ফরিদ আহমেদ : জন ভন নিউম্যানকে ধরা হয় বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা গণিতবিদ হিসাবে। আধুনিক কম্পিউটারের পিছনে তাঁর একটা অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। তবে, তিনি বেশি বিখ্যাত গেইম থিওরির প্রবক্তা হিসাবে।

গত শতাব্দীর প্রথম দিকে অনেকেই গেইম থিওরি নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছেন। কিন্তু, তিনিই প্রথম এ নিয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ লেখেন। প্রবন্ধটির নাম ছিলো “অন দ্য থিওরি অব গেইমস স্ট্রাটেজি”। এটা প্রকাশিত হয়েছিলো ১৯২৮ সালে। এই প্রবন্ধটি খুব একটা সাড়া জাগাতে পারেনি। অনেকটা আড়ালেই ছিলো বলা চলে। ১৯৪৪ সালে তিনি এবং তাঁর সহযোগী লেখক অস্কার মর্গেনস্টার্ন গেইম থিওরির উপর একটা পূর্ণাঙ্গ বই লিখে ফেলেন। বইটার নাম হচ্ছে “থিওরি অব গেইমস এন্ড ইকোনোমিক বিহ্যাভিওর”।

গেইম থিওরির মূল বিষয় হচ্ছে, ভিন্ন ভূমিকা পালনরত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যখন ইন্টারাক্ট করে তখন যে স্ট্রাটেজি নেয় সেটার বিশ্লেষণ করা। শীতল যুদ্ধের সময়ে আমেরিকান সরকার গেইম থিওরিকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগিয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে তার সম্পর্ক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। কোন প্রেক্ষিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন কী পদক্ষেপ নেবে, সেটা আগে থেকে অনুমান করার চেষ্টা করা হতো গেইম থিওরির মাধ্যমে। যেমন কিউবার মিসাইল সমস্যার সময়ে গেইম থিওরির বিশ্লেষণটা ছিলো এমন, “যদি আমরা কিউবাতে বোমা ফেলি, সোভিয়েত ইউনিয়ন ওয়েস্ট বার্লিন দখল করে নেবে, তখন আমাদের সোভিয়েত বাহিনীকে আক্রমণ করতে হবে, তখন তারা নিউক্লিয়ার বোমা ব্যবহার করবে, ফলে আমাদেরও …”

গেইম থিওরির সবচেয়ে বাস্তব উদাহরণ দেওয়া যায় ফুটবল খেলা থেকে। বিশেষ করে এর পেনাল্টি কিক থেকে। রেফারি পেনাল্টি দেবার পরে একজন খেলোয়াড় পেনাল্টি কিক করতে এগিয়ে যায়। অন্যদিকে, অন্যপক্ষের গোলরক্ষক তৈরি হয় তা ঠেকানোর জন্য। এটা একটা পারফেক্ট গেইম থিওরি সিচুয়েশন। গেইম থিওরিতে অনেক সময় প্রতিপক্ষের ক্ষেত্রে একই কাজ করাটাই দুজনের জন্য সমানভাবে লাভজনক হয়। যেমন, আমেরিকা বা সোভিয়েত ইউনিয়ন সিদ্ধান্ত নিলো কেউ কারো উপর পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ ঘটাবে না। এরকম সিচুয়েশনে দুই পক্ষ রেস্টুরেন্টে গিয়ে ডিনার করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। একে বলে কো-অপারেটিভ গেইম। কিন্তু, গেইম সব সময় কো-অপারেটিভ নাও হতে পারে। ফুটবলের পেনাল্টি এরকমই একটা নন-কো-অপারেটিভ গেইম। দুই প্রতিপক্ষের কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবার সুযোগ এখানে নেই। এক এক পক্ষের জয় মানে অন্য পক্ষের সম পরাজয়।

এরকম চরম একটা সিচুয়েশনে জয়-পরাজয় নির্ভর করে শুধুমাত্র নিজের স্ট্রাটেজির উপরে নয়। প্রতিপক্ষ এই জয় ঠেকানোর জন্য কী স্ট্রাটেজি নিচ্ছে, কিংবা আমার স্ট্রাটেজির সম্পর্কে প্রতিপক্ষ আগে থেকেই জানে কিনা সেটা জানাটাও জরুরী হয়ে পড়ে।

