অনলাইন ডেস্ক : তফসিল ঘোষণার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও নাশকতা প্রতিরোধে দেশজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল বুধবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনসহ দেশের সব আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়গুলোর নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোরও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। এর আগে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তফসিল ঘোষণার পর সারাদেশে নির্বাচনী অফিসগুলোয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা প্রকাশ করে। সে অনুযায়ী আঞ্চলিক নির্বাচনী অফিসগুলোয় গতকাল বুধবার সকালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ তারা এই কাজে নিয়োজিত থাকবেন। এরপর নিরাপত্তার স্তর আরও বাড়ানো হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, বুধবার সকাল থেকে ঢাকার ১৫টি আঞ্চলিক নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোয় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আগারগাঁও নির্বাচন ভবনসহ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। অন্য কমিশনারদের নিরাপত্তার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
তফসিল ঘোষণার আগে বুধবার সকাল থেকে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। আশপাশে তিন স্তরের নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। নির্বাচন ভবনের ভেতরে দর্শনার্থীদের প্রবেশে কড়া সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
আগের রাত থেকে নির্বাচন ভবনের আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রবেশের সকল রাস্তায় এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার প্রবেশপথে ব্যারিকড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন ভবন ঘিরে পুলিশ ও বিজিবির টহল গাড়িও দেখা গেছে।
তফসিল ঘোষণার আগে গতকাল দুপুরে ঢাকার পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে গিয়ে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের বিষয়ে কথা বলেন পুলিশ কমিশনার।
এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচন ভবনে প্রবেশের বিষয়ে একটি নোটিশ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। ইসির নিরাপত্তা কর্মকর্তা জহুরা আক্তার বেগমের স্বাক্ষরিত চিঠিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরিচয়পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আঞ্চলিক নির্বাচনী কার্যালয়গুলোতেও দর্শনার্থীদের প্রবেশে গতকাল থেকে কড়াকড়ি করা হয়েছে। অনুমোদন ছাড়া কেউ যাতে নির্বাচন অফিসগুলোয় প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে বলা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের একজন
কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনী অফিসগুলোর নিরাপত্তা জোরদারে ইতোমধ্যে ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার ও সব মহানগর পুলিশ কমিশনারকে লিখিত নির্দেশ জারি করা হয়েছে। নির্বাচনপরবর্তী সময়েও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।
গত মাসে নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সারাদেশের সব আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের নিরাপত্তা জোরদার করতে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয় নির্বাচন উপলক্ষে ভোটার তালিকা, ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার ও বিভিন্ন প্রকারের অতিগুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী মালামাল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মাঠ পর্যায়ের ১০টি আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস, প্রতিটি জেলা নির্বাচন অফিস, প্রত্যেক উপজেলা নির্বাচন অফিস এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় থানা নির্বাচন অফিসে সংরক্ষণ করা হবে। এসব কার্যালয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে জানিয়ে তা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে বলা হয়।