অনলাইন ডেস্ক : গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় জড়িত থাকার জন্য কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন দেশটির একদল স্বাস্থ্যকর্মী।
জনস্বাস্থ্য, নেফ্রোলজি এবং জেনারেল ইন্টারনাল মেডিসিন চিকিৎসক বেন থমসন বলেন, এক বছর আগে আমরা কানাডা সরকারের কাছে প্রকাশ্যে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছিলাম। হাসপাতালগুলোকে যেভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য কানাডা সরকার যেন প্রকাশ্যে ইসরায়েলের নিন্দা জানায়।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানী অটোয়ার পার্লামেন্ট হিলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা কানাডা সরকারকে গণহত্যার অপরাধসহ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ব্যাপক লঙ্ঘনের জন্য প্রকাশ্যে ইসরায়েলের নিন্দা জানানোর আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু দাবি সরকার উপেক্ষা করেছে সরকার। দাবির বিষয়ে একটি ফলো-আপ বৈঠকও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে ব্যর্থতার ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু নিহত হয়েছে, এর সঙ্গে আমরা কানাডা সরকারের সম্পৃক্ততা পেয়েছি।
থমসন চলমান গাজা সঙ্কটকে ‘গণহত্যা’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং কানাডিয়ান মিডিয়ার প্রতি বলেন, ‘এই শব্দটি সেন্সর করা বন্ধ করুন’ এবং এটি ব্যবহার থেকে ‘লজ্জা’ পাবেন না।
তিনি বলেন, ইসরাইল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। এখন সময় এসেছে এটা বলা শুরু করার।
গাজার গণহত্যার বিষয়ে কানাডা সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তার’ নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই এ দেশের রাজনীতিবিদরা তাদের কাজ করবেন এবং গণহত্যার অবসান ঘটাবেন। কিন্তু এর পরিবর্তে জাস্টিন ট্রুডো এবং মেলানি জোলি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) ইসরায়েলি লবি গ্রুপগুলোর কথা শুনতে পছন্দ করেছেন।
তিনি বলেন, এরাই যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করেছে, ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধকে অস্বীকার করেছে, ইসরায়েলের গণহত্যা অস্বীকার করেছে এবং আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে অসম্মান করেছে।
গাজায় গণহত্যা বন্ধে ‘নিজেদের দায়িত্বকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার’ জন্য ট্রুডো ও জোলির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাস্টিন ট্রুডো ও মেলানি জোলি- এ পর্যন্ত আপনাদের কর্মকাণ্ড ইসরায়েলের গণহত্যাকে সমর্থন করেছে। সময় এসেছে পথ পরিবর্তন করার। সময় এসেছে পদক্ষেপ নেওয়ার।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গাজায় থাকা ড. ইপেং জি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলিকে চিঠি লিখেছি। আমাদের চিঠি লেখার পর প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেছে, যার কোনো উত্তর এখনো পাইনি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কানাডার এই সরকারের গণহত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি চলমান রয়েছে। এটি কানাডার সরকারের চলমান সমর্থন এবং গণহত্যায় সক্রিয় অংশগ্রহণ।
আগস্টের গোড়ার দিকে ১৯ জন কানাডিয়ান চিকিৎসকের একটি দল কানাডা সরকারের কাছে একটি খোলা চিঠি জারি করে। সেখানে তারা গাজায় মানবিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
ট্রুডো ও জোলিসহ কানাডার জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে লেখা ওই চিঠিতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও গাজা বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায় মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।