অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ টিকে আছে মরহুম খলিলুর রহমান চৌধুরীর মতো তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কারণে, আর আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার কারণে। মরহুম খলিলুর রহমান রাঙ্গুনিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের কাছে অনুকরণীয় একটি নাম। তৃণমূলের শ্রমিক নেতা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে ওঠা এই ব্যক্তিকে কখনো কোনো লোভ-লালসা স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেও তার বাড়ি এখনো টিনের চালায় রয়ে গেছে। দুঃসময়ে এই বাড়িতেই আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশ হতো।

সোমবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সদ্য প্রয়াত খলিলুর রহমান চৌধুরীর শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় শোক সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউএনও মো. মাসুদুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব জহির আহাম্মদ চৌধুরী, স্বজন কুমার তালুকদার, মো. শাহজাহান সিকদার, আবুল কাশেম চিশতি, ইদ্রিছ আজগর, আবদুল মোনাফ সিকদার, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, আসলাম খাঁন, নারী ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা আক্তার, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খায়রুল বশর মুন্সি প্রমুখ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতাকালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে রাঙ্গুনিয়ার কোথাও আমাদেরকে সভা করতে দেয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত সভা করতে হয়েছিল খলিলুর রহমান চৌধুরীর বাড়ির উঠানে। সেই বাড়ির উঠানের সভায়ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। হামলা করে আমাদের কর্মীদের গুরুতর আহত করেন। প্রচণ্ড প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমাদের রাজনীতি করতে হয়েছে। যখনই সভা সমাবেশ মিছিল করা হতো তখনই বাঁধা দেয়া হতো। তবে সেই বাধার কারণে আমরা কখনো পিছিয়ে যাইনি। আমরা লড়াই করেছি। আওয়ামী লীগকে তারা কখনো দমাতে পারেনি।

তিনি বলেন, খলিলুর রহমান চৌধুরী এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি দলের গন্ডি পেরিয়ে রাঙ্গুনিয়ার আপামর জনগণের ভালবাসা তিনি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি যখন ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তখন অন্যকোন দলের কেউ তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী হননি। সব দল এবং মতের মানুষের তার প্রতি এমনই শ্রদ্ধা ছিল।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্মের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের তৃণমূলের ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা খলিলুর রহমান চৌধুরীর জীবন থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ১৫ বছরের বেশি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, পাশাপাশি পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মতো গুরু দায়িত্ব পালনের পরও তার টিনের চালার বাড়িতে কোন পাকা ঘর নির্মাণ হয়নি। অথচ গত ১১ বছরে সারা বাংলাদেশে বহু ইমারত নির্মিত হয়েছে। তিনি চাইলে কিন্তু করতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা করেন নাই।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি দু’দফায় মন্ত্রী পরিষদের দায়িত্বে আছি, আমার কাছে কখনো তিনি কোন ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য তদবির করেননি। এরকম নেতা সহজে পাওয়া যায়না। এরকম একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষকে আমরা হারিয়েছি। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে হারিয়েছি একজন মুরুব্বিকে।

এর আগে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিজের নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ার তিন শতাধিক দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ঐচ্ছিক তহবিলের ১০ লাখ টাকার নগদ অর্থ বিতরণ করেন। শেষে উপজেলা ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী।