অনলাইন ডেস্ক : ড্রাগন ফ্রুট এক ধরনের ক্যাকটাস ভিত্তিক ফল। এটি স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী।
এই ফলটিকে দুই ভাগে কেটে, খুব সহজেই চামচ দিয়ে ভিতরের শাঁস খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া মিল্কশেক, কিংবা স্মুদি তৈরি করেও ড্রাগন ফ্রুট উপভোগ করা যেতে পারে।
ড্রাগন ফলে আরও যেসব স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়-
উচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ : ড্রাগন ফ্রুট প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ একটি ফল। এর ক্যালরির মাত্রাও তুলনামূলক অনেকটাই কম। এতে যথেষ্ট পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার রয়েছে। এক কাপ (২২৭ গ্রাম) ড্রাগন ফলে, ১৩৬ ক্যালরি, ৩ গ্রাম প্রোটিন,৭ গ্রাম ফাইবার, ৮ শতাংশ আয়রন, ১৮ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম, ৯ শতাংশ ভিটামিন-সি , ৪ শতাংশ ভিটামিন পাওয়া যায়। এসবই স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ : ড্রাগন ফল ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক অ্যাসিড এবং বিটাসায়ানিন-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এই প্রাকৃতিক পদার্থগুলি শরীরের কোষগুলিকে ফ্রি ব়্যাডিক্যালের হাত থেকে রক্ষা করে। এটি এক প্রকার অণু, যা ক্যান্সার এবং অকাল বার্ধক্যের মতো রোগের কারণ হতে পারে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় : ড্রাগন ফল ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায়, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এই ফলের নিয়মিত সেবন, রক্তে শর্করার ভারসাম্যতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : ড্রাগন ফলের মধ্যে ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এটি কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। তাছাড়া এই ফল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতেও সহায়তা করে। এটি বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অ্যালঝেইমার এবং পারকিনসনের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
হজমের জন্য ভালো : এই ফলে থাকা নানা উপাদান ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে, যার ফলে হজম ক্ষমতাও ভালো হয়। তাছাড়া এটি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায়, হজম স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সহায়তা করে।
হৃদরোগের জন্য উপকারী : ড্রাগন ফলের ক্ষুদ্র কালো বীজগুলি, ওমেগা থ্রি এবং ওমেগা নাইন ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এগুলি হৃৎপিণ্ডের জন্য খুবই ভালো । এ কারণে এই ফল হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারি। এটি হৃৎপিণ্ড ভালো রাখার পাশাপাশি, রক্তচাপ ও ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।
বার্ধক্যের লক্ষণগুলি প্রতিরোধ করে : অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, চাপ, দূষণ এবং খারাপ খাদ্যাভ্যাসের কারণে অকাল বার্ধক্যের সমস্যা আজকাল খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ড্রাগন ফ্রুট ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ হওয়ায়, এটি ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলতে সহায়তা করে। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে, দিনে একবার এর জুস খেতে পারেন। এছাড়া, এটি চুলের জন্য খুব উপকারী।
হাড়ের জন্য ভালো : ড্রাগন ফলে প্রায় ১৮ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে এবং হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। ফলে অস্থিসন্ধির ব্যথা, ফ্র্যাকচার কিংবা ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিও অনেকটাই কমে যায়। ৱ
চোখের জন্য উপকারী : ড্রাগন ফলে বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে। তাই, এই ফল চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন – ছানি পড়ে যাওয়া এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী : ড্রাগন ফলে ভিটামিন বি, ফোলেট এবং আয়রন থাকায় এটি গর্ভবতী নারীদের জন্য আদর্শ ফল। ভিটামিন বি এবং ফোলেট শিশুর জন্মগত ত্রুটি রোধ করতে সহায়তা করে এবং গর্ভাবস্থায় শক্তি সরবরাহ করে। তাছাড়া এতে থাকা ক্যালসিয়াম ভ্রূণের হাড়ের বিকাশের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম নারীদের পোস্টমেনোপজাল জটিলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।