অনলাইন ডেস্ক : ‘এক রাতের ব্যবধানে কোটিপতি’, আক্ষরিক অর্থে এমন ঘটনাই ঘটেছে আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায়। ১৫ কেজি পাথর বিক্রি করে পেয়েছেন প্রায় ২৯ কোটি টাকা। তবে ঠিক সাধারণ কোনো পাথর নয়। এটি রত্নপাথর। নাম তানজানিয়াট। আর অর্থ পেয়েছেন দেশটির সানিনিউ লাইজার নামের এক ক্ষুদ্র খনি ব্যবসায়ী।

তানজানিয়ায় ২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি। দেশটির ভবিষ্যৎ বদলে দেওয়ার জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খনি ব্যবসায়ীকে অনুমোদন দেন খনিজ সম্পদ আহরণের জন্য। ফলে লাইজারের মতো অনেকেই এই ব্যবসা করে থাকেন।

লাইজার যে এলাকায় এই খনি খনন করে থাকেন, সেই এলাকায় পাওয়া যায় এই রত্নপাথর তানজানিয়াট। লাইজার এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি তানজানিয়াট পেয়েছেন। এর একটির ওজন ৯ কেজি ২০০ গ্রাম আর অন্যটির ওজন ৫ কেজি ৮০০ গ্রাম। গত বুধবার দেশটির মানিয়ারা এলাকায় পাথর দুটি বিক্রি করেন তিনি। পাথর দুটি কিনেছে দেশটির রত্নপাথর-সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়।

এই পাথর পাওয়া ও তা বিক্রি করার ঘটনা রটে গেছে সারা দেশে। খোদ প্রেসিডেন্ট তাঁকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর পেছনে অবশ্য যথেষ্ট কারণও রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, তানজানিয়াট অন্যতম একটি দুর্লভ পাথর। অলংকার তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয় এই পাথর। স্বচ্ছতা ও রঙের ওপর নির্ভর করে এর দামের হেরফের হয়ে থাকে। এত বড় তানজানিয়াট আর কখনো পাওয়া যায়নি তানজানিয়ায়। এর আগে সবচেয়ে যে বড় পাথরটি পাওয়া গিয়েছিল, সেটির ওজন ছিল ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। স্থানীয় ভূতাত্ত্বিকেরা জানিয়েছেন, আগামী ২০ বছর এই পাথর সরবরাহ করতে পারবে তানজানিয়া।

লাইজার এই পাথর পেয়ে যে খুব খুশি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি জানিয়েছেন, একটি বড় গরু জবাই করে খাওয়াবেন সংশ্লিষ্ট সবাইকে। আর এই অর্থের একটি বড় অংশ সমাজের উন্নয়নে খরচ করার ঘোষণা দিয়েছেন ৩০-এর বেশি ছেলেমেয়ের এই বাবা। তিনি জানিয়েছেন, তিনি পড়াশোনা করতে পারেননি। তাই বাড়ির পাশে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করবেন, যাতে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা পড়াশোনা করতে পারে। হঠাৎ ধনী বনে যাওয়া লাইজার বলেছেন, তাঁর জীবনযাপনের কোনো বদল হবে না। তিনি এই খনি খননের ব্যবসা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান। এ ছাড়া একটি বিপণিবিতান গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন ৫২ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী।