন্তু তিন জনেরই মৃত্যু হয় শৈশবে। তৃতীয় সন্তানের জন্ম হয়েছিল একটি শরণার্থী শিবিরে। ফুসফুসের সংক্রমণে সেখানেই মারা যায় শিশুটি। তৃতীয় সন্তানের জন্ম হয়েছিল একটি শরণার্থী শিবিরে। ফুসফুসের সংক্রমণে সেখানেই মারা যায় শিশুটি।
২০১৯ সালে আবার ফিরতে চেয়েছিলেন লন্ডনে। কিন্তু পারেননি। শামিমা এখন লন্ডনে ফিরে যেতে মরিয়া। পরিবর্তন এসেছে তার আচার আচরণ এবং বেশবাসেও। অতীতে কট্টর শামিমার পরনে সবসময় থাকত কালো নিকাব। এখন সেই শামিমা ক্যামেরায় ধরা দিয়েছেন জিনস, টি শার্ট এবং কালো চশমায়। শোনা যাচ্ছে, শামিমা তার অতীতকে ভুলে নতুন করে এগিয়ে যেতে চাইছেন। মুছে ফেলতে চাইছেন ‘জিহাদি’ পরিচয়। ওই ক্যাম্পের আরও অনেক মহিলাই সাবেক পোশাক পরার অভ্যাস ছেড়ে দিয়েছেন। শামিমা তাদের ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। সূত্র : ইউকে স্টান্ডার্ড।