অনলাইন ডেস্ক : খেলার মাঠ থেকে সিনেমা হল অথবা শ্রেণিকক্ষ থেকে পিকনিক স্পট সবখানেই এখন সবাই বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার। ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ এখন বিশ্বব্যাপী অতি পরিচিত এক স্লোগান। তারপরও কানাডায় বর্ণবাদ বিরোধী কার্যক্রমের সাফল্য নিয়ে হতাশাগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কানাডিয়ান রেস রিলেশনস ফাউন্ডেশনের সিআরআরএফ এক জরিপে এই হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে। গত বুধবার তারা ওই জরিপ ফলাফল প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, প্রতি ৪ জনে মাত্র একজন কৃষ্ণাঙ্গ মনে করে গত এক দশকে কানাডায় তাদের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগেরই দাবি কানাডায় জাতিগত সুসম্পকের্র চিত্র খুবই নাজুক। কৃষ্ণাঙ্গ ও আদিবাসীরা মনে করে কানাডায় বর্ণবৈষম্য দিন দিন বাড়ছে এবং বর্তমানে এটি খুবই বাজে অবস্থানে চলে গেছে।
সি আর আর এফ প্রতি ২ বছর পর পর বর্ণবাদ বিষয়ে দেশব্যাপী জরিপ চালিয়ে থাকে। এ বিষয়ে তাদের সহায়তা করে এনভায়রনিকস ইনস্টিটিউট। এবারের জরিপে দেখা গেছে অংশগ্রহণকারীদের ২৩ শতাংশ মনে করেন কানাডায় বর্তমান বর্ণ বৈষম্যের চিত্র ‘খারাপ’। ২০১৯ সালে এই হার ছিল ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে এবার ৬৪% লোক সার্বিক বর্ণবাদের অবস্থাকে ‘মোটামুটি ভালো’ বলে রায় দিয়েছে। ২০১৯ সালে এ হার ছিল ৭১%। এবার ১৩% লোক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত ছিলেন।
সি আর আর এফের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হাশিম বলেন, গত ১৩ মে থেকে ১১ ই জুন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৯৮ জনের মতামত নেয়া হয়েছে। অনলাইনে তারা এ বিষয়ে তাদের মতামত প্রদান করেন। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ কর্মকর্তার নির্যাতনে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর বিশ্বব্যাপী বর্ণবাদ বিরোধী যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তাতে কানাডাও অংশ নিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে গাড়ি চাপায় মুসলিম পরিবারের ৪ সদস্যকে হত্যা ও পরিত্যক্ত স্কুল ভবনে গণকবরে শত শত আদিবাসী শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় কানাডায় বর্ণবাদের বিষয়টি আবার ব্যাপকভাবে আলোচিত হতে থাকে। জরিপ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের তুলনায় এবার বর্ণবাদী ঘটনার সংখ্যা খুব একটা বৃদ্ধি পায়নি। তবে চাইনিজ ও দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিকদের উপর হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের হতাশা সম্পর্কে হাশিম বলেন, সরকার ও রাজনীতিবিদদের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ এর একটি প্রধান কারণ। রিপোর্টের সার্বিক চিত্র সম্পর্কে এক কথায় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আশাবাদীদের সংখ্যা কমছে আর হতাশাবাদীদের সংখ্যা বাড়ছে’। সূত্র : সিবিসি