অনলাইন ডেস্ক : গত জুনে কানাডায় নতুন একটি আইন অনুমোদন করা হয় যাতে বলা হয় প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলো নিজেদের প্ল্যাটফর্মে নিউজ কন্টেন্ট ব্যবহার করলে সংবাদ সংস্থাগুলোকে অর্থ দিতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে অর্থ দেয়া এড়াতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিজেদের প্ল্যাটফর্ম থেকে মুছে দিচ্ছি সব নিউজ কন্টেন্ট। তাদের এমন আচরণে বিপাকে পড়েছেন খোদ দেশটির নাগরিকরা। সম্প্রতি ভয়াবহ দাবানলের মতো চরম দুর্যোগে দেশটির নর্থওয়েস্ট টেরিটরি ও ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের বাসিন্দারা যখন বিপর্যস্ত তখনই নাগরিকদের নিউজ কন্টেন্ট থেকে বঞ্চিত করায় প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে এক হাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
স্থানীয় সময় সোমবার (২১ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেছেন, নাগরিকরা দিনের অনেকটা সময় অনলাইনে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তথা ফেসবুকে ব্যয় করে থাকেন। ফলে এগুলোর মাধ্যমে সংবাদ সংস্থাগুলোর সবশেষ খবরাখবর জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু সেটি নিশ্চিত করার পরিবর্তে ফেসবুকের মতো একটি কোম্পানি ব্যবসায়িক মুনাফাকে বেছে নেওয়া একেবারেই অকল্পনীয়। এ অবস্থায় ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘মানুষের জীবনের আগে ব্যবসায়িক মুনাফাকে অগ্রাধিকার’ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। মূলত নিউজ কন্টেন্ট ব্লক করায় ফেসবুকের ওপর ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি।
এই বিতর্কের শুরু মূলত গত জুনে। ওই মাসে অনলাইন নিউজ অ্যাক্ট নামে একটি নতুন আইনের অনুমোদন দেয় কানাডার আইনসভা। এই আইন অনুসারে, নিজেদের প্ল্যাটফর্মে নিউজ কন্টেন্ট প্রচারের জন্য সংবাদ সংস্থাগুলোকে অর্থ দিতে হবে প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলো। কিন্তু সেই আইনকে ভালো চোখে দেখেনি মেটার মতো সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টরা। এরপর থেকেই কানাডায় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে নিউজ কন্টেন্ট ব্লক করা শুরু করে তারা।
ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটার এক মুখপাত্র বলেছেন, কানাডার নতুন আইনের কারণে আমরা নিউজ কন্টেন্টের অ্যাক্সেস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।
নিউজ কন্টেন্ট নিয়ে সংবাদ সংস্থাগুলোর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর সম্পর্ক কী হবে, কে কতটা লাভ পাবে- তা নিয়ে শুধু কানাডাতেই নয়, বিতর্ক চলছে বিশ্বজুড়েই। তবে জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেছেন, ফেসবুকের নিউজ কন্টেন্ট ব্লক করার পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এই মুহূর্তে একটি জরুরি পরিস্থিতিতে, যেখানে সবশেষ খবরাখবর আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, সেসময় ফেসবুক মানুষের নিরাপত্তার চেয়ে মুনাফাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে।