অনলাইন ডেস্ক : সুদূর কানাডার বুকে “মেজবান” যা ছিল ক’দিন আগেও দিবা স্বপ্ন, তা’ আজ বাস্তবে পরিণত করল চট্টগ্রাম সমিতি কানাডা ইনক। সুদীর্ঘ ২২ বছর পর বিগত ৩০শে অক্টোবর ২০২২, চট্টগ্রাম সমিতি কানাডার আয়োজনে স্কারবোরো জামে মসজিদের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো উপস্থিত অথিতিদের মতামত অনুযায়ী কানাডার বুকে সবচেয়ে জমকালো, সবচেয়ে বেশি লোকের সমাগমপূর্ণ অনুষ্ঠান “চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান”। সেই সাথে ষোলকলায় পূর্ণ হলো কানাডায় বসবাসরত চট্টগ্রামবাসীর অন্তরের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের-পূর্ণ হল চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবীর। সকালের সূর্য টরন্টোর পূর্বাকাশে পরিপূর্ণভাবে উঁকি দেয়ার আগেই মেজবানস্থলে উপচে পড়া হাজারো মানুষের ভিড়। টরন্টো ছাড়াও আশেপাশের অনেক শহর থেকে এমনকি বাফালো, নিউইয়র্ক থেকেও মেজবানের টানে অনেকেই ছুঁটে এসেছেন। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণী পেশার লোকজনের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে মেজবানস্থল। অল্পক্ষণের মধ্যেই মেজবানস্থল পরিণত হল একখন্ড চট্টগ্রামে- পরিণত হল চট্টগ্রামবাসী তথা প্রবাসী সমগ্র বাংলাদেশীদের মিলন মেলায়।

দুপুর ১২টায় মেজবানের শুভ উদ্ভোধন করেন চট্টগ্রাম সমিতি কানাডার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। উনি উপস্থিত সবাকে মেজবানে অংশ নেয়ার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং এই বিশাল কর্মকাণ্ড যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সফল করতে পেরেছেন তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। আর্থিকভাবে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদেরকেও তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সংগঠনের কর্মনিষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক মনজুর চৌধুরী তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সংগঠনকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্যে চট্টগ্রামবাসীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন এবং আগামী বছর ৫০০০ লোকের মেজবান করবেন বলে ঘোষণা দেন। সংগঠনের অত্যন্ত পরিশ্রমী ও একনিষ্ঠ কর্মী এবং সংগঠনের অর্থ সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম সাইফুল উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো বলেন কানাডায় মেজবানের আয়োজন তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। আজ তা বাস্তবে পরিণিত হল। তিনি মহান আল্লাহ্পাকের দরবারে শোকরিয়া জ্ঞাপন করেন। পরিশেষে, মৌলানা হেলাল বিশ্বের সকলের শান্তি কামনা করে এবং যাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।
প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশি অতিথির উপস্থিতি সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। অন্টারিও প্রভিন্সের সম্মানিত সাংসদ ডলি বেগম তাঁর বক্তব্যে বলেন “চট্টগ্রামের লোকেরা হার মানতে জানে না।” তিনি এত লোকের উপস্থিতি দেখে অভিভূত হন এবং মেজবান আয়োজকদের প্রশংসা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

পরিশেষে, মেজবান আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক সংগঠনের আরেক পরিশ্রমী কর্মী ও সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিনসহ এই বিশাল কর্মযজ্ঞের সাথে যাঁরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিল এবং যাঁদের দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এমন একটি সফল, প্রাণবন্ত ও পরিচ্ছন্ন অনুষ্ঠান, তাঁদের কয়েকজনের নাম না নিলে এই লিখা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তারা হলেন যথাক্রমে : আসকিন সিদ্দিকী, আইনুল কবির, বাবলু চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার বিক্রম কুমার, প্রফেসর সোহেল চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার শুভঙ্কর দে, ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ এরশাদ, সুমন কায়সার, আহসানুল বারী লাবু, নাইমা ফেরদৌসী, নাসিমা আক্তার, শাহজাদী আকতার, নাহিদ আকতার, মাহফুজা সোবহান, জেবুন্নাহার ওয়াসিম বেবি, শাহ আমানত উল্লাহ রিন্টো, রফিকুল ইসলাম, নাজমা বেগম, তানভী হক, মোহাম্মদ শাহজাহান, রোকনুজ্জামান, সেকান্দার আলী, আবছার, শওকত আলী, তারিক চৌধুরী, উজ্জ্বল চৌধুরী, হোসাইনুজ্জামান শামীম, ওয়াসিম বাকী, সারওয়ার জামাল চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন আব্দুর রহিম জসিম, মোহাম্মদ শাকিল ও আমিরুল।

রান্নার আয়োজনে যাদের অবদান : মাহবুবুল ইসলাম চৌধুরী সাইফুল, মোহাম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, মোহাম্মদ শোয়েব, শাহ আমানত উল্লাহ রিন্টো, মোহাম্মদ মাকসুদ, রফিকুল ইসলাম, সেকান্দার আলী, শওকত আলী, আহসানুল বারী লাবু এবং আরো অনেকেই। যাঁদের আর্থিক সহযোগিতা আমাদের এই বিশাল আয়োজনের পথকে মসৃন করেছে তাঁরা হলেন : ব্যারিষ্টার রিজওয়ান রহমান, মন্জুর চৌধুরী, শাহেদ তাহের, মোহাম্মদ মাকসুদ এবং কাজী সাজ্জাদ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন : মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, মন্জুর চৌধুরী, মাহবুবুল ইসলাম চৌধুরী সাইফুল এবং মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।

সমগ্র অনুষ্ঠানের পরিচালনায় ছিলেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। একটি অত্যন্ত সফল, প্রাণবন্ত, পরিচ্ছন্ন এবং অনেকদিন মনে রাখার মত অনুষ্ঠান উপহার দিল চট্টগ্রাম সমিতি কানাডা ইন্ক।