অনলাইন ডেস্ক : করোনা ভাইরাস থাবা বিস্তার করেছে সারাবিশ্বে। মানুষ যখন ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে না, তখন কানাডার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এক হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি সশস্ত্র অবস্থায় লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গুলি করেছেন, আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এতে তিনিসহ কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হামলাকারীকে প্রথমে গ্রেপ্তারের কথা বলা হলেও পরে জানানো হয়েছে, তিনি মারা গেছেন। এ ঘটনা ঘটেছে নোভা স্কশিয়া প্রদেশে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ।
এতে বলা হয়েছে, হামলাকারী যাদের হত্যা করেছে তার মধ্যে একজন পুলিশ অফিসারও রয়েছেন।
নোভা স্কশিয়া প্রদেশের পোর্টাপিকু নামের ছোট্ট শহরের একটি বাড়ির ভিতরে এবং বাইরে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কয়েকটি মৃতদেহ। এখানেই প্রথম গুলি করা হয় বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এ ছাড়া অন্য স্থানগুলোতেও মৃতদেহ পাওয়া গেছে। শনিবার এ ঘটনা ঘটে। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, হামলাকারী প্রথমে একজনকে টার্গেট করেছিলেন। কিন্তু পরে তা আর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকেনি। তিনি এলোপাতাড়ি হামলা চালাতে থাকেন।
এ ঘটনায় পুরো রাত ওই শহরের লোকজনকে ঘরের ভিতর অবস্থান করতে অনুরোধ করে পুলিশ। বলা হয়, দরজা তালা মেরে দিন। অবস্থান করুন বেসমেন্টে, যদিও করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ লকডাউনের মধ্যে রয়েছেন। ওদিকে ওই এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। হামলাকারীকে পুলিশ সদস্যরা গাব্রিয়েল ওয়ার্টম্যান (৫১) হিসেনে চিহ্নিত করেছেন। তিনি পোর্টাপিকুতে পার্টটাইম হিসেবে কাজ করতেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলা চালানোর আগে এক পর্যায়ে তিনি পুলিশের পোশাক পরেন। তার গাড়িটিকে এমনভাবে সাজান যেন দেখতে মনে হয় এটি রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) ক্রুজার। প্রথমে পুলিশ ঘোষণা দেয় যে, হ্যালিফ্যাস্টের বাইরে এনফিল্ডে একটি গ্যাসস্টেশন থেকে ওই ওয়ার্টম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।। কিন্তু পরে বলা হয়, তিনি মারা গিয়েছেন। কিন্তু কিভাবে তিনি মারা গেলেন এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি পুলিশ।
নোভা স্কশিয়ার মুখ্যমন্ত্রী স্টিফেন ম্যাকনিল বলেছেন, আমাদের প্রদেশের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে কান্ডজ্ঞানহীন সন্ত্রাসী হামলা। আরসিএমপি মুখপাত্র ডানিয়েল ব্রায়েন নিশ্চিত করেছেন হামলাকারী সহ মোট ১৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন একজন কনস্টেবল। তিনি হলেন কনস্টেবল হেইদি স্টিফেনসন। মারা গেছেন দু’সন্তানের একজন মা। এই বাহিনীতে কাজ করা ২৩ বছরের একজন কর্মী। আরেকজন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন। কানাডায় এমন গণহত্যার ঘটনা বিরল।