অনলাইন ডেস্ক : কানাডাতে গ্রীষ্মের সপ্তান্ত মানেই যেন বছর জুড়ে মানুষের জমে থাকা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন গ্রীষ্মকালের এই সময়টাতে বনভোজন, বিয়ে ছাড়াও আড়ম্বরপূর্ণ বিভিন্ন সমাবেশের আয়োজনে যোগ দিতে সব বয়সের মানুষ-ই যেন মুখিয়ে থাকে! আর বাসা-বাড়ির পেছনের খোলা জায়গায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে নিয়মিত আড্ডার আয়োজন তো আছেই!

কানাডাতে প্রবাসী বাংলাদেশি কম্যুনিটিও এসব আয়োজনে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ছাড়াও বিভিন্ন জেলা সমিতিগুলোর সাংগঠনিক কর্মকান্ড জোরদার করতে মূলত এই সময়টাকেই বেছে নেয়া হয়।

কোভিডের কারণে গত দু’বছর এ ধরণের সমাবেশের ওপর বিধিনিষেধ থাকার কারণে মৌসুমী এসব আয়োজন এক প্রকার বন্ধই ছিল। তবে বর্তমানে কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় চলতি মৌসুমে বিভিন্নভাবে গত দু’বছরের বিরতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত অনেকেই সপ্তাহের শনি ও রোববারে একাধিক আয়োজনে উপস্থিত থাকতেও চেষ্টার কমতি রাখছেন না। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন ডিসিজিসি (ঢাকা কলেজ গ্রাজুয়েটস ইন কানাডা) দীর্ঘ দু’বছর বিরতির পর অন্য অনেক সংগঠনের মতো বার্ষিক বনভোজন দিয়ে সক্রিয় ধারায় ফিরতে শুরু করেছে।

টরেন্টো থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে হুইটবির সানরাইজ লেক পার্কে গেলো শনিবার আয়োজন করা হয় এ বনভোজন । মধ্যাহ্ন পেরোতেই কলেজের প্রাক্তন ছাত্ররা পরিবার-পরিজন নিয়ে একে একে হাজির হতে শুরু করেন লেক পার্কের পার্শবর্তী ছাউনিতে। কলেজের ১৯৬৬ ব্যাচের ছাত্র তাজ হাশমি থেকে শুরু করে ২০০৯-এর ওমর বাবুসহ বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্ররা সপরিবারে হাজির হয়েছিলেন বনভোজনে। শহীদ খন্দকার টুকু, সাকিব আলমসহ কেউ কেউ দিনের প্রথম ভাগে এ বনভোজনে হাজির হয়ে শেষ ভাগে ছুটে যান অন্য আয়োজনে। এ ধরণের আয়োজনে বরাবরই যেমনটা হয় — প্রাক্তন ছাত্ররা তাঁদের সময়ের বিভিন্ন ঘটনা স্মৃতির পাতা থেকে অন্যদের কাছে তুলে ধরেন। চলতে থাকে কালের ব্যবধানের নানা বিশ্লেষণ। ভালো দিক, মন্দ দিকের এ আলোচনার মধ্যেই সময় যেন দ্রæত ফুরোতে থাকে।

যাদের নিরলস পরিশ্রমে এ ধরণের আয়োজন সম্ভবপর হয়ে ওঠে এরই মধ্যেই তাঁদের তাগাদা আসতে থাকে ভোজন পর্ব শেষ করার। সাজ্জাদুর রহমান, জাহিদুল ইসলাম তুষার, মফিজুল হিরু, আনোয়ার হোসেন শত ব্যস্ততার মাঝেও এ ধরণের আয়োজনে যেন কখনোই ক্লান্ত বোধ করেন না। আর কলেজের প্রাক্তন ছাত্র টরেন্টোতে আবাসন খাতের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মনির ইসলামের উৎসাহ তো এসব আয়োজনে সবার জন্য অনুকরণীয়! আবার ভোজন পর্ব শেষ না হতেই শুরু হয়ে যাই বনভোজনের অন্যতম আকর্ষণ বিভিন্ন বয়সের শিশু-কিশোরদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মহিলাদের বালিশ চালাচালির পর্ব। আর কলেজ ছাত্রদের মধ্যে কে কতটা ফুটবল দিয়ে গোল করতে পারদর্শী সেটা ঝালিয়ে নেয়ার কাজটাও বাদ যায় না!

এতসব আয়োজনের মধ্যে দিন দ্রুতই যেন অপরাহ্নে গড়াতে থাকে। কারো কারো ভেতর কাজ করে বাড়ি ফেরা বা দিনের অন্য কাজ শেষ করার তাড়না। সময় হয় অনেক দূর দূরান্ত থেকে আসা অংশগ্রহণকারীদের বাড়ি ফেরার পালা! কেউ কেউ আবার একটু আগেই বিদায় নিতে থাকে আবার দেখা হবে কথা দিয়ে।