অনলাইন ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই অভিযোগ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি। খবর রয়টার্সের।

লন্ডন ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে, মাসব্যাপী ঘটনাবলি বিশ্লেষণ এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বক্তব্য পর্যালোচনার পর তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। এই অপরাধের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত মানদণ্ড পূরণ হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন অনুযায়ী, ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো জাতি, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত কাজকে গণহত্যা বলা হয়।

তবে, এদিকে ইসরায়েল ধারাবাহিকভাবে গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তাদের দাবি, দেশটি আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলেছে। হামাসের হামলার পর তাদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।

সম্প্রতি দ্য হেগে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করার সময় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস কালামার্ড বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত হালকা, রাজনৈতিক বা পক্ষপাতমূলকভাবে নেয়া হয়নি। একটি গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে। ছয় মাসের গভীর ও নিবিড় গবেষণার পর এ নিয়ে আমাদের মনে এক বিন্দু সন্দেহ নেই।’

এদিকে গত বছর গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা একটি গণহত্যা মামলা দায়ের করে। দেশটির এই মামলার সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশও যুক্ত হয়েছে।

তবে এই বছরের শুরুর দিকে আইসিজের এক শুনানিতে ইসরায়েলের আইনজীবীরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনায় কোনো গণহত্যার উদ্দেশ্য নেই। তারা কোনো গণহত্যা করেনি। বরং তাদের উদ্দেশ্য হামাসকে নির্মূল করা।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এ হামলায় ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা ছাড়াও প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে বন্দী করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। এদিন থেকেই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় নির্বিচারে বোমা ও স্থল হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও এক লাখের বেশি মানুষ।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সাতদিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল। চুক্তির আওতায় হামাস শতাধিক ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তিও দেয়।