সোনা কান্তি বড়ুয়া : আমাদের বাংলাদেশ আমাদের জন্মান্তরের জীবনের অস্তিত্ব। প্রতœতাত্বিক, ভূতাত্বিক, পুরাতত্ত¡, নৃতত্ব ও ভাষাতত্বের আলোকে বাংলাভাষা পালিভাষার বিবর্তিত রূপ এবং বাংলাদেশ সংবিধানে রাষ্ঠ্রধর্মের প্রবেশ নিষেধ। মনুষ্যে মনুষ্যে সকলেই সমান এবং প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, বাংলা সাহিত্যের সর্বপ্রথম বই “চর্যাপদের” অনুবাদ তিব্বতি ভাষায় বিদ্যমান এবং সর্বকালের জয় বাংলার গৌরব সন্তান অতীশ দীপঙ্করকে (৯৮২ – ১০৫৪) তিব্বত এবং চিনের জনগণ আজ ও সশ্রদ্ধ চিত্তে বিশ্বমানবতার দেবদূত রূপে অভিবাদন করেন। আরবীয় সভ্যতা ও ইসলাম ধর্ম বাংলাদেশে আসার পূর্বে আমাদের ছেলে বিজয় সিংহ (B. C..) শ্রীলংকা জয় করে ‘সিংহল রাজ্য’ প্রতিষ্ঠা করার ইতিহাস উক্ত দেশের ‘মহাবংশ ও দ্বীপবংশ’ নামক ইতিহাসদ্বয়ে সগৌরবে বিরাজমান।

‘চার্টার অব রাইটস’ সবারই অধিকারকে রক্ষা করে। ইসলাম ধর্মকে ঢাল তলোয়ার হিসেবে বানিয়ে ১২০২ সালে দখলদার ধর্মান্ধ তুর্কী বখতিয়ার খিলজি ইউরোপের তুরস্ক দেশ থেকে শত শত হখজার হজার মাইল দূরের সম্রাট অশোকের রাজত্ব এবং চারশত বছরের বৌদ্ধ পাল রাজত্বের বৌদ্ধ বাংলা দখল করল কেন? বৌদ্ধধর্মকে বাদ দিয়ে বৌদ্ধগণকে নিশ্চিহ্ন করতে তুর্কী লুটেরা বখতিয়ার খিলজি বৌদ্ধ বাংলা অবৈধভাবে দখল করে ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশে চাপিয়ে দিল এবং BY FORCE বাংলাদেশে বৌদ্ধগণ মুসলমান হয়েছিলেন! স¤প্রতি টরন্টোর বাংলাদেশী সাপ্তাহিক আজকাল (১১ আগষ্ট, ২০০৯) পত্রিকার ৩০ পৃষ্ঠায় ইংরেজি সংবাদে আমরা পড়েছি, বৌদ্ধধর্ম পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মের পুরস্কার লাভ করেছেন।” আজ বৌদ্ধ বাংলাদেশ হবার কথা ছিল। সম্রাট অশোকের (300 B. C). বৌদ্ধ ভারত গোলেমালে ধর্মান্ধ হিন্দু ইন্ডিয়া এবং ধর্মান্ধ মুসলমান পাকিস্তান হ’ল কেন?

বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে সরে যেতে পারে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ। মঙ্গলবার রাত ৮টায় (17 November, 2020) ইয়াং বাংলা আয়োজিত জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা যে ধর্মেরই হইনা কেনো, আমরা সবাই বাঙ্গালী।”

গত ২১ জুন ২০২২ দুদক সূত্র জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশনে সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাসের শ্বেতপত্র ও বাংলাদেশে হিন্দু হত্যায় মৌলবাদী সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাসের দুই হাজার দিন- প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড সম্বলিত শীর্ষক ২ হাজার ২০০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্রটি অভিযোগ হিসেবে আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের বিশেষ অনুসন্ধান টিম বাংলাদেশে গঠন করা হয়েছে। দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে (Samakal গত ২১ জুন 2022); বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে কমিশন। গণকমিশনের ওই শ্বেতপত্রে মৌলবাদ ও সা¤প্রদায়িক সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ১১৬ ধর্ম ব্যবসায়ী!

রাজা লক্ষণ সেনের যুবতী রানী নির্লজ্ বল্লভার সাথে চিটিংবাজ হলায়ুধ মিশ্র মহামন্ত্রীর গোপন প্রেম ছিল (কথাশিল্পী শওকত আলীর লেখা “দুষ্কালের দিবানিশি”)! রাজা লক্ষণ সেন জানতে পারলে হলায়ুধ মিশ্র মহামন্ত্রীর শিরচ্ছেদ হতেষ! শিরচ্ছেদ থেকে রক্ষা পেতে মহামন্ত্রী হলায়ুধ মিশ্র রাজা লক্ষণ সেনকে সরিয়ে বখতিয়ার খিলজিকে বাংলার সিংহাসন আরোহনের নীলনক্সার পুঞ্জীভূত (লোমহর্ষকর) বাস্তব ঘটনাবলী ‘শেখ শুভোদয়া’ শীর্ষক বই রচনা করে অকপটে স্বীকার করলেন। চর্যাপদের বৌদ্ধ বাংলাদেশ বাদ দিয়ে হিন্দু মুসলমান রাজনীতির জাল-জালিয়াতি প্রত্যহ ব্যাপকতর, প্রকটতর- এবং নির্লজ্জতর! ভারত বাংলাদেশে অতীত ও ঐতিহ্যে বৌদ্ধ অবদান! বৌদ্ধদের নিশ্চিহ্ন করতে হিন্দু মুসলমান রাজনীতি সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ভারতকে হিন্দু মুসলমান-ভারত পাকিস্তান করল কেন?

আমাদের হাজার বছরের বৌদ্ধ বাংলা পূর্ব পাকিস্তান হলো এবং পাকিস্তানে জাতির নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাংলাদেশের বাংলা ভাষা বন্ধ করে দিল! গৌতমবুদ্ধের মহাশান্তি মহাপ্রেম কে নিয়ে লেখা বাংলা ভাষার প্রথম বইয়ের নাম বৌদ্ধ চর্যাপদ! জঙ্গিবাদের উত্থানে রামুর মুসলমান হয়ে বাংলাদেশে ফেইসবুকে CARTOON কোরাণের উপর পদচিহ্ন দিয়ে বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ করল ২৯শে সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে! তুর্কি সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ ছাপিয়ে সা¤প্রতিক সা¤প্রদায়িক হামলাও তার নিরিখে দেখার অবকাশ আছে।
আজ ইউরোপের সুইডেন, নেদারল্যান্ডের পর এবার পবিত্র কোরান পোড়ানো হলো ইউরোপের আরেক দেশ ডেনমার্কে! একের পর এক কোরান পোড়ানোর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ গোটা মুসলিম বিশ্ব। যে ইউরোপকে বলা হয় সভ্যতার মানদণ্ড, রাজনীতির নামে সে ইউরোপেই চলছে সা¤প্রদায়িক উস্কানি? (PROTHOM ALO 28 JANUARY 2023)! সত্য কখনো চাপা থাকে না! ইতিহাস কিন্তু বড় নির্মম! রামুর মুসলমান ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা ফেক আইডি বানিয়ে কোরাণের উপর পদচিহ্ন দিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বাংলাদেশে বৌদ্ধবিহার বুদ্ধমন্দির ও বৌদ্ধ বাড়ি ধ্বংস করেছে ২০১২ সালে ২৯ শে সেপ্টেম্বর ভয়াল কালো রাতে! ইংরেজ দার্শনিক, আইনজ্ঞ, রাজনীতিবিদ ও পরীক্ষামূলক বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার পথপ্রদর্শক ফ্রান্সিস বেকন ১৬২০ সালে ‘নিউ ইনস্ট্রমেন্ট’ শিরোনামে এক বৈজ্ঞানিক ইশতেহারে দাবি করেন ‘জ্ঞানই শক্তি’। ২০১২ সালে ২৯শে সেপ্টেম্বর ইসলাম ধর্মে কোরাণের নাম দিয়ে ইসলামি জঙ্গীরা রামু , উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধ জনপদে আগুন দিয়ে তান্ডব দাহন করেছে।

কথাশিল্পী শওকত আলীর লেখা “প্রদোষে প্রাকৃতজন” এবং “দুষ্কালের দিবানিশি” গ্রন্থদ্বয়ে দক্ষিণ এশিয়ার হিন্দু এবং মুসলমান শাসকগণ কর্তৃক বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের রক্তাক্ত ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন, “তুর্কী আক্রমন অত্যাসন্ন। তবু বাংলার হিন্দু সামন্ত-মহাসামন্তদের বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ ও অত্যাচারের শেষ নেই। সেই অত্যাচার রুখে দাঁড়ায় কখনো অন্ত্যজেরা, কখনো বৌদ্ধেরা (“প্রদোষে প্রাকৃতজন” Page 50)! বৌদ্ধধর্মকে (বৌদ্ধ বাংলা) খারাপ সাব্যস্ত করে ইসলাম ধর্ম (বখতিয়ার খিলজি) ও হিন্দু ধর্মকে (হলায়ুধ মিশ্র মহামন্ত্রী) মহিমান্বিত করতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য বই! ২০১৭ সালে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য “GENDER, SOCIETY AND DEVELOPMENT“ শীর্ষক বইটিতে দেশে আক্রমণের শিকার বৌদ্ধধর্ম কেন?

পলিটিক্যাল ইসলাম পূজনীয় গৌতমবুদ্ধকে নারী বিদ্বেষী বলেন কেন? বাংলাদেশে ধর্মান্ধ রাজনীতির জামাত মৌলবাদীরা ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত ইসলাম ধর্মের পঞ্চম শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা’ বইয়ের ১৬ ও ১৭ নম্বর পৃষ্ঠায় পাঠ্য বইতে বলছে ““অমুসলিমরা (হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্ঠান) ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম!” ইসলাম ধর্মে মহানবী মোহাম্মদের (সা.) কন্যা ফাতেমার (রা) অবমাননা কেন হ’ল? আবুবকর কুনফুযকে ফাতেমাকে মারার জন্য পাঠিয়েছিল! তাই কুনফুয ফাতেমাকে (মহানবী মোহাম্মদের (সা.) কন্যা) ঘর থেকে আছার দিয়ে ফেলে দিল, তখন তাঁর উরুর হাড় ভেঙ্গে গেল ও পেটের সন্তানের গর্ভপাত ঘটল। অতঃপর দীর্ঘ শহ্যাশায়ী হল এবং সে অবস্থাতেই শহীদি মৃত্যু বরণ করলেন (এহতেজাজ, ১/৮৩)। (মানাকিবু অলে আবি তালিব, (2/205 FACEBOOK টীম নাস্তিক বাংলা July 27, 2019) REPORTED তাবারসি বর্ণনা করেন!

চারশত বছরের (৮ম শতাব্দী থেকে ১১ শতাব্দী) বৌদ্ধ পাল রাজত্ব তুর্কী দখলদার বখতিয়ার খিলজি বৌদ্ধ বাংলা দখল করল কেন? হিন্দু মুসলমান রাজনীতির মাফিয়া চক্রে ধর্মান্ধ ধর্মের মস্তক বিক্রয়! পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে ১৪ আগষ্ঠ ইসলাম ধর্মের নাম দিয়ে বার শত মাইল দূরের বাংলাদেশকে দখল করল! মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে জামাত মৌলবাদীরা এবং পাকিস্তান ইসলাম ধর্মকে তলোয়ার বানিয়ে ইসলাম ধর্ম অপব্যবহার করে ইসলামের নামে আল্লাহের আমানত শিশু, নারী এবং ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যা, করেছে! দিনের পর দিন। ২ লক্ষ মা – বোনকে ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবি হত্যা করেছিল। সুতরাং এদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামিক স্টেট প্রতিষ্ঠা করতে অবৈধভাবে ধর্মান্ধ ইসলামকে রাষ্ট্রীয়ভাবে চাপিয়ে দেয়া। হযরত মোহাম্মদ (সা:) ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার উপদেশ দিয়েছেন। চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী।

একাদশ শতাব্দীতে কর্নাটকের রাজা বিজয় সেন চারশত বছরের বৌদ্ধ পাল রাজত্বের বাংলাদেশ দখল করাতে বৌদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো। তুর্কী লুটেরা বখতিয়ার রুখো, স্বদেশ বৌদ্ধ বাংলা বাঁচাও এবং ১১৯২ সালে রাজা লক্ষন সেনের মহামন্ত্রী বিশ্বাসঘাতক হলায়ুধ মিশ্র হিন্দু রাষ্ট্রধর্মের নেতা হয়ে বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ করতে ‘শেক শুভোদয়া’ শীর্ষক বই লিখেছিলেন। তিনি তাঁর রচিত দিনলিপির (ডায়েরী) উক্ত বইতে মুসলিম তুর্কী মিশনের যোদ্ধাদের সাথে মহামন্ত্রীর গোপন ষড়যন্ত্রে রাজা লক্ষণ সেনকে সরিয়ে বখতিয়ার খিলজিকে বাংলার সিংহাসন আরোহনের নীলনক্সার পুঞ্জীভূত লোমহর্ষকর বাস্তব ঘটনাবলী অকপটে রচনা করে স্বীকার করলেন। ব্রাহ্মণ্য ধর্মের এবং সন্ত্রাসী তুর্কি ইসলাম (বখতিয়ার খিলজি) ধর্মের সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বৌদ্ধ মুক্তিযুদ্ধে রামাই পন্ডিতের রচিত “শূন্য পুরান” শীর্ষক বইয়ের উৎপত্তি (16th century)। ১২০২ সালে রাজা লক্ষন সেনের মহামন্ত্রী হলায়ুধ মিশ্র বিশ্বাসঘাতকতায় বখতিয়ার খিলজির বাংলা জয়! এবং বখতিয়ার খিলজির বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের জন্যে বৌদ্ধগণ মুসলমান হয়েছিলেন!

পাল রাজত্বের চারশত বছরকে (৮ম শতাব্দী থেকে ১১ শতাব্দী) বাঙালি জাতির এনলাইটেনমেন্ট যুগ বলা হয় এবং সেই যুগে বুদ্ধাব্দই (গৌতমবুদ্ধের জয়ন্তি সাল) বঙ্গাব্দ ছিল। ‘আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী (ভুসুকু আজ আলোকপ্রাপ্ত সিদ্ধপুরুষ বা বাঙালি হলেন)” থেকে ঐতিহাসিক ‘বাঙালি’ শব্দের অভূতপূর্ব সংযোজন হয়েছিল এবং (দি বুক অব এনলাইটেনমেন্ট) ৪৯ নম্বর কবিতায় সর্বপ্রথম ‘বাঙালি শব্দ’ মহাকবি ভুসুকু কর্তৃক আবি®কৃত হল। পূজনীয় ব্যক্তির প্রতি সন্মান প্রদর্শন বাংলাদেশে ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী দের বাঞ্ছনীয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার, আলবদর চক্র যেখানে সেখানে পুরুষদের বস্ত্র উন্মোচন করে মুসলমানিত্ব পরীক্ষা করা হতো! বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা ‘সওয়াব’ এর আশায় জোর করে মুসলমান করেছে হিন্দুদের, না হলে মৃত্যু। পিস কমিটির ইচ্ছানুযায়ী বিবাহযোগ্য নব মুসলিম কন্যাদের একটি অংশ পিস কমিটির অনুগত যুবকদের বাড়ীতে তুলে দেবার ব্যবস্থা করা হয় (মুনতাসীর মামুন, রাজাকারের মন, পৃষ্ঠা ৯১)।

বাংলাদেশে রাজনীতির ইসলামীকরণ মানে বাংলাদেশের বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য “GENDER, SOCIETY AND DEVELOPMENT“ শীর্ষক বইটিতে পলিটিক্যাল ইসলাম পূজনীয় গৌতমবুদ্ধকে নারী বিদ্বেষী বলেন! বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য বইটিতে অপরাধের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে! ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য বইতে বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই (A father made her daughter prostitute) আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও (Buddhist family life is not good) বটে। (১) Mr. Azizul Hoq Khan (২) Mr. Mahamudul Ala (৩) Mr. Bilas Mallik and (৪) Mr. Ujjal Chakraborty “লেখকগণ “Gender, Society and Development শীর্ষক বইটি লিখেছেন (For B.A (Honours) Fourth Year Social Science students in Bengali “গ্রন্থ লিখে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে, ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম বৌদ্ধ ধর্মের চেয়ে উন্নত, নবঃঃবৎ! ধর্মান্ধ বিভেদ বিদ্বেষের নামই কি ধর্ম ও রাজনীতি? এবং মুসলমান না হলে কি বাংলাদেশের আদর্শবান নাগরিক হওয়া যায় না?

আর ইতিহাস লেখক লামা তারনাথ তো আরেকধাপ এগিয়ে মোটামুটি একটি কল্পগাথা বলে গেছেন গোপালদেবের সিংহাসনে আসীন হওয়ার বিষয়ে। বেশিরভাগ ঐতিহাসিকগণ “প্রকৃতিপুঞ্জ” বলতে সম্ভাব্য দুটি বিষয়কে ইঙ্গিত করেছেন- সাধারণ জনগন এবং মন্ত্রীবর্গ বা অমাত্য, মানে যারা সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। প্রাচীন গ্রন্থাবলীর পাশাপাশি এই মহান সম্রাটের বংশাবলী এবং সিংহাসনে আরোহণের কথা আমরা পালরাজগণের তাম্রশাসনগুলো থেকে জানতে পারি। ছবির ইতিহাস, ইতিহাসের ছবি (৩৯ তম পর্ব) ।। ।। পালসম্রাট গোপালদেবের সমাধি ।।

বাংলার প্রাচীন ইতিহাস চর্চার একটা বৃহৎ অংশ জুড়ে আছে পাল আমলের ইতিবৃত্ত। শশাঙ্ক-পরবর্তী টালমাটাল বাংলায় নতুন যুগের সূচনা পালরাজগণের হাত ধরেই। পালরাজগণ চারশো বছর শাসন করেছেন এ বাংলা। শুধু তো বাংলা নয়, বৃহৎ বঙ্গের সীমানা ছিল আরো বিশাল, আসমুদ্রহিমাচল। বৃহৎ বঙ্গের এই উত্থান বাঙালির ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়ের একটি। এত বিশাল রাজ্যের সূচনা যার হাত ধরে, শশাঙ্ক পরবর্তী ক্ষত-বিক্ষত বাংলার ঘুরে দাঁড়ানোর এ অধ্যায়ের শুরু যার নেতৃত্বে, তিনি হলেন পালবংশের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট গোপালদেব।

পালরাজ গোপালদেবের উত্থানের ইতিহাস যেমন কুয়াশা আবৃত রহস্যময়, পালবংশের ইতিহাসের পাতায়ও তেমনি তাঁর উল্লেখ মায়াবৃত। আমার এ কথাটির ভিত্তি হলো প্রাচীন গ্রন্থাবলী ও পালরাজগণের শিলালেখগুলো। প্রাচীন গ্রন্থাবলী ও ইতিহাসবিদগণ রাজা গোপালদেবের ক্ষমতায় আরোহণের মাধ্যম হিসেবে “প্রকৃতিপুঞ্জ”কে কৃতিত্ব দিয়েছেন। কল্পমঞ্জুশ্রী থেকে প্রায় সবগুলো নির্ভরযোগ্য প্রাচীন গ্রন্থাবলী পর্যন্ত সবাই একই কথা বলে গেছে – “প্রকৃতিপুঞ্জ” মাৎসন্যায় থেকে উদ্ধার পেতে সিংহাসনে ব সায় গোপালদেবকে।

ধর্মপালদেবের খালিমপুর তাম্রশাসনে রয়েছে:! [দূর্ব্বলের প্রতি সবলের অত্যাচারমূলক] মাৎসন্যায় [অরাজকতা] দূর করিবার অভিপ্রায়ে, প্রকৃতিপুঞ্জ যাঁহাকে রাজল²ীর বর গ্রহণ করাইয়া [রাজা নির্ব্বাচিত করিয়া] দিয়াছিল, পূর্ণিমা-রজনীর [দিঙমণ্ডল প্রধাবিত] জ্যোৎস্নারাশির অতিমাত্র ধবলতাই যাঁহার স্থায়ী যশোরাশির অনুকরণ করিতে পারিত, নরপাল-ক‚লচূড়ামণি গোপাল নামক সেই প্রসিদ্ধ রাজা বপ্যট হ’তে জন্মগ্রহণ করছিলেন।। দেবপালদেবের মুঙ্গের তাম্রশাসনে রয়েছে:
অনুপম সৌভাগ্যশালী গোপাল [দেব] ল²ীর সপত্নী পৃথিবী [দেবীর] পতি হইয়াছিলেন, বিনয়িবর্গের দৃষ্টান্তস্থল সেই রাজার শাসন-সময়ে পৃথু, সগর প্রভৃতি [পুরাণ-প্রসিদ্ধ] নৃপতিবৃন্দ শ্রদ্ধেয় [বিশ্বাসযোগ্য ঐতিহাসিক ব্যক্তি] বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছিলেন।।

হিন্দু মুসলমান রাজনীতির গালিভারকে দেখে মানুষ বলে ভাবার ক্ষমতা ছিল না বৌদ্ধ লিলিপুটদের। তাদের যাপনের সমবায় যে আয়নার জন্ম দিয়েছিল সেখানে গালিভার কেবলই এক লেভয়াথান। অনুরূপ দৃশ্য মাঝেমাঝে দেখা যায় আমাদের টিভি-স্ক্রিনেও। ক্ষমতার মাথায় চড়ে বসা লোকগুলোর মাথায় যখনই অক্সিজেন কম যেতে শুরু করে, তখনই তারা চার পাশের মানুষের লজ্জা, হায়া শুষে প্রশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে; যে ভাবে দ্রৌপদীর শাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে দুর্যোধন, দুঃশাসন নিজেদের ক্ষমতা-স্তম্ভ আর অসহ্য দম্ভের অনন্ত নগ্নতাকে ঢাকার চেষ্টা করেছিল। লজ্জা তখন দ্রৌপদীর ছিল, এখন হাথরস কিংবা হাঁসখালির মেয়েটার আছে। পল ভালেরির কথায়, “পাওয়ার উইদাউট অ্যাবিউজ? লুজ?েস ইটস চার্ম।”

ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে রাজা লক্ষন সেনের মহামন্ত্রী বিশ্বাসঘাতক হলায়ুধ মিশ্র এবং বখতিয়ার খিলজির বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের জন্যে অবশেষে নিরুপায় হয়ে বাংলার বৌদ্ধগণ ইসলাম ধর্ম কবুল করেছিলেন। বর্তমান বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়া এক সময় বৌদ্ধপ্রধান দেশ ছিলো! ইসলামি রাজনীতি বৌদ্ধধর্ম এবং বৌদ্ধ প্রধান দেশকে অজগরের মতো গিলে ফেলেছে! বৌদ্ধধর্মের অহিংসা মানবতার পথ এবং হিংসা মানুষজাতির সর্বনাশের পথ। আমার বাংলাদেশ আমার ধর্ম! বাঙালি সংস্কৃতির মূল কথা হলো অসা¤প্রদায়িকতা ও স¤প্রীতি।

বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!