আর্জেন্টিনাতে একবার একটা খেলা চলছিলো। দুটো প্রদেশের মধ্যে খেলা। খেলার প্রায় অন্তিম লগ্নে রেফারি পেনাল্টি দিয়ে দেয় এক দলের পক্ষে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অন্য দলের একজন খেলোয়াড় রেফারিকে লাথি মেরে মাটিতে শুইয়ে দেয়। খেলা বন্ধ হয়ে যায়। লীগ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় পেনাল্টি কিক সহ খেলার এই বিশ সেকেন্ড পরের সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। এটাকে বলা হয় লংগেস্ট এভার পেনাল্টি। একটা পেনাল্টি কিকের জন্য এক সপ্তাহের অপেক্ষা আর কোনো ফুটবল খেলায় কখনো ঘটেনি। পুরো এক সপ্তাহ সময় পাবার কারণে দুপক্ষই পেনাল্টি কিকের উপরে তাদের স্ট্রাটেজি ঠিক করার সময় পেয়ে গিয়েছিলো। আর্জেন্টাইন লেখক অসভাল্ডো সোরিয়ানো এই ঘটনাটা সম্পর্কে লিখেছিলেন। তিনি তাঁর গল্পে বলেন, একদিন রাতে ডিনারে গোলরক্ষক গ্যাটো ডিয়াজ প্রতিপক্ষের গোল কিক নেবে যে সেই কনস্তান্তে সম্পর্কে আলাপ করছিলো।

“কনস্তান্তে ডান দিকে কিক নেয়, তাই না?”
“সবসময়।” ক্লাবের প্রেসিডেন্ট উত্তর দিলেন।
“কিন্তু সে জানে আমি এটা জানি।”
“তাহলেতো সর্বনাশ!”
“হ্যাঁ, কিন্তু আমি জানি সে এটা জানে।” গ্যাটো বললো।
“তাহলে বাঁ দিকে ঝাঁপ দিও।” অন্য কেউ একজন টেবিল থেকে বললো।
“না। সে জানে আমি জানি, সেটাও সে জানে।” এই বলে গ্যাটো ডিনার শেষ করে ঘুমোতে চলে গেলো।

অভিজ্ঞ পেনাল্টি টেকার বা গোলকিপারদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে সময়ের সাথে সাথে তাদের ট্রাক রেকর্ড থেকে যায়। তাদের যদি কোনো বিশেষ অভ্যাস থাকে (কেই শট নেয় ডানে, কিংবা কেউ বায়ে, কোনো গোলকিপার ডানদিকে বেশি ঝাঁপ দিতে পছন্দ করে) সেগুলো চোখে পড়ে যায়।

সত্তরের দশকে জ্যান রেকার নামের একজন ডাচ ম্যানেজার হাজার হাজার খেলোয়াড়ের উপরে ইনডেক্স কার্ড তৈরি করেছিলেন। এই ইনডেক্স কার্ডে একটা ইনফরমেশন ছিলো, সেই খেলোয়াড় পেনাল্টি নিলে কোন দিকে কিক নেয়। হল্যান্ডের গোলকিপার হ্যানস ভ্যান ব্রæকেলেন প্রায়ই তাঁকে ডেকে নিয়ে তাঁর কাছ থেকে তথ্য নিতো।

২০০৬ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা ছিলো জার্মানি এবং আর্জেন্টিনার মধ্যে। এই খেলা অতিরিক্ত সময় পেরিয়ে পেনাল্টি শুট আউটে গিয়ে পৌঁছায়। জার্মান গোলকিপারের মোজাতে একটা ক্রিব শীট আটকানো ছিলো। সেখানে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের সম্পর্কে তথ্য লেখা ছিলো। সেগুলো এরকমঃ
রিক্যুয়েলম- বাম দিক
ক্রেসপো – দূর থেকে দৌড়ে এলে ডান/ কাছ থেকে দৌড়ে এলে বাম
হেইঞ্জ – বাঁদিকে নিচু শট
আয়লা – পেনাল্টি নেবার আগে সময় নেয়, লং রান আপ, ডান দিক
মেসি – বাঁ দিক
আইমার – দীর্ঘ সময় নেয়, বাঁ দিক
রড্রিগেজ – বাঁ দিক

এই সাত জনের মধ্যে শুধু আয়লা আর রড্রিগেজ পেনাল্টি শট নেয়। ক্রিব শীটের তথ্য অনুযায়ী আয়লা আসলেই দীর্ঘ রান আপ নিয়ে এগিয়ে আসে। লেহমান অপেক্ষা করতে থাকে তার জন্য এবং প্রত্যাশিতভাবে সে ডানে শট নেয়। লেহমান ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ঠেকিয়ে দেয়। রড্রিগেজও ক্রিব শীটের তথ্য অনুযায়ী বাঁ দিকে শট নেয়। কিন্তু এতো কোণা দিয়ে সেটা যায় যে লেহমান বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও তা ঠেকাতে পারে না।

আর্জেন্টিনার শেষ পেনাল্টি কিক নিতে এগিয়ে আসে ক্যাম্বিসো। লেহমান তার ক্রিব শীটে ক্যাম্বিসোর নাম খুঁজতে থাকে। ক্রিব শীটে ক্যাম্বিসোর নাম নেই। ফলে খুঁজে পায় না সে সেটা। কিন্তু, খোঁজাটা কাজে লাগে খুব সম্ভবত। তাকে দীর্ঘ সময় ধরে ক্রিব শীট পরীক্ষা করতে দেখতে ক্যাম্বিসোর হয়তো ধারণা জন্মায় যে তার ব্যাপারে সব তথ্য লেহমান পড়ছে। নার্ভাস ক্যাম্বিসোর শট বাঁচিয়ে দেয় লেহমান।

২০০৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেছে চেলসি এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। খেলা হচ্ছিলো মস্কোতে। এই খেলাও টাইব্রেকারে গড়িয়েছিলো। গেইমস থিওরির এক ক্লাসিক উদাহরণ এই ম্যাচ।

বাস্ক ইকোনোমিস্ট ইগনাসিও পালাসিওস-হুয়ের্টা ইউনিভার্সিটি শিকাগোতে পড়াশোনা করতেন। সেটা ১৯৯৫ সাল। সেই ছাত্র জীবন থেকেই পেনাল্টি কিক সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতেন তিনি। ইগনাসিও-র এই গবেষণা সম্পর্কে অবগত ছিলেন তাঁর আরেক অর্থনীতিবিদ বন্ধু। এই ভদ্রলোক ইজরায়েলের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি এবং গণিতের প্রফেসর। এই প্রফেসর ভদ্রলোক আবার চেলসির ম্যানেজার আভ্রাম গ্রান্টের বন্ধু ছিলেন। চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে ওঠার পরে গ্রান্টের সাথে ইগনাসিওর পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। ফাইনালের আগে তিনিই চারটা পয়েন্ট লিখে পাঠান ক্রিব শীট হিসাবে।

১। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের গোলকিপার ভ্যান ডার সারের অভ্যাস হচ্ছে কিকারের ন্যাচারাল সাইডে ডাইভ দেওয়া। এর মানে হচ্ছে, খেলোয়াড় যদি ডান পায়ের হয়, তবে সে ঝাঁপ দেয় ডান দিকে, আর বাঁ পায়ের হলে সে ঝাঁপায় বাঁ দিকে। কাজে, চেলসির খেলোয়াড়দের উচিত হবে তাদের “আনন্যাচারাল সাইডে” কিক নেওয়া।

২। ভ্যান ডার সার যে সব পেনাল্টি শট ঠেকিয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগই মিড হাইটের। কাজেই তার বিরুদ্ধে পেনাল্টি কিক করতে গেলে হয় গড়ানো শট নিতে হবে নতুবা উঁচু দিয়ে।

৩। ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো প্রায়শই কিক নেবার আগে থেমে যায়। যদি সে থেমে যায়, তবে সে খুব সম্ভবত কিপারের ডান দিকে শট নেবে (৮৫ শতাংশ)। রোনাল্ডো কিক নেবার আগ মুহূর্তেও সিদ্ধান্ত বদলানোর সক্ষমতা রাখে। কাজেই, গোলকিপারের উচিত না তার কিক নেবার আগ পর্যন্ত নড়াচড়া করা। কিপার আগে থেকে নড়ে গেলে রোনাল্ডো গোল করবেই।

৪। টসে জিতলে অবশ্যই আগে শট নিতে হবে। কারণ পরে যারা শট নেয় তাদের উপর ভয়াবহ চাপ থেকে স্কোরকে সমান করার।

আগেই বলেছি, এই খেলা টাইব্রেকারে গিয়েছিলো। ইগনাসিও নিজেও টেলিভিশনে টাইব্রেকার দেখছিলেন। কিন্তু, নিশ্চিত ছিলেন না চেলসি তাঁর উপদেশমালা অনুসরণ করছে কিনা। চেলসির মাইকেল বালাক উঁচু করে কিক নিলো। ভ্যান ডাস সারের বাঁ দিক দিয়ে তা জালে গড়ালো। জুলিয়ানি বেলেটি গোল করলো মাটি কামড়ানো শটে। এটাও গেলো ভ্যান ডার সারের বাঁ দিক দিয়ে।

এই পর্যায়ে এসে শট নিতে এগিয়ে এলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। এই শট দেখার পরেই ইগনাসিও নিশ্চিত হলেন চেলসি তাঁর উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করে চলেছে।

কিক নেবার জন্য প্রস্তুত ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। চেলসির গোলকিপার পিটার চেক স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রোনাল্ডো দৌড় শুরু করেছে, কিপার তখনও নিশ্চল। মাঝপথে রোনাল্ডো থেমে গেলো, কিপার তখনও নড়ছে না। ইগনাসিও-র ক্রিব শীট অনুযায়ী সত্যি সত্যিই কিপারের ডান দিকে শট নিলো রোনাল্ডো। নিশ্চল গোলকিপার চেক ডানে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দিলো সেই শট।

এই পর্যন্ত হলেই শেষ হতো, কিন্তু, নাটকের তখনও শেষ অংশটা বাকি। গেইম থিওরির অন্য এক ডাইমেনশন আমরা দেখতে পাবো এই খেলার শেষ শটটাতে।

আশলে কোল বাদে চেলসির বাকি পাঁচজন পেনাল্টি শুটারই ইগনাসিওর উপদেশ অনুসরণ করে কিক নিলো তাদের আনন্যাচারাল সাইডে। কোল ভাগ্যবান। ভ্যান ডার সার সঠিক দিকে ঝাঁপ দিলেও সেটাকে ঠেকাতে পারে নি। ছয় কিকের পরে ভ্যান ডার সার নিজে কিংবা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কেউ একজন চেলসির ফর্মুলাটা বুঝে ফেললো। সবাই তাদের আনন্যাচারাল সাইডে কিক নিচ্ছে। অবশ্য পুরোপুরি বুঝেছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত না। ভ্যান ডার সারের খুব সম্ভবত ধারণা হয়েছে তার বাঁ দিক দিয়ে বল ঠেলছে চেলসির কিকাররা।

চেলসির হয়ে সপ্তম পেনাল্টি নিতে এগিয়ে এসেছে আনেলকা। সে ডান পায়ের খেলোয়াড়। নির্দেশনা অনুযায়ী তার আনন্যাচারাল সাইড কিপারের বাঁ দিকে শট নেবার কথা তার। গোল বারের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছে ভ্যান ডার সার। দুই হাত দুই দিকে প্রশস্ত। হঠাৎ করে বাঁ হাত দিয়ে গোল পোস্টের বাঁ দিকটা দেখায় আনেলকাকে ভ্যান ডার সার। বিষয়টা এমন, গোলের এই দিকে বল মারবা তুমি, জানি আমি। সবাই এই দিকেই মেরেছো।

গেইম থিওরির এটা চরম একটা অবস্থা। আনেলকাকে বাঁ দিকে কিক নেবার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন সে জানে গোলকিপারও সেটা জানে। এই পরিস্থিতিতে আনেলকা কী করবে? নির্দেশনা মেনে বাঁ দিকেই কিক করবে, নাকি গোলকিপার তার স্ট্রাটেজি জেনে গেছে বলে স্ট্রাটেজির পরিবর্তন ঘটাবে?

আনেলকা তার স্ট্রাটেজি পরিবর্তন করে কিপারের ডানদিকে শট নিলো। সেটাতেও হয়তো সমস্যা ছিলো না, কিন্তু, তার শট ভেসে গেলো মিড এয়ারে। এরকম শট ঠেকানোর জন্য ভ্যান ডার সার বিখ্যাত। ক্রিব শীটে পরিষ্কার নির্দেশনা ছিলো এমন শট না নেবার জন্য। ফলে, যা হবার তাই হলো, গোল ঠেকিয়ে দিলো ভ্যান ডার সার। টাইব্রেকারে হেরে গেলো চেলসি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার আলেক্স ফারগুসন পরে বলেছিলেন, আনেলকার পেনাল্টি ঠেকানোটা কোনো দুর্ঘটনা নয়। কিছু খেলোয়াড় পেনাল্টি নিতে গেলে কোথায় বল কিক করে সেটা সম্পর্কে আমরা জানি।” এর মানে হচ্ছে আনেলকার বিষয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেরও নিজস্ব গবেষণা এবং স্ট্রাটেজি ছিলো। ইগনাসিও-র পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আনেলকা হয়তো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেরে স্ট্রাটেজিকে পরাজিত করতে পারতো। কিন্তু, আনেলকার পরিকল্পনা ভ্যান ডার সার জেনে গেছে, এই চাপে পড়ে আনেলকা তার স্ট্রাটেজি পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় এবং তার ন্যাচারাল স্ট্রাটেজিতে ফিরে যায়। যেটা সম্পর্কে ম্যানচেস্টার আগে থেকেই অবগত ছিলো। ফলে, তাকে ঠেকিয়ে দেওয়াটা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছিলো।