অনলাইন ডেস্ক : কুইবেকের লাভারেলে লেক্লার্ক ডিটেনশন সেন্টারে আটক মহিলারা বলেছেন, করোনার কারণে লকডাউনের নামে ২৪ ঘন্টা আইসোলেশনে রেখে তাদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। দিনের পর দিন তাদের গোসল করতে দেওয়া হচ্ছে না, নতুন পোশাক দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি প্রয়োজনীয় ওষুধও পাওয়া যাচ্ছে না। বন্দীদের চাহিদা মেটাতে জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস সত্তে¡ও কারা কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে এসব অমানবিক আচরণ করছে।

লেক্লার্ক ডিটেনশন সেন্টার একটি মহিলা প্রাদেশিক কারাগার। বর্তমানে সেখানে ১৭৭ জন বন্দি রয়েছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে সেখানে করোনা ছড়িয়ে পড়লে বন্দীদের আইসোলেশনে নেওয়া হয়। লাভাল জনস্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী সেখানে এ পর্যন্ত ১২১ জন বন্দী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে করোনা মুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে সেখানে ২৩ জন করোনায় আক্রান্ত বন্দি রয়েছেন।

একজন মহিলা বন্দি গত সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন যে, প্রায় দুই সপ্তাহ যাবৎ তাকে তার,সেল থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি। এই সময়ে তিনি একবারও গোসল করার সুযোগ পাননি এবং তার পোশাকও পরিবর্তন করা হয়নি।

অপর একজন বন্দী জানান, জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল যে, আইসোলেশনে থাকা বন্দীরা প্রতি দুই দিনে একবার ২০ মিনিটের জন্য সেলের বাইরে যেতে পারবে। এ সময় তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বজনদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ অথবা টেলিফোনে কথা বলতে পারবেন এবং গোসল করতে পারবেন। কিন্তু এই নিয়ম মানা হয়নি। অনেকে টানা ১০/১২ দিন ধরে সেলের ভেতর ‘অচলাবস্থার’ মধ্যে আছেন। তাদেরকে এক মুহূর্তের জন্য বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। অনেক বন্দী নিয়মিত ওষুধ পাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বন্দীরা বলেন, আইসোলেশনের নামে এ ধরনের নিপীড়ন বন্দীদেরকে মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অনেকে নীরবে চোখের পানি ফেলছে।
একজন বন্দী বলেন, তার মানসিক সমস্যা এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছিল যে তিনি এক পর্যায়ে আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন। মাসিক হওয়া সত্তে¡ও পোশাক পরিবর্তন ছাড়া তাকে ১৩ দিন কাটাতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমার সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তা অমানবিক। মানুষ হয়েও আমাদের পশুর মত খাঁচায় বন্দী থাকতে হচ্ছে। এখানে বাড়তি জামা-কাপড়তো দূরের কথা সেনেটারী প্যাড চেয়েও পাওয়া যায় না। তবে কারা কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, আইসোলেশনে থাকা প্রত্যেক বন্দিকে বিধি অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বন্দীদের অভিযোগ তদন্ত করার দাবি জানিয়ে বলেছে, আমরা এখন ২০২২ সালের পৃথিবীতে বসবাস করছি। এ সময় বন্দীদের সাথে এ ধরনের আচরণ করার সুযোগ নেই। সূত্র : সিবিসি