অনলাইন ডেস্ক : পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ছুটির দিনেও চালু রাখা হয়েছে গাজীপুরের প্রায় ৩০ শতাংশ কারখানা। মূলত কয়েক দিন ধরে চলা শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে সকাল থেকেই শুরু হয় কারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের তথ্যমতে, পুরো জেলায় সব মিলিয়ে নিবন্ধিত কারখানা রয়েছে ২ হাজার ৬৩৩টি। এর বাইরে অনিবন্ধিত কারখানা আছে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০টি। এসব কারখানায় শ্রমিক কাজ করেন প্রায় ২২ লাখ।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগস্ট মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গত বুধবার গাজীপুর নগরের ভবানীপুর এলাকায় বিক্ষোভ করছিলেন বেক্সিমকো গ্রুপের একটি কারখানার শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে তারা আশপাশের কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর চালান। কিছু শ্রমিক বিগবস নামের একটি কারখানায় আগুন দেন। একইভাবে শ্রমিক অসন্তোষ চলে টঙ্গী, সালনা, কাশিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায়। এ জেরে বৃহস্পতিবার ৩০টি কারখানায় সাধারণ ছুটি এবং ৮টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর আগে, মঙ্গলবার জেলার তিনটি কারখানা বন্ধ ঘোষণাসহ ছুটি ঘোষণা করা হয় পাঁচটি কারখানা।
এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম একটি গণমাধ্যমকে বলেন, মূলত আজ পোশাকশ্রমিকদের ছুটির দিন। কিন্তু গত কয়েক দিনের বিক্ষোভে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতেই মালিকপক্ষের লোকজন কারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ পুরো জেলায় মোট কারখানার প্রায় ৩০ ভাগ চালু রয়েছে। তবে যে আটটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেগুলো আজও বন্ধই আছে।
তিনি বলেন, আজ সকাল থেকেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন কারখানায় পাহারা দিচ্ছেন। যেসব কারখানায় অসন্তোষের আশঙ্কা রয়েছে, সেসব কারখানার সামনে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত কোথাও কোনো ঝামেলার খবর পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন দাবিতে চলছে শ্রমিক অসন্তোষ। এতে একধরনের অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয় শিল্পনগর গাজীপুরে। দাবি আদায়ে কারখানায় হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোনো কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা, আবার কোনো কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে কারখানাগুলোর উৎপাদন কমে শূন্যের কোঠায় দাঁড়ালে দেখা দেয় আর্থিক সংকট। মূলত এই সংকট কাটিতেই শুক্রবার অনেক কারখানা খোলা রাখা হয়।